ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: সিন্ডিকেট, কাটমানি – বাংলার তৃণমূল (TMC) সরকারের বিরুদ্ধে একুশের নির্বাচনী প্রচার এই দুই শব্দ ছিল বিজেপির প্রায় বাঁধা লব্জ। দিল্লির বিজেপি নেতারা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের বিরুদ্ধে এসব লাগাতার বলে গিয়েছেন। কিন্তু সেসবে জনমত বিশেষ টানা যায়নি। একুশের বিধানসভা নির্বাচনে ২৯৪ এর মধ্যে তৃণমূলের সবমিলিয়ে প্রাপ্তি ২২১ আসন, বিজেপির ৬৯। এই ফলাফলের পরও বঙ্গসফরে এসে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah) রাজ্যের শাসকদলের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করলেন সেই ‘কাটমানি’ অস্ত্র। বললেন, ”এখনও বাংলায় কাটমানি, সিন্ডিকেট চলছে। ভেবেছিলাম, মমতা দিদি শুধরে যাবেন। কিন্তু বাংলার মানুষের রায়ে তৃতীয়বার ক্ষমতায় এসেও শোধরাননি।” অমিত শাহর এহেন মন্তব্যে নিয়ে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) প্রতিক্রিয়া চাইতেই সপাট জবাব – ”কাটমানির সংজ্ঞা কী? জিজ্ঞেস করুন তো পাবলিকের পকেট থেকে যে টাকাটা কাটা হচ্ছে নানা ছুতোয়, সেটা কী? ছাঁটমানি? পকেট কাটা নয় সেটা?”
বাইপাসের ধারে নতুন তৃণমূল ভবনের উদ্বোধন হয়েছে অক্ষয় তৃতীয়ার দিন। কিন্তু সেখানে দলীয় সুপ্রিমোর পা পড়ল বৃহস্পতিবার। প্রথম দিন নতুন ভবনে ঢুকেই তিনি রাজ্য কমিটির বৈঠক সেরে ফেললেন দলের সমস্ত সদস্যদের নিয়ে। ঘণ্টাখানেক বৈঠক শেষে সাংবাদিক সম্মেলনে বিজেপিকে ‘কাটমানি’ তোপের জবাব দেওয়া ছাড়াও একাধিক গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা করলেন। যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য –
- ফের জেলা সফরে প্রশাসনিক বৈঠক শুরু করবেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী ১০ মে থেকে শুরু হবে সফর। ওইদিন যাবেন পশ্চিম মেদিনীপুরে (West Medinipur)। সেখানে প্রশাসনিক বৈঠক করবেন।
- ১১ মে পঞ্চায়েত সদস্যদের নিয়ে দলীয় বৈঠক বেলা ১২টায়।
- ১১ তারিখ সেখান থেকেই চলে যাবেন ঝাড়গ্রামে (Jhargram)। বিকেল ৪টেয় প্রশাসনিক বৈঠক।
- ১২ মে ঝাড়গ্রাম স্টেডিয়ামে দলীয় বৈঠক।
- বীরভূম,বাঁকুড়া,পুরুলিয়ায় পরবর্তী বৈঠক।
- জুনে যাবেন আলিপুরদুয়ার সফরে।
-
তৃণমূল কংগ্রেসের যা যা অনুষ্ঠান প্রতি বছর হয়, এবারও হবে। রবীন্দ্র জয়ন্তী হবে ব্লকে ব্লকে। ২৬ মে নজরুল জয়ন্তী। উনি অনেক শ্যামা সংগীত রচনা করেছেন।
-
২১ জুলাইয়ের অনুষ্ঠান হবে। ২০ মে থেকে প্রসেস শুরু হবে। ব্লক, জেলা সব পুনর্গঠন হবে। ওই তারিখ পর্যন্ত সাজেশন নেওয়া হবে। কমিটি তৈরি হয়ে গেলে পার্টির প্রোগ্রাম আবার বলে দেওয়া হবে।
[আরও পডুন: সৌদি আরবে কাজে গিয়ে বিপত্তি, প্রাণ গেল বাংলার যুবকের]
এদিন রাজ্য কমিটির বৈঠকের মূল লক্ষ্য ছিল, তেইশে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে নির্বাচনী স্ট্র্যাটেজি নির্ধারণ। তা নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”পঞ্চায়েত-মিউনিসিপ্যালিটিতে আরও ভাল করে কাজ করতে হবে। সবাইকে বলেছি, কাজের গতি বাড়াতে। আর আমাদের কাজে ভুল হলে আপনারা ধরিয়ে দেবেন। কিন্তু কাজের সুযোগ দেবেন আমাদের।” অতএব, নতুন ভবন থেকেই পঞ্চায়েত নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করে দিল তৃণমূল।