দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: একেই বোধহয় বলে নিয়তি! এতদিন যিনি সর্পাঘাতে আক্রান্তদের বাঁচিয়েছেন, এবার ছোবল মেরে তাঁরই প্রাণ কাড়ল এক সাপ। ঘটনা কুলতলির পশ্চিম গাবতলা এলাকার। শুক্রবার কেউটে সাপের ছোবলে মৃত্যু হয়েছে বছর পঁয়ষট্টির শম্ভুচরণ নস্কর। সর্পদংশনের পর নিজেও নিজেকে বাঁচানোর কম চেষ্টা করেনি। কিন্তু শেষ রক্ষা আর হল না। শেষ মুহূর্তে হাসপাতালে ভর্তি করা হলেও মৃত্যু হল।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার (South 24 Parganas) কুলতলির পশ্চিম গাবতলার বাসিন্দা শম্ভুচরণ আসলে চাষি। কৃষিকাজের পাশাপাশি তিনি ওঝার কাজও করতেন। এলাকার কাউকে সাপে ছোবল (Snake Bite) দিলে, সঙ্গে সঙ্গে নিয়ে যাওয়া হতো শম্ভুচরণের কাছে। তিনি ঝাড়ফুঁক করে বিষ বের করে ওই ব্যক্তিকে বাঁচিয়ে তুলতেন বলে জনশ্রুতি তৈরি হয়েছিল। কিন্তু এবার সেই ব্যক্তিরই মৃত্যু হল সাপের কামড়ে।
[আরও পড়ুন: ‘বিবেক জাগে শুধু বাংলায়’, আর জি কর কাণ্ডে প্রতিবাদী গান গাওয়ায় অরিজিৎকে কটাক্ষ কুণালের]
জানা গিয়েছে, শুক্রবার সকালে রোজকার মতো নিজের খেতে গিয়েছিলেন শম্ভুচরণ। সেসময় একটি কেউটে সাপ তাঁকে ছোবল মারে। সঙ্গে থাকা বর্শা দিয়ে সাপটিকে তিনি আঘাত করেন প্রথমে। তার পর বর্শাঘাতেই মেরে ফেলেন সাপটিকে। মৃত সাপকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ি ফেরেন শম্ভুচরণ। নিজেই নিজের চিকিৎসা (Treatment) শুরু করেন। কিন্তু সেই চেষ্টা আর সফল হয়নি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে থাকে। পরিবারের লোকজন দ্রুত তাঁকে (Death)নিকটবর্তী জামতলা হাসপাতালে ভর্তি করান। কিন্তু সেখানে শম্ভুবাবুর মৃত্যু হয়।
[আরও পড়ুন: জনপ্রিয় ফুটবলারকে মন দিয়েছেন ‘রানিমা’, দিতিপ্রিয়ার প্রেমিকের পরিচয় জানেন?]
শম্ভুচরণের পরিবারের লোকজন এই ঘটনায় হতবাক। তাঁরা বলছেন, ''ও তো নিজেই সাপে কামড়ানো মানুষজনকে বাঁচাত। কী যে হল, বুঝতেই পারছি না।'' এদিকে, ক্যানিংয়ের যুক্তিবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থার সদস্য বিজন ভট্টাচার্য বলেন, ''সাপ যদি কামড়ায়, তাহলে ওঝাকে দিয়ে কখনওই বাঁচানো সম্ভব নয়। নিয়ম মেনে এভিএস দিতেই হয়। এতদিন তিনি যাঁদের বাঁচিয়েছেন বলে মনে করা হচ্ছে, তাঁদের নিশ্চয়ই কোনও নির্বিষ সাপ কামড়েছিল। তাই এমনিই তাঁরা বেঁচে গিয়েছেন।''