ধীমান রায়, কাটোয়া: রোগী দেখার নাম করে গ্রামেরই এক গৃহবধূর সঙ্গে ‘অবৈধ’ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ। খবর ছড়িয়ে পড়তেই হাতুড়ে চিকিৎসককে বেধড়ক মার জনতার। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থানার পুবার গ্রামে।
জানা গিয়েছে, গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের অভিযোগ ওঠায় ওই চিকিৎসককে ডেকে সালিশি সভা বসানো হয়। তারপর বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে অভিযুক্তের মাথা ন্যাড়া করে দেওয়া হয়। পরানো হয় জুতোর মালা। সোমবার বিকেল থেকে এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় ব্যপক উত্তেজনা ছড়ায়। খবর পেয়ে পুলিশ এসে গ্রামবাসীদের হাত থেকে উদ্ধার করে নিয়ে যায় ওই হাতুড়ে চিকিৎসককে। জানা গিয়েছে, তাঁর নাম সওকত হাসান মণ্ডল (৪২) ওরফে রাজু। বর্তমানে ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশের হেফাজতে রয়েছেন তিনি। যদিও সোমবার রাত পর্যন্ত এনিয়ে নির্দিষ্ট কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে পুলিশ সূত্রে জানা যায়।
[আরও পড়ুন: গরুপাচার মামলায় CBI-এর সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিটে নাম বিকাশ মিশ্র, অনুব্রত ঘনিষ্ঠ সায়গলের]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পুবার গ্রামেরই বাসিন্দা সওকত হাসান। গ্রামেই তাঁর চেম্বার। স্থানীয়দের অভিযোগ, গ্রামের এক গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন সওকত হাসান। সেই গৃহবধূর স্বামী বাইরে থাকেন। বিষয়টি অবশ্য চাপাই ছিল। গ্রামবাসীদের একাংশের দাবি, ওই ঘটনা প্রকাশ্যে আনেন ওই হাতুড়ে চিকিৎসকের স্ত্রী। সেই গৃহবধূর সঙ্গে অন্তরঙ্গ কিছু দৃশ্য সওকত তাঁর মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। মোবাইল তা দেখে ফেলেন সওকতের স্ত্রী। তাঁর স্ত্রী-ই এই কথা ওই মহিলার শ্বশুরবাড়িতে জানিয়ে দেন। এরপরেই গ্রামে খবরটি ছড়িয়ে পড়ে। ফলে ওই মহিলাকে শ্বশুরবাড়ির লোকজন বাপেরবাড়িতে দিয়ে আসেন। এরপর গ্রাম সুরক্ষা কমিটিকে জানানোর পর এদিন সালিশি সভা বসানো হয় বলে স্থানীয় সূত্রে খবর। বাড়ি থেকে নিয়ে আসা হয় সওকতকে। তাঁকে একটি বিদ্যুতের খুঁটিতে বেঁধে রাখা হয়। মাথা ন্যাড়া করে পরানো হয় জুতোর মালা। চড় চাপড়ও দেওয়া হয়।
ঘটনার খবর খেয়ে, ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ ওই চিকিৎসককে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে আসে। যদিও রাত পর্যন্ত লিখিতভাবে কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি। এই বিষয়ে রামনগর অঞ্চল তৃণমূল সভাপতি আসগর শেখ বলেন, “আমি গ্রামের বাইরে ছিলাম। তবে শুনেছি এক গৃহবধূর সঙ্গে অবৈধ সম্পর্কের কথা জানাজানি হয়ে যায়। ওই হাতুড়ে চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ রয়েছে। চাকরির নামে টাকা তোলার অভিযোগে ওর পরিবারের একজনের নাম জড়ায়। তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। কিছু মানুষ উত্তেজিত হয়ে এসব ঘটিয়েছে। বিষয়টি পুলিশ দেখছে।”