দিব্যেন্দু মজুমদার, হুগলি: মা, বাবা ও বিবাহিত বোনকে খুন করে আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন যুবক। চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হুগলির ধনেখালিতে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে যুবককে।
জানা গিয়েছে, যুবকের নাম প্রমথেশ ঘোষাল। মা শুভ্রা ঘোষাল ও বাবা অসীম ঘোষালের সঙ্গে ধনেখালিতেই থাকতেন তিনি। প্রাইভেট টিউশনি করে রোজগার করতেন প্রমথেশ। কিন্তু সংসারে আয়ের থেকে ব্যয় বেশি ছিল। কারণ মা ও বাবা দু’জনেই অসুস্থ থাকতেন। এদিকে প্রমথেশও সিরোসিস অফ লিভারে আক্রান্ত ছিলেন। ফলে ওষুধ কেনাতেই বেশিরভাগ টাকা বেরিয়ে যেত।
[আরও পড়ুন: রেললাইনে বসেই মোবাইল গেমে মজে, অশোকনগরে ট্রেনের ধাক্কায় মৃত ২ কিশোর]
শোনা গিয়েছে, বোন পল্লবীর সংসারও টানতে হত প্রমথেশকে। কারণ পল্লবীর স্বামী কোনও রোজগার করতেন না। এমন পরিস্থিতিতে কোভিডে আক্রান্ত হন প্রমথেশ। টিউশনিও বন্ধ হয়ে যায়। মনে করা হচ্ছে এই কারণে মানসিক অবসাদে ভুগতেন যুবক। জীবনের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন তিনি। এলাকায় গৃহশিক্ষক হিসেবে নাম ছিল যুবকের। তিনি যে এমন কাজ করতে পারেন, তা কেউ বিশ্বাসই করতে পারছেন না।
জানা গিয়েছে, প্রমথেশের বোন শ্বশুরবাড়িতেই থাকতেন। ভাইফোঁটা দিতে বাপের বাড়িতে এসেছিলেন। মা, বাবা ও বোনকে খুন করে প্রমথেশ ব্লেড দিয়ে নিজের হাতের শিরা কেটে ফেলেন। কিন্তু ততক্ষণে প্রতিবেশীরা টের পেয়ে যান। সঙ্গে সঙ্গে প্রমথেশকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। খবর দেওয়া হয় পুলিশকে।
ঘটনাস্থলে এসে পুলিশ মৃতদেহগুলি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠায়। প্রমথেশ আপাতত ধনেখালি গ্রামীণ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের অনুমান, অভাব-অনটনের জেরেই মানসিক অবসাদে ভুগছিলেন যুবক। আর তার জেরেই এই কাণ্ড ঘটিয়েছেন তিনি। তবে এর নেপথ্যে অন্য কোনও কারণ রয়েছে কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।