টিটুন মল্লিক, বাঁকুড়া: ভোট মরশুমে প্রচার, পালটা প্রচারে তপ্ত বঙ্গ রাজনীতি। বাংলা দখলের লক্ষ্যে দিল্লির বিজেপি নেতারা বারবারই এখানকার মাটিতে পা রাখছেন, হুঙ্কার দিচ্ছেন, চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ছেন। আবার রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল শিবিরও নিজেদের তাবড় নেতাদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে লড়াইয়ের ময়দানে নামাচ্ছেন। তবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অবশ্যই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের (Mamata Banerjee) জনসভাগুলি। জখম পা নিয়েই মঙ্গলবার বাঁকুড়ায় (Bankura) একদিনে তিনটি জনসভা করে ফেললেন তিনি। প্রত্যেক সভাতেই মঞ্চে হুইলচেয়ারে বসেই ভাষণ রাখলেন তিনি। তবে শরীর অসুস্থ হলেও, মনোবল ভাঙেনি এতটুকু। দুপুরের পরও মাথার উপর ঝাঁ ঝাঁ রোদ নিয়ে বিজেপি বিরোধী সুর ক্রমশই চড়িয়ে রাখলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিজেপি নেতাদের ফাঁকা জনসভা নিয়ে বিঁধলেন তিনি। ছন্দের আশ্রয়ে বললেন, ”জনগণ দিন তালি, বিজেপির সব চেয়ার খালি”।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভাষণে এমন একটা উদ্দীপনা বরাবরই থাকে, যা শুধু তৃণমূল কর্মী, সমর্থকদের নয়, আলোড়ন তোলে আমজনতার মনেও। তার টানে তিনি যেখানেই সভা করুন, দূরদূরান্ত থেকে ছুটে আসেন সাধারণ মানুষজনও। ভোটের মরশুমে এই ভিড় আরও বেশি।
[আরও পড়ুন: ‘বশীকরণ’ থেকে ‘রাতে ঘুম পাড়ানো’র টোটকা! বাহারি পোস্টারে নজর কাড়ল বামেরা]
ঠিক উলটো ছবি গেরুয়া শিবিরের নেতাদের জনসভায়। জঙ্গলমহলের জেলাগুলিতে বিজেপি নেতারা যে’কটা জনসভার আয়োজনই করছেন, তা কার্যত ফ্লপ শো’য় পরিণত হচ্ছে। সোমবার ঝাড়গ্রামের মাঠে সভা করার কথা ছিল কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর। হেলিকপ্টার বিভ্রাটের জেরে সেই সভায় সশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি তিনি। জমায়েতও তেমন ছিল না। তৃণমূলের অভিযোগ, জনসমাগম কম দেখেই সভায় সশরীরে হাজির হননি। ভারচুয়ালি বক্তব্য রেখেছেন। মঙ্গলবার পুরুলিয়ার বলরামপুরে যোগী আদিত্যনাথের সভাও কার্যত ফাঁকা। মাঠ তো দূরের কথা, সামনের সারির চেয়ারগুলিই ভরেনি।
এসব নিয়ে এদিন বাঁকুড়ার রাইপুর থেকে বিজেপি নেতৃত্বকে বিঁধলেন তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রীতিমতো ছন্দে ছন্দে বললেন, ”জনগণ দিন তালি, বিজেপির সব চেয়ার খালি। এতে আমার কী করার আছে? লোকে তোমাদের পছন্দ করে না, তাই তোমাদের সভায় লোক আসে না।” এদিনের সভা থেকে সরকারি আধিকারিকদের প্রতি কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির আচরণ নিয়েও তোপ দেগেছেন মমতা। মেট্রো ডেয়ারি সংক্রান্ত একটি মামলায় স্বরাষ্ট্রসচিব এইচ কে দ্বিবেদীকে তলব করেছে ইডি। পুরনো এক মামলায় সিবিআই তলব করেছে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে। এসব নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তৃণমূল নেত্রী। কেন নন্দীগ্রামে তিনি জখম হওয়ার পর রাজ্যের নিরাপত্তা আধিকারিককে বদলানো হল, সেই প্রশ্নও তোলেন।