সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, দুর্গাপুর: ফের পথকুকুরদের উপর নৃশংসতার সাক্ষী রইল বাংলা। দুর্গাপুরে (Durgapur) পাঁচ সারমেয় শাবককে গরম পিচের ড্রামে ফেলে নির্মমভাবে ‘খুন’ করার অভিযোগ উঠল। কাঠগড়ায় এক বেসরকারি কারখানার নিরাপত্তারক্ষী।পুলিশের কাছে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। অভিযোগ পেয়ে কড়া ব্যবস্থার আশ্বাস দিয়েছেন মহকুমাশাসক। নিন্দার ঝড় সর্বত্র।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানা এলাকার আরআইসি প্লটে পাঁচ সারমেয় শাবককে নিথর দেহ পড়ে থাকতে দেখা যায়। শরীরের কালো ছাপ দেখে বোঝা যায়, তাদের গায়ে ঢেলে দেওয়া হয়েছিল গরম কালো পিচ। তাতেই মৃত্যু হয় চার কুকুরছানার (puppies)। একটি শাবকের দেহে তখনও প্রাণ ছিল। সেটিকে উদ্ধার করে জখম অবস্থায় চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হলেও বাঁচানো সম্ভব হয়নি।
[আরও পড়ুন: শুরুতেই অ্যাপ বিভ্রাট, হোঁচট খেল প্রবীণ নাগরিকদের টিকাকরণ]
এভাবে পাঁচ শাবকের মর্মান্তিক পরিণতির কথা জানিয়ে স্থানীয়রাই খবর দেন এক পশুপ্রেমী সংগঠনকে। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সূত্রে জানা গিয়েছে, স্থানীয় এক বেসরকারি কারখানার নিরাপত্তাকর্মী এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ থানায় অভিযুক্ত নিরাপত্তারক্ষীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেছে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাটি। সংগঠনের পক্ষ থেকে সুস্মিতা সেনগুপ্ত জানান, “ওই নিরাপত্তারক্ষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই। এই ধরনের নারকীয় হত্যাকাণ্ডের কঠিন ভাষায় নিন্দা করা প্রতিটি মানুষের দায়িত্ব।” এই নির্মম ঘটনায় অভিযুক্তের উপর ব্যাপক ক্ষুব্ধ এলাকার মানুষজন। দুর্গাপুরের মহকুমাশাসক অর্ঘ্যপ্রসূন কাজি বলেন, “অত্যন্ত দুঃখজনক ঘটনা। তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিকে খুঁজে উপযুক্ত ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জন্য পুলিশকে নির্দেশ দিয়েছি।”
[আরও পড়ুন: নিমতায় বৃদ্ধাকে মারধরের ঘটনায় নিন্দার ঝড়, ঘৃণার রাজনীতি খেলছে BJP, পালটা দাবি তৃণমূলের]
এই প্রথম নয়। এর আগে এনআরএস হাসপাতালে ১৬ টি কুকুরছানাকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছিল। তা নিয়ে বছর দুই আগে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে রাজ্যের পশুপ্রেমী মহল। সম্প্রতি দেগঙ্গায় এক শিক্ষক দম্পতির বিরুদ্ধে খাবারে বিষ মিশিয়ে ৫ টি কুকুরকে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠেছিল। এরপর দুর্গাপুরের ঘটনা এবং তা আরও নৃশংস। গরম পিচ ঢেলে কুকুর শাবকদের খুন করার মতো অভিযোগ। দোষীকে কঠোরতম শাস্তির দাবিতে ফুঁসছেন দুর্গাপুরের নিউটাউনশিপ এলাকার বাসিন্দারা।