সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: উচ্চতায় মেরেকেটে চারফুট। এক পা খোঁড়া। মোটেই মনে রাখার মতো চেহারা নয়। তবে আপাত নিরীহ মনে হলেও এই লোকটিই হচ্ছে সাক্ষাৎ ‘মৃত্যুর সওদাগর’ কুখ্যাত জৈশ জঙ্গি নুর মহম্মদ ত্রালি ওরফে নুরা ত্রালি। মঙ্গলবার কাশ্মীরে সেনার হাতে খতম হয় এই ‘বামন’ জঙ্গি। তারপরই নুরার সম্পর্কে জানা যায় একের পর এক ভয়ঙ্কর তথ্য।
জানা গিয়েছে, ৪৭ বছরের ওই ‘বামন’ জঙ্গি কাশ্মীর উপত্যকায় জৈশ-ই-মহম্মদের শীর্ষনেতাদের মধ্যে অন্যতম। তাঁর মৃত্যুতে প্রবল আঘাত পেয়েছে পাক মদতপুষ্ট জেহাদি সংগঠনটি। কাশ্মীরে বিএসএফ শিবিরে হামলা সহ একাধিক সন্ত্রাসের নায়ক নুরা। ২০১৫ সালে জেল থেকে প্যারোলে মুক্তি পাওয়ার পর উপত্যকার মাটিতে জৈশকে আরও শক্তিশালী করার দায়িত্ব ছিল নুরার ঘাড়ে। কাশ্মীরে সে শুধু জঙ্গি নয়, ‘মৃত্যুর সওদাগর’ হিসেবেও কুখ্যাত ছিল। পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে সন্ত্রাসবাদীদের ভারতে প্রবেশ করাতে নুরার জুড়ি মেলা ভার ছিল। ফলে নিরাপত্তারক্ষীদের কাছে প্রবল মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়ায় ওই জঙ্গি।
[উপত্যকায় সেনার সাফল্য, পুলওয়ামায় নিকেশ কুখ্যাত জৈশ জঙ্গি নুরা ত্রালি]
কাশ্মীরের ডিজিপি এস পি বৈদ জানিয়েছেন, সেনার একটি টহলদারী কনভয়ে হামলার ছক করেছিল নুর সহ অন্য জঙ্গিরা। সেই উদ্দেশ্য নিয়েই ওই এলাকায় জমায়েত করেছিল। গোয়েন্দা সূত্রে খবর, গত বছর উরি সেনাঘাঁটিতে জঙ্গি হামলার নেপথ্যেও নুরার নকশা ছিল। তবে উপত্যকায় সেনার অভিযানে ও কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলির পালটা চালে চলতি বছর কিছুটা হলে বিপাকে পড়ে নুরা। বাধ্য হয়ে তাকে পালটাতে হয় নাশকতার ছক। সরাসরি সেনাঘাঁটিতে হামলা না করে টহলদারী বাহিনীর উপর অতর্কিতে হামলার ছক কষে সে। তবে দক্ষিণ কাশ্মীরের পুলওয়ামা জেলার সাম্বুরা গ্রামে নুরার ডেরার খবর পেয়ে যান গোয়েন্দারা। তারপরই চালানো হয় অভিযান। সারারাত ধরে চলা গুলির লড়াইয়ের শেষে মঙ্গলবার ভোররাতে ঘটনাস্থল থেকে আগ্নেয়াস্ত্র সহ নুর মহম্মদের দেহ উদ্ধার হয়।
নুরা কতটা ভয়ঙ্কর ছিল তা জানিয়েছেন দিল্লি পুলিশের প্রাক্তন আধিকারিক অশোক চন্দ। ২০০৩ সালে অস্ত্র পাচার করতে গিয়ে তাঁর হাতেই ধরা পড়ে নুরা-সহ চার জঙ্গি। তিনি জানান, শারীরিক উচ্চতা কম হলেও, নুরার মানসিকতা ভয়ঙ্কর ছিল। কাশ্মীর উপত্যকায় নুরার মৃত্যু জৈশের কোমর ভেঙে দিয়েছে।
[বাংলাদেশে গ্রেপ্তার কুখ্যাত জঙ্গি ‘গুরু’]
The post উচ্চতায় মোটে ৪ ফুট, এই জঙ্গির নাশকতার কাহিনি চমকে দেওয়ার মতো appeared first on Sangbad Pratidin.