সংগ্রাম সিংহ রায় শিলিগুড়ি: চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী মোহনবাগানকে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জিতেছে প্রিয় দল। আত্মহারা শিলিগুড়ির ইস্টবেঙ্গলপ্রেমী দেবতোষ সান্যাল সেই খুশিতে যা করলেন তা একপ্রকার নজিরবিহীন।
পেশায় রেস্তরাঁ ও ক্যাটারিংয়ের ব্যবসায়ী দেবতোষবাবু শনিবার সমস্ত কর্মীদের বিমানে কলকাতা পাঠিয়ে দিলেন ইস্টবেঙ্গল ক্লাব তাঁবু দর্শনে। সমস্ত কর্মী চলে যাওয়ায় এদিন রেস্তরাঁ বন্ধ রাখতে হলেও তাতেও কুছ পরোয়া নেই। প্রিয় দলের সমর্থনে এভাবেই একদিনের ব্যবসার ক্ষতি স্বীকার করে কর্মীদের খুশি করে এবং নিজের ভালবাসাকে দলের জন্য উৎসর্গ করে যারপরনাই আনন্দিত ও আহ্লাদিত দেবতোষবাবু। জানান, তিনি শুধু একাই নন, তাঁর কর্মীদের প্রত্যেকেই লাল-হলুদ সমর্থক। ফলে শিল্ডজয়ের খুশি সবার সঙ্গে ভাগ করে নিতে চেয়েছিলেন। কী করা যায় অনেক চিন্তাভাবনা করেও শেষপর্যন্ত এই উপায়টি তাঁর মনে ধরে। একদিকে ইস্টবেঙ্গল তাঁবু দর্শন, সেই সঙ্গে বিমানযাত্রা দুটোই ওই কর্মীদের কাছে প্রথম। ফলে তাদের মুখে হাসি ফোটাতে পেরে খুশি তিনি।
-
[ওজিলের পাশে দাঁড়িয়ে বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে নয়া স্লোগান জার্মানদের]
শিলিগুড়িতে দেবতোষবাবুর পরিচয় ভোলাদা নামে। আঠাশ বছর আগে শহরের প্রথম ক্যাটারিং ব্যবসায়ী ভোলাদার ফুটবলপ্রেম বিশেষ করে ইস্টবেঙ্গলপ্রেম সকলেরই কমবেশি জানা। এমনকী দু’বছর আগে শিলিগুড়িতে আই লিগ ডার্বির সময় নিজের রেস্তরাঁর রং আদ্যোপান্ত বদলে লাল-হলুদ করেন তিনি। শুধু তাই নয়, স্থানীয় ইস্টবেঙ্গল ফ্যান ক্লাবের অলিখিত অফিসও তাঁর রেস্তরাঁটিই। তাঁরই উদ্যোগকে ঘিরে চারিদিকে সাজসাজ রব পড়ে গেলেও, যাঁরা দেবতোষবাবুকে দীর্ঘদিন ধরে চেনেন, তাঁরা কিন্তু একেবারেই অবাক হননি। কারণ ব্যবসায়ী হলেও লাল-হলুদ প্রেমে তিনি বরাবরই উদারহস্ত। পূর্বপুরুষের ফরিদপুর ছেড়ে বাপ-ঠাকুরদা এপারের হাওড়ায় চলে আসেন অনেকদিন। তিনি পরে কর্মসূত্রে শিলিগুড়ি আসেন আঠাশ বছর আগে। তারপর থেকে ময়দানের ভোলাদা হয়ে উঠতে সময় লাগেনি। এই ইস্টবেঙ্গল প্রেমের জন্যই মূলত লাল-হলুদের ঘরের মাঠ বলে পরিচিত শিলিগুড়ি ভোলাদাকে বরণ করে নিয়েছে আগেই। ফলে তাঁর এহেন কার্যকলাপে কিন্তু অবাক হচ্ছেন না কেউই। ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের স্থানীয় সদস্য স্বস্তিক সাহা বলেন, “ভোলাদা বরাবর এমনই। তাই তাঁর মহানুভবতার কথা শুনে আমরা অবাক হইনি।
যাঁকে নিয়ে এত আলোচনা, সেই ভোলাদা নিজে কী বলছেন? তাঁর বক্তব্য, “শিল্ড জয়ের খুশি তো আছেই সেই সঙ্গে কর্মীদেরও নতুন কিছু উপহার দিতে চাইছিলাম। জামাকাপড় বা অন্যান্য উপহার প্রয়োজনীয় জিনিস তো সারা বছরই দেওয়া হয়। এমন কিছু দিতে চেয়েছিলাম যাতে তারা চিরদিন মনে রাখবে। ইস্টবেঙ্গল শিল্ড জেতায় সকলেই খুব খুশি। সে কারণেই বিমানে কলকাতা ও ইস্টবেঙ্গল তাঁবু ঘুরিয়ে আনার এই পরিকল্পনা মাথায় আসে।”
-
[এভারেস্ট জয়ের পর ফের ইতিহাস শিবাঙ্গির, এবার এই শৃঙ্গ ছুঁল কিশোরী]
The post চ্যাম্পিয়ন ইস্টবেঙ্গল, উচ্ছ্বাসে রেস্তরাঁর কর্মীদের ‘সারপ্রাইজ গিফ্ট’ শিলিগুড়ির ব্যবসায়ীর appeared first on Sangbad Pratidin.