সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ‘হেথায় আর্য, হেথা অনার্য, হেথায় দ্রাবিড়, চিন…’। মধ্যপ্রাচ্যে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘ভারততীর্থ’ কবিতা উদ্ধৃত করে সম্প্রীতির বার্তা দিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর অন্যতম প্রাণকেন্দ্র দুবাইয়ে প্রবাসীদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, “সারে জাহা সে আচ্ছা হিন্দুস্তা হামারা।”
২০১৪ সালে দিল্লিতে গদি বদলের পর ক্ষমতায় এসেছে নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) ‘হিন্দুত্ববাদী’ সরকার। প্রায় এক দশক ধরে চলে আসা ‘জাতীয়তাবাদী’ কেন্দ্রের শাসন আমলে মানবাধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সংখ্যালঘুদের নিরাপত্তা প্রশ্নের মুখে পড়েছে। পহেলু খান হত্যা বা গোরক্ষকদের তাণ্ডব দেখেছে দেশ। এ নিয়ে অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে শোরগোল তো হয়েইছে, সরব হয়েছে মুসলিম বিশ্বও। নূপুর শর্মা কাণ্ডে ভারতের রাষ্ট্রদূতদের ডেকে তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কাতার, ইরান ও কুয়েত-সহ ১৫টি মুসলিম দেশ। আন্তর্জাতিক মঞ্চে নিরপেক্ষ ভারতের ছবি এতে কালিমালিপ্ত হয়েছে বলেই সরব হয়েছিল বিরোধীরা। উত্তরপ্রদেশে ‘ঘৃণার কারখানা খুলেছে বিজেপি’ বলেও তোপ দেগেছিল তৃণমূলও।
[আরও পড়ুন: পাঞ্জাবের ২ যুবতীকে চাকরি দেওয়ার নামে কলকাতার পানশালায় নর্তকী বানানোর ছক, গ্রেপ্তার ৩]
এই প্রেক্ষাপটে দুবাইয়ে দাঁড়িয়ে আজ সম্প্রীতির বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী সাফ বলেন, “হোয়ার দ্য মাইন্ড ইজ উইদাউট ফিয়ার অ্যান্ড দ্য হেড ইজ হেল্ড হাই।” তর্জমায় সেই বিখ্যাত পংক্তি, “চিত্ত যেথা ভয়শূন্য, উচ্চ যেথা শির।” তিনি আরও বলেন, “দুর্গাপুজো UNESCO স্বীকৃতি দিয়েছে। দুর্গাপুজোয় সকলকে আহ্বান জানাই। আমরা গর্ব করি। যেখানে যেটা ভাল বলি, সেটার গর্ব করি।”
উল্লেখ্য, স্পেন সফরকালে বার্সেলোনা থেকে ‘এক ভারতে’র বার্তা দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। রাজনীতির ঊর্ধ্বে উঠে তিনি বলেছিলেন “দেশে রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে লড়াই থাকুক। দেশের বাইরে আমরা ঐক্যবদ্ধ ইন্ডিয়ান। সেই কারণে শিল্প সম্মেলনের কোনও অনুষ্ঠানে রাজনীতির কথা বলিনি।” এদিনও রাজনীতির মারপ্যাঁচ এড়িয়ে মুসলিম দুনিয়ার বুকে দাঁড়িয়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও সহনশীল ভারতের ছবি এঁকে দিলেন ‘দিদি’।