সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: একের পর এক মেট্রো দুর্ঘটনার জেরে তিনটি স্টেশনের সুপারকে অপসারিত করল মেট্রো কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার পার্ক স্ট্রিট, কবি সুভাষ এবং নেতাজি স্টেশনের সুপারকে সরানো হয়েছে। যদিও বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজনৈতিক মহলে শুরু হয়ে গিয়েছে চাপানউতোর। অভিযোগ, যে দুর্ঘটনাগুলি ঘটছে, তার সঙ্গে সুপারদের কোনও যোগ নেই। তাই তাঁদের অপসারিত করার কোনও মানে হয় না বলে জানিয়েছেন রাজনৈতিক মহলের একাংশ।
কিছুদিন আগে মেট্রোয় হাত আটকে মৃত্যু হয় সজল কাঞ্জিলালের। মেট্রোর দরজায় তাঁর হাত আটকে যায়। ওই অবস্থাতেই চলতে শুরু করে ট্রেন। প্লাটফর্মে উপস্থিত ব্যক্তিদের চিৎকারে যতক্ষণে মেট্রো থামে, ততক্ষণে দুর্ঘটনা ঘটে গিয়েছে। আচমকা ব্রেক কষায় থার্ড লাইনে গিয়ে পড়েন সজল কাঞ্জিলাল। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তাঁর। এরপরই টনক নড়ে মেট্রো কর্তৃপক্ষের। নির্দেশিকা জারি হয়, এবার থেকে জোর করে উঠতে গেলেই দিতে হবে ফাইন। কার্যত গাফিলতির দায় ঝেড়ে ফেলতেই এমন সিদ্ধান্ত নেয় মেট্রো। অভিযোগ ওঠে এমনই।
[ আরও পড়ুন: ‘মানুষের পাশে থাকুন’, জনসংযোগ বাড়াতে ওসিদের নির্দেশ সিপি অনুজ শর্মার ]
অভিযোগ যে একেবারেই ভিত্তিহীন নয়, তার প্রমাণ মেলে দিন কয়েক পর। এবার ঘটনাস্থল নেতাজি ভবন মেট্রো স্টেশন। সেখানে ছাড়ার পর আরপিএফ কর্মীদের নজরে পড়ে, কামরার বন্ধ দরজার একটি যাত্রীর হাত আটকে রয়েছে। যাঁর হাত আটকে ছিল, তিনি অবশ্য কামরার ভিতরে ছিলেন। তড়িঘড়ি মেট্রো থামানো হয়। এরপর ওই যাত্রী নিজেই তাঁর হাতটি বের করে নেন। এই ঘটনার দায়ও যাত্রীদের ঘাড়েই চাপিয়ে দেয় মেট্রো কর্তৃপক্ষ। কিন্তু কয়েকদিন আগে যা ঘটেছে, তারপর আর দায় এড়াতে পারল না কর্তৃপক্ষ।
কয়েকদিন আগে মেট্রোর দরজায় আটকে যায় যাত্রীর শরীর। আক্রান্তের নাম আত্রেয়ী ভট্টাচার্য। সেন্ট জেভিয়ার্সের ছাত্রী তিনি। তাঁর অভিযোগ, গত মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে চারটে নাগাদ পার্ক স্ট্রিট স্টেশন থেকে যখন মেট্রোয় উঠতে যান, ঠিক তখন এসি রেকের দরজাটি বন্ধ হয়ে যায়। মেট্রোর দরজায় আটকে পড়েন তিনি। তখনই মেট্রো চলতে শুরু করে। শেষপর্যন্ত অন্য এক যাত্রী হাত ধরে টেনে তাঁকে কামরায় ঢুকিয়ে নেন। যদিও পার্ক স্ট্রিটে স্টেশন এমন কোনও ঘটনাই ঘটেনি বলে দাবি করে মেট্রো কর্তৃপক্ষ।
[ আরও পড়ুন: সারদা কাণ্ডে এবার তৃণমূল সাংসদ ডেরেককে জেরা ইডির ]
কিন্তু পরে চাপের মুখে নতি স্বীকার করতে হয় তাঁদের। যদিও কর্তৃপক্ষ এতে পরিকাঠামা ত্রুটির কথা বলে। কিন্তু তারপর প্রশ্ন ওঠে পরিকাঠামোগত ত্রুটি কর্মীদের ঘাড়ে দায় চাপিয়ে কতদিন চালাবেন পদস্থ কর্তারা? প্রযুক্তিগত ত্রুটি ঢাকতে বারবারই নিচু তলার কর্মীদের নিশানা করা হচ্ছে। এমন পদক্ষেপ অগণতান্ত্রিক। আসল সমস্যার এখনও কোনও সমাধান হচ্ছে না। এরপরই কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তে বদল করা হল তিন স্টেশনের সুপারকে।
The post কলকাতায় পরপর মেট্রো দুর্ঘটনার জের, সরানো হল তিন স্টেশনের সুপারকে appeared first on Sangbad Pratidin.