সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: প্রধানমন্ত্রীর দুর্নীতি নিয়ে আক্রমণের জবাব দুর্নীতি দিয়েই দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, মোদির মতো দুর্নীতিবাজ দেশে জন্মায়নি। এদিন উত্তরবঙ্গে হাই কোর্টের সার্কিট বেঞ্চ উদ্বোধন নিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ শানান মমতা। তিনি বলেন, গণতান্ত্রিক পরিকাঠামোর অবমাননা করছেন প্রধানমন্ত্রী।
[চিটফান্ড মামলার তদন্তে আপনার এত ভয় কীসের? মমতাকে প্রশ্ন মোদির]
উত্তরবঙ্গ সফরে মোদির মূল হাতিয়ার ছিল সার্কিট বেঞ্চ। প্রধানমন্ত্রীর দাবি ছিল, বাংলার মানুষের কথা বাম কিংবা তৃণমূল কেউ ভাবে না। ২০ বছর আগে হাই কোর্ট উত্তরবঙ্গে সার্কিট বেঞ্চ চালু করার ছাড়পত্র দিয়েছে, অথচ রাজ্য সরকার তাঁর ছাড়পত্র দেয়নি। এই সার্কিট বেঞ্চের সূচনার ফলে উত্তরবঙ্গের মানুষকে ছোটখাটো মামলার জন্য কলকাতা ছুটতে হবে না। মোদির এই দাবির পালটা দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রীকে তীব্র আক্রমণ শানালেন মমতা। তিনি বললেন, সার্কিট বেঞ্চ তৈরির খরচ জুগিয়েছে রাজ্য, অথচ উদ্বোধনে রাজ্যকেই ডাকা হয়নি। এমনকী হাই কোর্টের তরফেও কাউকে জানানো হয়নি।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “৩০০ কোটি টাকা খরচে সার্কিট বেঞ্চ তৈরি হয়েছে। সার্কিট বেঞ্চের টাকা এবং জমি রাজ্যে দিয়েছে। রাজ্যকে না জানিয়েই উদ্বোধন করে ফেললেন। হাই কোর্টের তরফেও কাউকে জানানো হয়নি। কোথায় ফেডারেল স্ট্রাকচার? উদ্বোধনের সময় হাই কোর্টেরও কেউ ছিল না। গাঁয়ে মানে না আপনি মোড়ল। মোদিকে নিয়ে কথা বলতে লজ্জা লাগছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় পরিকাঠামোর অবমাননা করছেন। সুপ্রিম কোর্টেও নোটিস দেওয়া হবে। এটা প্রধানমন্ত্রীর লজ্জা। মোদির রাজনৈতিক ফায়দার জন্য দেশকে ভুগতে হচ্ছে।”
প্রধানমন্ত্রী অভিযোগ করেন, উত্তরবঙ্গের জন্য কিছুই করেনি মমতা সরকার। পালটা হিসেবে উত্তরবঙ্গে রাজ্য সরকারের করা উন্নয়নের খতিয়ানও তুলে ধরেছেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গে নতুন সচিবালয় হয়েছে, আলিপুরদুয়ার, কালিম্পং আলাদা জেলা হয়েছে। বেঙ্গল সাফারি পার্ক হয়েছে। ভোরের আলো তৈরি পর্যটন কেন্দ্র তৈরি হয়েছে। যে রাস্তাটা সূচনা করার চেষ্টা করলেন, সেই রাস্তার জমির জন্য আমি আর গৌতম দেব অন্তত ৫০টি সভা করেছি।”
[পাঁচ বছরের সেরা বিনিয়োগ প্রস্তাব বাণিজ্য সম্মেলনে, ঘোষণা মমতার]
এদিন ধরনা ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগের জবাব দিতে গিয়ে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, “মোদি মানে মাস্টার অফ কোরাপশন। গোটা পৃথিবীর লোক ওকে এখন রাফালে ম্যাডি বলে চেনেন। আমি ম্যাডি বাবুকে ভয় পায় না। উনি ভয় পেয়েছেন, ভয় পেয়েছেন না বলেই ভয় দেখাচ্ছেন। মোদির মেরুদণ্ড ভেঙে গিয়েছে। জীবনে কোনওদিন চা বেচেনি। চা বানাতেই তো পারেনা বেচবে কী? এখন চাওয়ালা থেকে রাফালেওয়ালা হয়ে গিয়েছেন। ভোটের আগে চাওয়ালা, ভোটের পরে রাফালেওয়ালা। চোরের মায়ের বড় গলা। রাফালে থেকে শুরু করে আপেল পর্যন্ত সব দুর্নীতি।”
মুখ্যমন্ত্রীর অভিযোগ, চুরি করতে করতে, তাঁর স্লোগান পর্যন্ত চুরি করছেন মোদি। মমতা বলেন, “জগাই-মাধাই আর বিদায় ছিল আমার স্লোগান। আমার স্লোগানটাও চুরি করছেন। এবার এমন হার হারবেন আর ঘুরে দাঁড়াতে পারবেন না।” তিনি বলেন, ”মমতা কাউকে ভয় পায়না। মমতা যতদিন বাঁচবেন, ততদিন মানুষ মমতার পাশে থাকবেন। ত্রিপুরায় টাকা দিয়ে যা করেছেন তা বাংলায় সম্ভব নয়। আমি আন্দোলন করার লোক। আমার সঙ্গে পাঙ্গা নিলে আমি চাঙ্গা হই।”
The post ‘ভোটের আগে চাওয়ালা, ভোটের পর রাফালেওয়ালা’, মোদিকে পালটা কটাক্ষ মমতার appeared first on Sangbad Pratidin.