সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: নারীর সাজে পুরুষদের মাতৃবন্দনা! জগদ্ধাত্রী পুজোয় কৃষ্ণনগরে ব্যতিক্রমী রীতি। যুগের পর যুগ কেটে গেলেও মালোপাড়া বারোয়ারির নিয়মে কোনও ছেদ নেই।
রাজা কৃষ্ণচন্দ্র রাজবাড়ির পুজো কৃষ্ণনগরে সবচেয়ে প্রাচীন। সিংহাসনে তখন নবাব আলিবর্দি খাঁ। তাঁর রাজত্বকালে নদিয়ার রাজার কাছ থেকে ১২ লক্ষ টাকা নজরানা দাবি করা হয়। কৃষ্ণচন্দ্র রায় তা দিতে অস্বীকার করেন। তাঁকে বন্দি করে নিয়ে যাওয়া হয় মুর্শিদাবাদে। ছাড়া পেয়ে রাজা নদীপথে কৃষ্ণনগরে ফেরার পথে দেবী দুর্গার বিসর্জনের বাজনা শোনেন। সে বছর দুর্গাপুজো করতে না পারায় অত্যন্ত দুঃখ পান তিনি। এবং তার পরই স্বপ্নাদেশ পেয়ে শুরু করেন জগদ্ধাত্রী পুজো। প্রাচীনত্বের নিরিখে দ্বিতীয় স্থানে মালোপাড়া বারোয়ারি।
[আরও পড়ুন: অসুস্থ জ্যোতিপ্রিয়, জেল থেকে সোজা নিয়ে যাওয়া হল এসএসকেএমে]
দেবী জলেশ্বরী মালোপাড়া বারোয়ারিতে পূজিতা হন। এই পুজোর বিশেষত্ব অনেক। একসময় রাজার থেকে অনুদান পেয়ে শুরু হয় পুজো। এখনও আসে অনুদান। রীতি মেনে এখনও পুরুষরা নারীর সাজে জল সাজতে যান। শাড়ি, গয়না পরে সাজেন তাঁরা। মহিলারাই বাড়ির পুরুষদের শাড়ি পরতে সাহায্য করেন। জল ভরার পর নারীবেশে পুরুষরা পথে থাকা আরও তিন দেবতার মন্দিরে যান।
আমন্ত্রণ জানান। এভাবেই দেবী জলেশ্বরীর পুজোর সূচনা। পুজোয় আজও হয় ধুনো পোড়ানো। ওই বিশেষ রীতির সময় লেলিহান শিখা ছুঁয়ে যায় মন্দিরের ছাদ। প্রাচীন রীতি মেনেই হয় মালোপাড়ার দেবী জলেশ্বরীর নিরঞ্জনও। মালোপাড়া বারোয়ারির পুজোয় অংশ নেন এলাকার সকলেই।
দেখুন ভিডিও: