ধ্রুবজ্যোতি বন্দ্যোপাধ্যায়: প্রত্যাশিতই ছিল। তবে তার চেয়ে প্রাপ্তি কিছু বেশিই হয়েছে। হাজার হাজার পেরিয়ে জয়ের রথ থেমেছে ৫৮ হাজার ৮৩২। গুনে গুনে এই সংখ্যক ভোটে ভবানীপুর উপনির্বাচনে জিতেছেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। যা একেবারেই রেকর্ড। ২০১১ সালে নিজের প্রাপ্ত রেকর্ড ভাঙলেন তিনি নিজেই।
রবিবার দুপুর ২টো নাগাদ ভোটের ফলাফল স্পষ্ট হতেই কালীঘাটের বাড়ির বাইরে বেরিয়ে আসেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বেশ কিছুক্ষণ ধরে গোটা পরিস্থিতি বুঝে নিয়ে নিজের প্রতিক্রয়া দিলেন। বললেন, ”ভবানীপুরে ভাষাভাষি নির্বিশেষে সকলে আমাদের ভোট দিয়েছেন। ভবানীপুর শুধু নয়, সারা ভারতের মানুষজন আসলে আমাদের জিতিয়েছেন। কোনও ওয়ার্ডেই আমরা হারিনি এবার। এটা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কোথাও কম, কোথাও বেশি ভোট পেয়েছি। কিন্তু কোথাও হারিনি।”
[আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election 2021: নিজেকে হারিয়ে মমতা প্রমাণ করলেন তিনিই সেরা]
পরিসংখ্যান বলছে, ভবানীপুর (Bhabanipur) উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রাপ্ত ভোট ৮৪ হাজার ৭০৯। যা নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিজেপির প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়ালের চেয়ে ৫৮ হাজার ৮৩২ ভোট বেশি। তিনি পেয়েছেন ২৬ হাজার ৩২০ ভোট। প্রাপ্ত ভোটের এই পরিসংখ্যান তুলনা করলে দেখা যাচ্ছে, ২০১১ ও ২০১৬ সালের চেয়ে ব্যবধান কিংবা প্রাপ্ত ভোট অনেকটাই বেশি। ২০১১ সালে ভবানীপুর থেকে উপনির্বাচনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জিতেছিলেন ৫৪ হাজারের বেশি ভোটে। ২০১৬এ এই ব্যবধান ছিল ২৬ হাজারের কাছাকাছি। ২০২১ সালে ভবানীপুর কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। জয়ের ব্যবধান ছিল ২৮ হাজারের বেশি। সেই কেন্দ্র থেকেই এবার উপনির্বাচনে লড়েছেন মমতা। আর তিনি জিতলেন ৫৮ হাজারের বেশি ভোটে, যা শোভনদেবের তুলনায় দ্বিগুণ। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে এসব তথ্য জানালেন মমতা নিজেই।
[আরও পড়ুন: Bhabanipur By-Election 2021: ‘ভবানীপুরে দলের সংগঠন দুর্বল’, হারের পর মানলেন বিজেপি প্রার্থী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল]
তৃণমূল সুপ্রিমোর আরও বক্তব্য, ভবানীপুরে নানা ভাষাভাষির মানুষের বাস। তবে ভোটদানের ক্ষেত্রে কোনও বিভেদ হয়নি। সকলেই তৃণমূলকে ঢালাও ভোট দিয়েছেন। আর সেই কারণেই রেকর্ড ভোট প্রাপ্তি হয়েছে বলে মনে করছেন তিনি। এর জন্য সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তবে এই রেকর্ড গড়াকে একার লড়াই, একার জয় বলে মোটেই মনে করেছেন না মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এদিনই জঙ্গিপুর, সামশেরগঞ্জের ভোটের ফলাফল প্রকাশ হচ্ছে। ওই দুই কেন্দ্রেও তৃণমূল প্রার্থীরা এগিয়ে বিপুল ভোটে। তাই সেই লড়াইয়ের দুই কারিগর, তৃণমূল প্রার্থী জাকির হোসেন এবং আমিরুল ইসলাম। এঁদের লড়াইয়ের কথা বললেন, ”আমার দুই সহযোদ্ধা রয়েছেন সামশেরগঞ্জ, জঙ্গিপুরে। তাঁরাও লড়ছেন। জয়ের পথে এগোচ্ছেন। তাই আজ ‘ভি’ নয়, ‘থ্রি’ সাইন দেখাচ্ছি।” তিনি একথা বলার পরপরই সঙ্গে উপস্থিত সকলকেই দেখা গেল তিনজনের জন্য জয়সূচক চিহ্ন দেখাতে।