দেবব্রত মণ্ডল, ডায়মন্ড হারবার: পরকীয়া সম্পর্কের মধ্যেও ঢুকে পড়েছিল সন্দেহ। আর সেই সন্দেহের জেরেই প্রেমিকাকে শ্বাসরোধ করে খুন! এমনই অভিযোগ উঠল প্রেমিকের বিরুদ্ধে। তবে ঘটনার তদন্তে পুলিশ নামার আগে প্রেমিকই থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করলেন।
মঙ্গলবার কুলতলি থানার ২ নম্বর জালাবেড়িয়া বেনেরহাট এলাকার এই ঘটনায় ছড়ায় তীব্র চাঞ্চল্য। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পরমেশ্বর হালদার নামের ওই ব্যক্তি নিজের প্রেমিকা করুণা গায়েনকে খুন করার দায় স্বীকার করে থানায় আত্মসমর্পণ করেন। কলকাতায় দিনমজুরের কাজ করেন পরমেশ্বর। এ শহরে কাজ করতেন করুণাও। সেই সূত্রেই দু’ জনের পরিচয় এবং প্রেম। তিন বছরে ধীরে ধীরে সম্পর্কের গভীরতা বাড়ে। দু’ জন বিবাহিত হলেও বাড়ির লোকেদের চোখে ধুলো দিয়েই দিব্যি জমে উঠেছিল এই পরকীয়া সম্পর্ক। কিন্তু বিবাহ বহির্ভূত এই সম্পর্কেও তৈরি হয় জটিলতা। পরমেশ্বরের সন্দেহ হয়, সম্প্রতি নতুন কোনও সম্পর্কে জড়িয়েছেন করুণা। তার জেরেই দু’ জনের মধ্যে তুমুল বচসা শুরু হয়ে গিয়েছিল। আর এই ঝামেলাতেই শেষমেশ প্রাণ গেল করুণার। শ্বাসরোধ করে পরমেশ্বর তাঁকে খুন করেন বলেই অভিযোগ।
[আরও পড়ুন: যজ্ঞের নামে বধূকে যৌন নিগ্রহ ও আর্থিক প্রতারণা! গ্রেপ্তার কলকাতার জ্যোতিষী]
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, স্থানীয়দের কাছে করুণাকে নিজের ধর্ম বোন হিসেবে পরিচয় দিতেন পরমেশ্বর। এমনকী পরমেশ্বরের ১৩ বছরের ছেলেও জানতেন করুণা তাঁর ধর্ম পিসি হন। ফলে একে অন্যের বাড়িতে ছিল অবাধ যাতায়াত। কিন্তু পুলিশি জিজ্ঞাসাবাদে গোটা বিষয়টিই জানিয়েছেন পরমেশ্বর। ছেলেকে নিয়ে থানায় এসে আত্মসমর্পণ করে তিনি বলেন, প্রেমিকাকে খুন করেছেন। দেহ বাড়িতে পড়ে রয়েছে। পাশ থেকে ছেলেও বলে ওঠে, তার বাবা ধর্ম পিসিকে খুন করেছেন। এমন স্বীকারোক্তি শুনে রীতিমতো হকচকিয়ে যান ডিউটি অফিসার। এরপর বিষয়টি জানানো হয় আইসিকে।
অভিযুক্তকে নিয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছায় পুলিশ। জালাবেড়িয়া বেনেরহাট এলাকায় গিয়ে পরমেশ্বরের বাড়ি থেকে উদ্ধার করা হয় করুণার নিথর দেহ। দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়। আজ, বুধবার অভিযুক্তকে আদালতে পেশ করার কথা। দীর্ঘদিনের পরকীয়া এবং তার পরিণতির কথা জানতে পেরে বিস্মিত স্থানীয়রাও।