চোখে কনজাংটিভাইটিস, এপিডেমিক চলছে। কোন ওষুধে স্বস্তি? জানালেন হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞ ডা. রথীন চক্রবর্তী। পৌষালী দে কুণ্ডু
টকটকে লাল চোখ। কড়কড় করছে, জল ঝরছে। চোখ কচলে চুলকালে তবেই স্বস্তি। আবার সেকেন্ডের মধ্যে শুরু হচ্ছে চুলকানি। তারপর ক্রমেই চোখ ফুলে ঢোল। ঘুম থেকে ওঠার সময়ে পিচুটিতে চোখ বন্ধ। উপরের সবক’টি লক্ষণ কনজাংটিভাইটিস। অনেকে বলেন জয় বাংলা। গত সপ্তাহ থেকেই রক্তচক্ষু এই ব্যাকটেরিয়াজনিত অসুখ অতিমারীর চেহারা নিয়েছে। যে দ্রুততার সঙ্গে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে তা মনে করিয়ে দিচ্ছে করোনা পর্বকে। করোনার মতো প্রাণঘাতী নয় বলেই একটু যা স্বস্তি। কনজাংটিভাইটিসের দাপটে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়েছে স্কুলের ছেলেমেয়েরা। চোখে হাত দিয়ে সহপাঠীর সংস্পর্শে আসার কারণেই ছড়াচ্ছে এত বেশি। তাদের থেকে নিমেষে সংক্রমিত হচ্ছেন বাড়ির লোকেরা।
[আরও পড়ুন: রোগ থাকবে দূরে, শরীরে পড়বে না বয়সের ছাপ, ভরসা রাখুন আয়ুর্বেদে]
হোমিও দাওয়াই
কনজাংটিভাইটিসে হোমিওপ্যাথি ওষুধ ভাল কাজ করে। অসুখের তীব্রতা ও মেয়াদ কমায়। অর্থাৎ সংক্রমণ হচ্ছে বুঝতে পারলেই যদি ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তাহলে সাত-আটদিনের বদলে দু’-একদিনেই সেরে যাবে চোখ। প্রথম ওষুধ দেওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অস্বস্তি, কষ্ট অনেক কমে যায়।
চোখ কড়কড় করলে, সংক্রমণ শুরুর ইঙ্গিত মিললে – সালফার ২০০-এর পাঁচ-সাতটা গুলি পরপর দু’দিন খাওয়া যায়। এতে ইনফেকশন ও অ্যালার্জি খুব তাড়াতাড়ি কন্ট্রোল হয়ে যায়। এর সঙ্গে চোখে জলের ঝাপটা দিতে হবে। শিশুর ক্ষেত্রে ওষুধের তিন-চারটে গুলিই যথেষ্ট। চোখে ইনফেকশনের সামান্যতম ইঙ্গিত মিললেই সালফার ২০০ খাওয়া যায়। কোনও সাইড এফেক্ট নেই।
চোখ দিয়ে খুব জল ঝরলে – ইউফ্রেশিয়া ২০০ পরপর দু’দিন খেতে হবে। এর আই ড্রপও পাওয়া যায়।
পিচুটিতে চোখ জুড়ে থাকলে – আরজেনটাম নাইট্রিকাম ২০০ দু’-তিনদিন খেতে হবে।
সংক্রমণ এড়াতে
এই সংক্রামক অসুখ থেকে বাঁচতে সবাই বারবার চোখে জলের ঝাপটা দিন। বাড়ির কারও কনজাংটিভাইটিস হলে সবাই ঘন ঘন হাত ধুয়ে নিন। সংক্রমিতের গামছা, তোয়ালে, রুমাল স্পর্শ করবেন না। সম্ভব হলে সংক্রমিতকে আলাদা ঘরে রাখুন। রাস্তায় কোনও সংক্রমিতের কাছাকাছি এলে তাড়াতাড়ি হাত ধুয়ে নিজের চোখেও জলের ঝাপটা দিন।