সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: রাষ্ট্রপতি নির্বাচন ঘিরে রাজধানীতে তুমুল তৎপরতা। বিরোধীরা পছন্দসই প্রার্থীর খোঁজে ঘন ঘন বৈঠকে। এনডিএ শিবিরের রাজনৈতিক ম্যানেজাররা সমানভাবে সক্রিয়। গোপালকৃষ্ণ গান্ধী থেকে দৌপ্রদী মুর্মু, রাজধানীতে কত ওজনদার নাম ঘুরছে। রাইসিনা হিলের দৌড়ে এদের অনেক আগেই নিঃশব্দে হাজির হয়েছেন আরও অনেক উচ্চাকাঙ্ক্ষী। যাদের কেউ জীবদ্দশায় কোনও নির্বাচনে জেতেননি। তবুও একবার রাষ্ট্রপতি হতে চান। কারও ভোটে লড়ার অভিজ্ঞতা না থাকলেও, প্রচারে আসার লোভে প্রার্থী হয়েছেন।
[অ্যাম্বুল্যান্স নেই, সাইকেল চালিয়ে সাত মাসের ভাগ্নীর মৃতদেহ বইলেন যুবক]
দুনিয়ার বৃহত্তম গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা। যে দেশে সর্বোচ্চ সাংবিধানিক পদের অধিকারী রাষ্ট্রপতি। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর ভারতের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কখনও দেখা যায় সর্বসম্মতিতে শাসক ও বিরোধী শিবির প্রার্থী ঠিক করে। কখনও আবার দুই শিবির থেকে আলাদা প্রার্থী দেওয়া হয়। এবারও শাসক বা বিরোধী শিবিরে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে নিয়ে তৎপরতা তুঙ্গে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের বাদ্যি বাজার অনেক আগেই এই পদে নিজেদের দেখতে চেয়েছেন দেশের বেশ কিছু উৎসাহী। শাসক বা বিরোধী শিবির এখনও নাম ঠিক করে উঠতে পারলেও, তাঁরা মনোনয়ন জমাও দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কেন এমন একটা নির্বাচনে প্রার্থী হতে চাইলেন। তাঁদের পরিচয় বা উদ্দেশ্য জানলে পরতে পরতে রয়েছে চমক। ভারতীয় গণতন্ত্রের কেন এত বৈচিত্র তার খোঁজও মিলবে।
[ভাসছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল, বন্যার বলি ১৩]
এপর্যন্ত ৬ জন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে মনোনয়ন দাখিল করেছেন। যাদের মধ্যে কে পদ্মরাজনের নাম রয়েছে সামনের সারিতে। তামিলনাড়ুর সালেমের এই মানুষটি এপর্যন্ত ১৭০টি নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। প্রত্যেকবার হার। এই নজির গড়ে লিমকা বুক অব রেকর্ডে ২০০৪ সালেই নাম তুলেছেন। তবুও খিদে মেটেনি। গতবার প্রণব মুখোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে প্রার্থী হয়ে হেরেছিলেন। তাঁর প্রতিদ্বন্দ্বীর তালিকায় রয়েছেন এ পি জে আব্দুল কালাম, মনমোহন সিং, অটলবিহারী বাজপেয়ী, জয়ললিতা, করুণানিধিদের মতো ওজনদাররা। ১৭১ তম নির্বাচনের আগেও অঘটনের সম্ভাবনা নয়, লড়াইটা স্পোর্টিংলিং নিয়েছেন পদ্মরাজন। তামিলনাড়ুর এই হেরোর মতো অবস্থা না হলেও, মুম্বইয়ের এক দম্পতির কাণ্ড শুনলে বুঝতে পারবেন মানুষের ইচ্ছে কত রকমের হতে পারে। মহম্মদ প্যাটেল এবং তাঁর স্ত্রী সায়রা বানু রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি পদের জন্য মনোনয়ন জমা দিয়েছেন। মধ্যপ্রদেশের আনন্দ সিং কুশওয়া এবং তেলেঙ্গানার এ বালা রাজ বা পুণের কোন্দকর বিজয়প্রকাশের ভাবনাটা একটু অন্যরকম। মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে তারা জানিয়েছেন, প্রত্যেক মানুষের যে এই অধিকার আছে তা তুলে ধরতে চেয়েছেন। এই ৬ জনের বাইরেও অনেকে রাষ্ট্রপতি পদে দাঁড়াতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ন্যূনতম ৫০ জন প্রস্তাবকের নাম জমা দিতে পারায় তাদের মনোনয়ন বাতিল হয়। হারবেন জেনেও জামানত হিসাবে প্রত্যেকেই ১৫ হাজার টাকা দিয়েছেন। তবে কেন এই লড়াই। এক প্রার্থী জানিয়েছেন, রাজনৈতিক নেতারা সংসদকে জেলখানা বানিয়ে ফেলেছেন। সেই পরিস্থিতি থেকে মুক্তি দিতেই তাঁর এই পদক্ষেপ। এতে তাঁকে কেউ পাগল বললেও কিছু করার নেই। কোনও প্রার্থী আবার ব্যালট পেপারে নাম দেখেই খুশি থাকতে চান। জীবদ্দশায় তাদের কাছে এটা যে পরম প্রাপ্তি। স্বপ্নও।
The post ১৭০ বার হেরেও রাইসিনার দৌড়ে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বৈচিত্রের রং appeared first on Sangbad Pratidin.