সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: শনিবার সকাল, গোটা দেশ রুদ্ধশ্বাসে তাকিয়ে অযোধ্যা রায়ের দিকে। ৫০০ ধরে চলতে থাকা বিতর্কিত জমি নিয়ে দী্র্ঘ ২৭ বছরের মামলার নিষ্পত্তি ঘটাল রঞ্জন গগৈর ত্বত্তাবধানে পাঁচ বিচারকের ডিভিশন বেঞ্চ। জিতলেন রামলালা। সারা দেশ যখন উত্তাল, তখন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমোর থেকে নিদেনপক্ষে একটা মন্তব্য আশা করেছিলেন অনেকেই। কিন্তু এ কী, তিনি চুপ কেন? ঐতিহাসিক রায় বেরনোর পর রাজনৈতিক মহলের ফিসফাসে ঘুরপাক খাচ্ছিল এই প্রশ্ন। তবে, সন্ধে কাটতেই নিজস্ব ভঙ্গির বাইরে গিয়ে মোক্ষমভাবে মুখ খুললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরোক্ষভাবে বুঝিয়ে দিলেন, ‘অনেক সময় চুপ থাকাটাই শ্রেয়’।
না, অযোধ্যা রায় নিয়ে সোজাসুজি কোনও মন্তব্য করেননি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিংবা তাঁর দলের কোনও নেতা-মন্ত্রীকেই আস্ফালন করতে দেখা যায়নি। তিনি মন্তব্য করলেন লিখে। অযোধ্যার বিতর্কিত জমি নিয়ে কবিতা লিখে ফেললেন মুখ্যমন্ত্রী। কবিতার নাম ‘না বলা’। সরাসরি কোনও রকম মন্তব্য না করে প্রতিবাদের যে এ এক অন্য ভাষা বেছে নিলেন মমতা, তা বলাই যায়।
“অনেক সময়
কথা না বলেও
অনেক কথা বলা হয়ে যায়।
কিছু বলার থেকে
না বলাটা
আরো শক্তিশালী বলা।…” – মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়
তবে আশ্চর্যজনকভাবে এই কবিতার কোনও লাইনে কোনও ছত্রে কোথায়ও কিন্তু ‘অযোধ্যা’, ‘বাবরি মসজিদ’, ‘সুপ্রিম কোর্ট’, ‘রাম মন্দির’- কোনও শব্দেরই উল্লেখ নেই। শনিবার সকালে দেশের শীর্ষ আদালত রায় দিয়েছে- অযোধ্যা বিতর্কিত জমির অধিকার যাচ্ছে রামলালার হাতেই। মুসলিমদের যদিও ৫ একর জমি দেওয়া হচ্ছে মসজিদ তৈরির জন্য। তবে মুসলিম সংগঠনের অনেকেই এই রায়ে সেভাবে তুষ্ট হননি। অন্যদিকে, গেরুয়া দলের যে ইচ্ছেপূরণ হয়েছে, তা আলাদা করে উল্লেখ করার প্রয়োজন নেই। তবে এই রায়ে বোধহয় তৃণমূল খানিক বিপাকেই পড়েছে। কারণ, রায়ের পক্ষে মন্তব্য করলে সংখ্যালঘুদের মনোক্ষুণ্ণ হতে পারে। সংখ্যাগুরুদের পাল্লা এক্ষেত্রে ভারী হলেও তাতে তৃণমূলের আদৌ কোনও লাভ হবে কি? সেই ভাবনা থেকেই হয়তো অযোধ্যা রায় সম্পর্কে সরাসরি কোনওরকম মন্তব্য করেননি মমতা নিজে, এমনই মতপোষণ করছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
[আরও পড়ুন: চার বছরের মধ্যেই তৈরি হবে রাম মন্দির, বিশ্বাস বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ]
সূত্রের খবর, মামলার রায় ঘোষণার দিন তিনেক আগেই নবান্নতে দলের নেতামন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করে তিনি সাবধানবাণী দিয়েছিলেন, অযোধ্যা রায় ভীষণ স্পর্শকাতর বিষয়, কাজেই কেউ যেন কোনওরকম বেফাঁস কথা না বলে ফেলে। দলনেত্রীর নির্দেশ অক্ষরে অক্ষরে পালন করেছেন সবাই। তৃণমূলের পক্ষ থেকে কাউকেই কোনওরকম মন্তব্য করতে দেখা যায়নি অযোধ্যা রায়দান নিয়ে।
তবে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কৌশলগত অবস্থান নিলেও বিজেপি থেকে কিন্তু এক্ষেত্রেও কটাক্ষ করা হয়েছে তাঁকে। রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, “কোনও ভাল জিনিস ভালভাবে দেখতে পারে না তৃণমূল। তা সে সার্জিক্যাল স্ট্রাইক হোক বা কাশ্মীরে ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার। কারণ, তৃণমূলের তোষণের রাজনীতি করার তাগিদ রয়েছে।” যদিও এরপর কোনওরকম পালটা মন্তব্য করতে শোনা যায়নি তৃণণূলের কাউকে।
[আরও পড়ুন: ভাইদের বলিদান সার্থক, খুশি অযোধ্যা আন্দোলনে শহিদ রাম-শরদের দিদি ]
The post ‘কিছু বলার থেকে না বলাটা আরও শক্তিশালী’, কবিতার মাধ্যমে ফের বিরোধীদের খোঁচা মমতার! appeared first on Sangbad Pratidin.