শ্রীষিতা ঘোষ: দেশজুড়ে অ্যাসিডের অবাধ বিক্রি রুখতে আরও কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার পক্ষে জোরালো সওয়াল মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মানেকা গান্ধীর৷ ছাড়পত্র না থাকলে অবৈধভাবে অ্যাসিড কেনাবেচা সম্পূর্ণ বন্ধ হওয়ার প্রয়োজন বলে মনে করছেন তিনি৷ দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত দ্বিতীয় সারা ভারত মহিলা সাংবাদিক সম্মেলনে এসে তিনি আরও জানান, অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষতিপূরণ ও চিকিৎসার স্বার্থে ইতিমধ্যেই অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে৷ তার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় ৮০ জন অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলা জন্য পাঁচ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে৷ অক্টোবর মাসে ওই টাকা রাজ্যের কাছে পাঠানো হয়েছে৷ গোটা দেশে অ্যাসিড আক্রান্ত মহিলাদের ক্ষতিপূরণে বরাদ্দ হয়েছে মোট ৯০ কোটি টাকা৷
জাতীয় মানের এই সম্মেলনে গোটা দেশ থেকে প্রায় একশো জন মহিলা সাংবাদিক অংশ নিয়েছিলেন৷ মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথভাবে সম্মেলন আয়োজন করেছিল প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি)৷ সাংবাদিকদের সঙ্গে মহিলা, শিশুদের সুরক্ষা সংক্রান্ত নানা বিষয়ে মুখোমুখি আলোচনা করেন মন্ত্রী৷ কোন রাজ্যে মহিলা, শিশুদের কী কী সমস্যা রয়েছে সবকিছু বিস্তারিত জেনে নেন সাংবাদিকদের কাছ থেকেও৷ একাধিক সরকারি পরিকল্পনাও ঘোষণা করেন৷ মহিলাদের উপর যৌন নিগ্রহ, ধর্ষণের ঘটনা প্রসঙ্গে মন্ত্রী জানান, গোটা পৃথিবীর তুলনায় এ দেশে ধর্ষণের মতো ঘটনা অনেকটাই কম৷ আন্তর্জাতিক সমীক্ষা অনুযায়ী, ধর্ষণের ঘটনার ক্ষেত্রে শীর্ষে রয়েছে সুইডেন৷ শেষের দিক থেকে চতুর্থ স্থানে রয়েছে ভারত৷ তিনি আরও জানান, ভারত সরকার মহিলাদের উপর নিগ্রহ রুখতে বিশেষ তৎপর৷ এমন ঘটনা কোনওমতেই বরদাস্ত করা হয় না৷ সে কারণেই এ সংক্রান্ত খবর অধিক সংখ্যায় সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়৷ দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়৷ সুইডেনের মতো অন্যান্য দেশগুলিতে এই বিষয়গুলি সেভাবে প্রকাশ্যে আসে না৷ তাই সাধারণ মানুষ জানতে পারেন না৷
দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অ্যাসিড বিক্রি বন্ধে প্রশাসন যাতে সর্বত্র কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার বিষয়ে মত রাখেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী৷ খোলা বাজারে অ্যাসিড বিক্রিতে ইতিমধ্যেই নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন্দ্রীয় সরকার৷ কিন্তু তা সত্ত্বেও যত্রতত্র লাইসেন্স ছাড়াই অ্যাসিড বিক্রি হচ্ছে বলে অভিযোগ৷ সালফিউরিক, নাইট্রিক ও হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড বিভিন্ন জায়গায় স্বল্পমূল্যে বিক্রি হচ্ছে৷ অ্যাসিড আক্রমণকারীরা মোটরবাইক মেরামতের দোকান থেকে সালফিউরিক অ্যাসিড সংগ্রহ করতে পারছে৷ এছাড়াও সোনা ও ধাতু গলানোর কাজে ব্যবহৃত হয় নাইট্রিক অ্যাসিড৷ সয়া সস, প্রসাধনী দ্রব্য ও বিভিন্ন ওষুধ তৈরির কাজে ব্যবহার করা হয় হাইড্রোক্লোরিক অ্যাসিড৷ এই তিন ধরনের অ্যাসিড সহজেই হাতে পেয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা৷ এছাড়াও বিভিন্ন স্টেশনারি দোকানে বিক্রি হয় শৌচাগার পরিষ্কারের অ্যাসিড৷ ওগুলি যাতে সহজে দুষ্কৃতীদের হাতে না পৌঁছয় সেজন্য অ্যাসিড বিক্রি রুখতে আরও বেশি কড়া ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন বলে জানান তিনি৷
The post অবাধে অ্যাসিড বিক্রি রুখতে কড়া ব্যবস্থা চান মানেকা গান্ধী appeared first on Sangbad Pratidin.