সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: “এই ভোটটা আমার ভোট। আমাকে চাইলে অন্য কাউকে ভোট দেবেন না।” রায়গঞ্জের সভা থেকে একুশের মহারণে আরও একবার নিজের ভাবমূর্তির উপর বাজি ধরলেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। স্পষ্ট করে দিলেন, “প্রার্থী কে হচ্ছে সেটা নিয়ে ভাববেন না? আমাকে চাইলে ভোটটা দেবেন। প্রার্থী তৃণমূল কংগ্রেস তৈরি করবে। যে দলবদল করে চলে যাবে না। মানুষের হয়ে কাজ করবে।”
পাঁচ বছর আগে ২০১৬ বিধানসভা নির্বাচনেও একইভাবে নিজের ভাবমূর্তির উপর বাজি ধরেছিলেন মমতা। ঘোষণা করে দিয়েছিলেন, “রাজ্যের ২৯৪ আসনে আমিই প্রার্থী।” আর সেই ‘সততার প্রতীকে’ আস্থা রেখে বাংলার মানুষ ভোটবাক্স ভরিয়ে দিয়েছিল তৃণমূলের পক্ষে। বেশ কিছু এলাকায় সাংগঠনিক দুর্বলতা সত্ত্বেও সেবারের নির্বাচনে ২১১ আসনে জয়ী হয় তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। জোট বেঁধেও মমতার ভাবমূর্তির কাছে পরাস্ত হয় বাম-কংগ্রেস। একুশের আগে আরও একবার সেই ম্যাজিকের পুনরাবৃত্তির আশায় তৃণমূল সুপ্রিমো। তবে এবারে পটভূমি অনেকটাই আলাদা।
ষোলোর তুলনায় এবারে তৃণমূলের প্রতিপক্ষ বেশি শক্তিশালী। মাঝখানে উনিশের লোকসভায় বিপুলভাবে উত্থান হয়েছে বিজেপির। অন্যদিকে, একুশের আগে দলবদলের ধাক্কায় বেসামাল তৃণমূল। বেশ কিছু জয়ী বিধায়ক তো বটেই, কয়েকজন প্রাক্তন মন্ত্রীও যোগ দিয়েছেন বিরোধী শিবিরে। তাছাড়া আমফান, করোনার সময় স্থানীয় স্তরে বিস্তর দুর্নীতির অভিযোগও বিদ্ধ করেছে তৃণমূলের স্থানীয় নেতাদের। যা ভোটের প্রচারে কাজে লাগাতে মরিয়া বিজেপি (BJP)। রাজনৈতিক মহলের ধারণা, স্থানীয় নেতাদের এই দুর্নীতির কোনও প্রভাব যাতে একুশের লড়াইয়ে না পড়ে, তা নিশ্চিত করতেই মুখ্যমন্ত্রী নিজের ভাবমূর্তিকে বাজি ধরছেন।
[আরও পড়ুন: একুশের ভোটে প্রার্থী হতে চান না, মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন বর্ধমান দক্ষিণের বিধায়ক, তুঙ্গে জল্পনা]
তাছাড়া, একুশের ভোটকে ‘আমার ভোট’ হিসেবে ঘোষণা করে মমতা ‘নরেন্দ্র মোদি’ ফ্যাক্টরকে অকেজো করে দেওয়ার চেষ্টা করলেন। উনিশের ভোটে মোদির বিরুদ্ধে উপযুক্ত মুখ না থাকায় যেভাবে বিজেপি সুবিধা পেয়েছিল, তৃণমূলের আশা একুশে বাংলাতেও শুধু মমতাকে সামনে রেখে এগোলে তৃণমূল সেই সুবিধা পাবে।