সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ফেব্রুয়ারি মাসে সেনা অভ্যুত্থানের পর থেকেই মায়ানমারের (Myanmar) পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে। গণতন্ত্রকামীদের প্রবল বিক্ষোভের পর এবার বার্মিজ সেনার বিরুদ্ধে মোর্চা খুলেছে বেশ কয়েকটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র সংগঠন। সামরিক জুন্টার বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ লড়াইয়ের ডাক দিয়েছে বেশ কয়েকটি বিদ্রোহী সংগঠন। এহেন পরিস্থিতিতে এবার মায়ানমারে আশ্রয় নেওয়া মণিপুরী জঙ্গি সংগঠনগুলিকে তাদের হয়ে লড়াই করতে বাধ্য করছে জুন্টা।
[আরও পড়ুন: ইজরায়েলে বেনজির বিরোধী ঐক্য, প্রধানমন্ত্রীর আসন হারাতে চলেছেন নেতানিয়াহু!]
জানা গিয়েছে, এবার বার্মিজ সেনার হয়ে লড়াই করছে মণিপুরের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন ‘United National Liberation Front’ (UNLF)। মণিপুর লাগোয়া মায়ানমারের গ্রামগুলিতে গণতন্ত্রকামী জনতার বিরুদ্ধে লড়াই করতে এই জঙ্গিদের নিজেদের পোশাক পরিয়ে ময়দানে নামিয়েছে বার্মিজ সেনা। ফলে বেশ কয়েকজন মেইতেই জঙ্গি মণিপুরে পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে। সে দেশের গণতন্ত্রকামী এক সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর, মায়ানমারের কাবাও উপত্যকার তামু শহরে মিলিশিয়া বা সশস্ত্র সংগঠন তৈরি করেছে সাধারণ মানুষ। নাম দেওয়া হয়েছে তামু পাবলিক ডিফেন্স ফোর্স। গত মে মাসের ১২ তারিখ বার্মিজ সেনার সঙ্গে লড়াইয়ে অন্তত সরকারি বাহিনীর ১৫ জন জওয়ানকে খতম করা হয়েছে বলে দাবি করেছে মিলিশিয়াটি। নিহতদের মধ্যে অন্তত চারজন মেইতেই জঙ্গি। তাদের শরীরে সেনার উর্দি ছিল। এই খবর আসে অসম রাইফেলস ও সেনাবাহিনীর কাছে। সেনা সূত্রে জানানো হয়েছে, ওই চার মেইতেই আদতে মণিপুরি মেইতেই জঙ্গি দলের সদস্য। যদিও তাদের পরনে ছিল মায়ানমার সেনার পোশাক। সম্ভবত তামুতে ভারতীয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে আক্রমণ চালালে মায়ানমার সেনার প্রাণহানি হতে পারে আশঙ্কা করেই মিলিটারি কাউন্সিল এক জনজাতির ভারতীয় জঙ্গিদের বিরুদ্ধে অন্য জনজাতির ভারতীয় জঙ্গিদের লড়তে নামিয়েছে।
এদিকে, মণিপুর লাগোয়া মায়ানমারের গ্রামগুলিতে বহুকাল ধরেই আশ্রয় নিয়েছে কুকি জঙ্গিরা। এবার গ্রামবাসীদের হয়ে সেনার বিরুদ্ধে লড়তে নেমেছে মণিপুরেরই ওই জঙ্গিরা। সীমান্তের দু’পারে থাকা কুকি জঙ্গিদের সব ক’টি সংগঠনই ভারতে সংঘর্ষবিরতিতে রয়েছে। তারা মায়ানমারে গণতন্ত্র ফেরানোর পক্ষে। কুকিরা মায়ানমার সরকারের কাছে জোমি গোষ্ঠীভুক্ত কুকি, ওয়া, পালাউং, লাহু ও পোয়া জনজাতিদের নিয়ে নাথালিট ও চিন্দউইন নদীর মধ্যবর্তী এলাকা জুড়ে পৃথক রাজ্য দাবি করেছে। আপাতত প্রতিরোধ বাহিনীর পাশে দাঁড়িয়ে সেনার বিরুদ্ধে লড়ছে তারা। আর এসব ঘটনার উপর কড়া নজর রেখেছে ভারতীয় ফৌজ। কারণ মায়ানমারের সংঘর্ষ এবার মণিপুরকেও উত্তপ্ত করে তুলতে পারে বলেই আশঙ্কা।