ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: দেশে ১০০ কোটি মানুষের করোনা টিকাকরণ (Corona vaccination) সম্পূর্ণ। সদ্যই কেন্দ্রীয় সরকার এই পরিসংখ্যান দেখিয়ে দেশজুড়ে সাফল্যের উদযাপন করেছে। তবে পরিসংখ্যানবিদদের একাংশ হিসেবনিকেশ করে দেখিয়েছেন, কেন্দ্রের এই দাবি অসত্য। মোটেই ১০০ কোটি মানুষ ভ্যাকসিন পাননি। দেশের মোট জনসংখ্যার নিরিখে হিসেব করলে, তা ১০০ কোটির চেয়ে বেশ খানিকটা কম। এবার এই হিসেব নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রবিবার শিলিগুড়িতে পুলিশের আয়োজিত বিজয়া সম্মিলনী অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তাঁর বক্তব্য, ”ডবল ডোজ ১০০% না হলে টিকাকরণ ১০০ শতাংশ বলা যায় না। দেশের লোকসংখ্যা কত? বাচ্চাদের সংখ্যা কত? হিসেব বলছে, ২৯.৫১ কোটি ডবল ডোজ হয়েছে। মিলিজুলি করে জুমলা করে দিয়েছে কেন্দ্র।” মুখ্যমন্ত্রীর আরও দাবি, ”সারা দেশে এখনও ৩৫ কোটি মানুষ একটা ডোজ ও পায়নি। বাচ্চাদের ধরলে সংখ্য়াটা ৬০-৬৫ কোটি হয়ে যাবে।”
রবিবার তিনদিনের সফরে উত্তরবঙ্গ সফরে গিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি তৃতীয়বার রাজ্যের ক্ষমতায় আসার পর এটাই তাঁর প্রথম উত্তরবঙ্গ সফর। বিকেলে বাগডোগরায় নেমে শিলিগুড়ির (Siliguri) বাঘাযতীন পার্কে পুলিশের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সবাইকে বিজয়ার শুভেচ্ছা জানিয়ে উৎসবের মরশুমে সকলকে সতর্ক থাকার কথা বলেন। তারপরই টিকাকরণ নিয়ে বিজেপির দাবির সমালোচনায় মুখর হন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। টিকাবণ্টনে ফের কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগ তুলে বলেন, ”বাংলা থেকেই টিকার উদ্ভব। এখানে একটা ডোজও নষ্ট হয়নি। সাত কোটি টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। লাগবে আরও ১৪ কোটি। কিন্তু ৪০% দ্বিতীয় ডোজ হয়েছে।”
[আরও পড়ুন: ছাদ থেকে প্রতিবেশী বধূকে লক্ষ্য করে অ্যাসিড! পুলিশের জালে ৩]
এরপরই মুখ্য়মন্ত্রী ফের অভিযোগের সুরে বলেন, ”আমি টিকা চেয়ে বারবার চিঠি পাঠিয়েছি নরেন্দ্র মোদিকে। কিন্তু এখনও বাংলায় ঠিকমতো টিকা সরবরাহ করা হচ্ছে না। ওরা কাজ করে ঢাক পেটায়। আমরা বলেছিলাম, বিনামূল্যে সবাইকে টিকা দেব। দিয়েছি। কিন্তু কেন্দ্র দেয়নি। আমরা ওদের থেকে প্রথমে টিকা কিনে তবেই দিয়েছি। টিকাকরণের পরিসংখ্যানে দেখায়, বাংলা ৩ নম্বরে। আমি পেয়েছি কম। কী করব? উত্তরপ্রদেশ টিকা পায়, মহারাষ্ট্র পায়। আমি পাব না কেন?”
[আরও পড়ুন: স্ত্রী ও সন্তানকে খুনের পর আত্মঘাতী স্বামী! নেপথ্যে পরকীয়া?]
আগামী সপ্তাহে বিদেশ সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। এদিন তা নিয়েও প্রশ্ন তুলে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর দাবি, ”কোভ্যাক্সিন মোদির কোম্পানি। তিনি নিজেও নিয়েছেন। এই টিকা নিয়ে কেউ বিদেশে যেতে পারছে না। মোদি কী করে যাচ্ছেন?” শিলিগুড়ি থেকে আগামী তিনদিন ঝড়ে বিপর্যস্ত কার্শিয়াং-সহ পাহাড়ের একাধিক জায়গা পরিদর্শন করবেন। ২৮ তারিখ এখান থেকেই গোয়ার উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী।