দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: অতিরিক্ত যাত্রীবহনের জেরে ফের নৌকা দুর্ঘটনা। সুন্দরবনের (Sunderban) ঝড়খালিতে নৌকা উলটে (Boat capsized) মৃত্যু হল এক পর্যটকের। নিহতের নাম সুবোধ গৌতন্য। দুর্ঘটনায় নিখোঁজ আরও বেশ কয়েকজন। তাঁদের খোঁজে স্পিডবোট নিয়ে শুরু হয়েছে তল্লাশি। ঘটনাটি ঘটেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীর ঝড়খালির হেরোভাঙা নদীতে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে খবর, ঝড়খালি (Jharkhali) থেকে একটি ছোট ডিঙিনৌকায় একসঙ্গে ২২ জন পর্যটক উঠেছিলেন ঘুরতে যাওয়ার জন্য। নৌকা ব্যবসায়ী এলাকারই একজন। নৌকাটি ঝড়খালি ঘাট থেকে অল্প কিছুদূর এগোতেই টলতে থাকে, তারপর ডুবে যায়। তলিয়ে যান যাত্রীরাও। সঙ্গে সঙ্গে স্থানীয় মানুষজন জলে ঝাঁপ দিয়ে নৌকার যাত্রীদের প্রায় সকলকেই উদ্ধার করেন। তবে সুবোধ গৌতন্য নামে এক ব্যক্তি জলে ডুবে যান। পরে তাঁকে অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে বাসন্তী হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। চিকিৎসকরা বছর বাষট্টির ওই ব্যক্তিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। বাকিদের অবস্থা আপাতত স্থিতিশীল।
[আরও পড়ুন: হলদিয়ায় প্রধানমন্ত্রীর কর্মসূচিতে আমন্ত্রণ দিব্যেন্দু অধিকারীকে, জল্পনা রাজনৈতিক মহলে]
দুর্ঘটনার পর থেকে এখনও এক মহিলা নিখোঁজ বলে পর্যটক সূত্রে খবর। ওই নিখোঁজ পর্যটকের সন্ধানে হেরোভাঙা নদীতে তল্লাশি শুরু করেছে পুলিশ ও বনদপ্তর। জানা গিয়েছে, নিখোঁজ ওই মহিলার নাম পারমিতা দোলুই, বাড়ি গড়িয়ার কুঁদঘাট এলাকায়। স্থানীয় পর্যটকদের অভিযোগ, ”ছোট নৌকার মধ্যে গাদাগাদি করে প্রচুর পর্যটককে তোলা হচ্ছিল। আমরা প্রথমে বিষয়টিতে আপত্তি করেছিলাম। কিন্তু বোট সিন্ডিকেটের লোকজন আমাদের আপত্তিতে কর্ণপাত করেননি। আর তার ফলেই ঘটেছে এই দুর্ঘটনা।” জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইন্দ্রজিৎ বসু জানান, নিখোঁজ মহিলার খোঁজে তল্লাশি শুরু হয়েছে। স্পিড বোট ও লঞ্চ নামিয়ে চলছে তল্লাশি। নৌকায় ওঠা পর্যটকদের মধ্য়ে বেশ কয়েকজন শিশু ও মহিলাও ছিলেন। দুর্ঘটনার সময় দ্রুত অন্যান্য ভুটভুটি নিয়ে গিয়ে তাঁদের উদ্ধার করেন স্থানীয় মানুষজন। ফলে বড়সড় দুর্ঘটনা থেকে রক্ষা পেল এই পর্যটক ভরতি নৌকাটি। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র সবং, বোমাবাজি-মারধরে জখম ৮]
সুন্দরবনে সাধারণত ছোট ছোট নৌকা ও ভুটভুটিগুলি ঝড়খালি ফেরিঘাট থেকে আশপাশ এলাকায় ঘুরতে বের হয়। নদীর আশপাশের জঙ্গল এলাকায় ঘুরে তারা আবার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে চলে আসে ঝড়খালি ফেরিঘাটে। এতেই সেখানকার নৌকা ব্যবসায়ীদের উপার্জন হয়। প্রতিদিন বেশ কিছু নৌকা ও ভুটভুটি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত থাকে। তবে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ থাকে স্থানীয় বোট সিন্ডিকেটের উপরে।পুলিশ বা বনদপ্তরের কোনওরকম নজরদারি ছাড়াই নৌকাগুলি যাতায়াত করে। তার জেরে নিয়ম ভেঙে অতিরিক্ত যাত্রীবোঝাই করার প্রবণতাও বেশি বলে অভিযোগ স্থানীয়দের।