শংকরকুমার রায়, রায়গঞ্জ: এবার গরুচোর সন্দেহে গণপ্রহার (Mob Lynching)। মানসিক ভারসাম্যহীন যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠল উত্তর দিনাজপুরে। মঙ্গলবার রাতের এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৫ জনকে আটক করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
মৃতের নাম জমিরুদ্দিন (২২)। উত্তর দিনাজপুরের (Uttar Dinajpur) করণদিঘি এলাকার দোমহনা পঞ্চায়েতে আমতলা কচরা গ্রামের বাসিন্দা তিনি। পরিবার সূত্রের খবর, জমিরুদ্দিন মানসিক ভারসাম্যহীন। রবিবার রাতে লাহুতারা এলাকায় মামারবাড়িতে এসেছিলেন তিনি। সেখানেই ছিলেন দিন দুয়েক। মঙ্গলবার রাতে ঘুম ভেঙে হঠাৎই বাড়ি ফেরার সিদ্ধান্ত নেন জমিরুদ্দিন। সেই মতো রাত বারোটা-সাড়ে বারোটা নাগাদ সাইকেলে চেপে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দেন।
[আরও পড়ুন: মূল্যবৃদ্ধির ক্ষতে প্রলেপ! সরকারি কর্মচারীদের DA বাড়াল কেন্দ্র]
সেই সময় গ্রামের রাস্তায় তাঁকে আটকায় চার-পাঁচজন। জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে। কিন্তু মানসিক ভারসাম্যহীন জমিরুদ্দিন সমস্ত প্রশ্নের সঠিক উত্তর দিতে পারেননি। এর পরই ওই যুবককে বেধড়ক মারধর শুরু করে স্থানীয় বাসিন্দারা। ঘটনাস্থলের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ আধিকারিক জমিরুদ্দিনকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। বলেন, সন্দেহভাজন যুবককে থানায় নিয়ে যাওয়া হোক। কিন্তু তাঁর প্রস্তাবে রাজি হয়নি গ্রামবাসীরা। বরং লোহার রড, লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় ওই যুবককে। পরে গুরুতর জখম অবস্থায় জমিরুদ্দিনকে উদ্ধার করে করণদিঘী গ্রামীণ হাসপাতালে ভরতি করে পুলিশ। বুধবার সকালে সেখানেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্বাভাবিকভাবেই এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।
এই ঘটনায় ইতিমধ্যে ৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর। এ প্রসঙ্গে রায়গঞ্জের পুলিশ সুপার সানা শেখ বলেন, যুবকের মৃত্যুর ঘটনা নিসন্দেহে নিন্দনীয়। ইতিমধ্যে ৫জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তদন্ত করা হচ্ছে। তবে ধৃতদের বিরুদ্ধে কোন কোন ধারায় মামলা করা হবে, তা এখনও চূড়ান্ত হয়নি।” প্রসঙ্গত, বছর দুয়েক আগে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গণপ্রহারের ঘটনা সামনে আসছিল। সেই সময় গণধোলাই বিরোধী আইন আনে রাজ্য। কঠোর আইন কার্যকর হলেও গণধোলাইয়ের ঘটনা এখনও ঘটছে রাজ্যে।