বাবুল হক, মালদহ: ঠিক যেন অ্যাকশন মুভি! পিস্তল উঁচিয়ে স্কুলের ক্লাসরুমে ঢুকে পড়ল এক ব্যক্তি। ধমকে বেঞ্চে বসিয়ে রাখল পড়ুয়াদের। যেন ছাত্রছাত্রীদের পণবন্দি করার চেষ্টা! ওই ব্যক্তির সঙ্গে ছিল দুটি কাঁচের বোতল। যার মধ্যে অ্যাসিড বা পেট্রল রাখা ছিল বলেই প্রাথমিক ধারনা। ক্লাসরুমে আতঙ্কে কাঁটা হয়ে বসে পড়ুয়ারা। এদিকে তাদের বন্দিদশার খবর পেয়েই স্কুলের সামনে জড়ো হন অভিভাবকরা। বুধবার দুপুরে মালদহের (Maldah) মুচিয়া অঞ্চলের চন্দ্রমোহন হাই স্কুলের ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। যদিও এক ব্যক্তির সাহসিকতায় ধরাশায়ী করা গিয়েছে অভিযুক্তকে। উদ্ধার করা হয়েছে পড়ুয়াদের। তবে এই ঘটনায় স্কুলের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।
রোজকার মতো এদিন ক্লাস চলছিল মালদহের স্কুলটিতে। আচমকাই পঞ্চম শ্রেণির ক্লাসরুমে পিস্তল হাতে ঢুকে পড়েন রাজু বল্লভ নামে এক ব্যক্তি। কাঁধে ব্যাগ, এক হাতে পিস্তল ও অন্য হাতে ধরা সাদা কাগজ। টেবিলের উপর মুখ ঢাকা দু’টি কাঁচের বোতল। আচমকা এই ঘটনায় আতঙ্কিত হয়ে পড়ে পড়ুয়ারা। আতঙ্কে কাঁপতে থাকে তারা। ক্লাসের বাইরে থেকে তাঁকে বোঝানোর চেষ্টা চলে। কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। এদিকে খবর পেয়ে বিশাল পুলিশ বাহিনী এসে পৌঁছয় স্কুলে। আসেন মালদহের পুলিশ সুপারও।স্কুলের গেটের বাইরে ভিড় জমান উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। হুলুস্থুলু পড়ে যায় এলাকায়।
[আরও পড়ুন: ন’মাসে যেটা হল না ন’দিনে কী করে হল? প্রেসিডেন্সির সুপারকে তীব্র ভর্ৎসনা আদালতের]
আচমকাই নীল রঙের পোশাক পরা এক যুবক ঝাঁপিয়ে পড়ে রাজুরর উপর। দুজনেই ছিটকে মাটিতে পড়ে যায়। তারপরই তাঁকে ধরাশায়ী করে কেড়ে নেওয়া হয় বন্দুক। পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয় অভিযুক্তকে। কেড়ে নেওয়া হয় বন্দুক।
কেন এমন কাণ্ড ঘটালেন অভিযুক্ত? রাজু বল্লভ নিজে মুখেই স্বীকার করেছেন যে তাঁর ছেলে ও স্ত্রী নিখোঁজ। নাবালক ছেলের হদিশ পেতে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছেন। নবান্নে চিঠি লিখেছেন। তারপরেও হদিশ মেলেনি। তাই ছেলেকে ফিরে পেতেই পিস্তল হাতে স্কুলে ঢুকে পড়ুয়াদের পণবন্দি করার চেষ্টা চালিয়েছেন তিনি। স্কুলের মধ্যে আগ্নেয়াস্ত্র হাতে দাপাদাপির এরকম ছবি নজিরবিহীন বলে দাবি করছে ওয়াকিবহাল মহল। স্কুলের ভিতর কীভাবে বন্দুক হাতে কেউ ঢুকে পড়ল তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে।