সুকুমার সরকার, ঢাকা: ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে দেশে ফিরিয়ে আনতে দিল্লির উপর চাপ আরও বাড়াচ্ছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার। এবার ভারতীয় সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাৎকার দিতে গিয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা মহম্মদ ইউনুস বলেছেন, ''আপাতত তাঁর ভারতে বসবাস করাটা সমস্যা নয়। সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ। তিনি বাংলাদেশি জনগণের সঙ্গে কথা বলছেন এবং সেটা রাজনৈতিক রূপ নিচ্ছে। তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যাচ্ছেন, এটিই সমস্যা। বিচারের মুখোমুখি করতে হাসিনাকে ফিরিয়ে দিতেই হবে দিল্লিকে।'' প্রত্যর্পণের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ইউনুস। তবে ইউনুসের এহেন 'চাপ' বাড়ানোকে তেমন গুরুত্ব দেয়নি নয়াদিল্লি। এনিয়ে এখনও কোনও প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
শেখ হাসিনাকে ভারত থেকে বাংলাদেশে ফেরাতে অন্তর্বর্তী সরকার ইন্টারপোলের কাছে আবেদন করেছে। ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্ত্বেও কেন নয়াদিল্লির কাছে অনুরোধ করা হয়নি? সাংবাদিকের এই প্রশ্নে ডক্টর ইউনুস বলেন, ''আমার মনে হয়, আমরা আইনি প্রক্রিয়া অনুসরণ করছি, তবে সে পর্যায়ে এখনও পৌঁছইনি।'' ডক্টর মহম্মদ ইউনুস বলেন, ''শেখ হাসিনা বাংলাদেশিদের ঢাকা ও অন্যান্য শহরের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ করতে উৎসাহিত করছেন। তার এসব বক্তব্য প্রচারিত হয়েছে। তিনি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতে বলছেন। এটি তো আরেকটি দেশের অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক বিষয়ে হস্তক্ষেপ।''
আওয়ামি লিগ কি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারবে? এই প্রশ্নে ড. ইউনুস বলেন, ''এটা ইতিমধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা রাজনৈতিক দলগুলোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে চাইনি। বিএনপি বলেছে, সব রাজনৈতিক দলকে নির্বাচনে অংশ নিতে হবে। সুতরাং তারা ইতিমধ্যেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা দেশের একটি প্রধান দলের মতামত অগ্রাহ্য করতে পারি না।'' ভারত-বাংলাদেশ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ৫ আগস্টের ঘটনা কীভাবে প্রভাব ফেলছে? প্রধান উপদেষ্টার বক্তব্য, ''বন্ধুপ্রতিম দেশ হিসেবে ভারতের উদযাপন করা উচিত যে, বাংলাদেশ এমন একটি শাসন থেকে মুক্ত হয়েছে, যেখানে মানুষ চরম কষ্টে ছিল, অনেক মানুষ প্রাণ হারিয়েছিলেন, অনেকে গুম হয়েছিলেন এবং অনেক প্রতিষ্ঠান ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। আমাদের তরুণ প্রজন্মের উদযাপনে সঙ্গে ভারতেরও অংশ নেওয়া উচিত এবং একসঙ্গে উদযাপন করা উচিত, যেমনটা অনেক রাষ্ট্র করছে।''