shono
Advertisement

ঘরে ফিরতে লাখ টাকা খরচ! মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় ফিরে সর্বস্বান্ত হলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা

বাস ভাড়া মেটাতে গ্রামের পরিচিতদের কাছেই হাত পাততে হল তাঁদের। The post ঘরে ফিরতে লাখ টাকা খরচ! মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় ফিরে সর্বস্বান্ত হলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা appeared first on Sangbad Pratidin.
Posted: 01:12 PM May 20, 2020Updated: 01:12 PM May 20, 2020

সুমিত বিশ্বাস, পুরুলিয়া: ঘরে ফিরতেই লাখ টাকা! মাস মাইনের টাকা শেষ হয়ে যাওয়ায় গ্রামে ফিরে ধার-দেনা করে বাস ভাড়া মেটালেন পরিযায়ীরা। সুদূর মহারাষ্ট্রে রং মিস্ত্রির কাজে কারও বেতন ছিল ছ’হাজার। কেউ পেতেন সাত। কেউ আবার আট থেকে দশ হাজার। দীর্ঘ লকডাউনে আটকে পড়ে উপার্জনহীন হয়ে সেই টাকা প্রায় আগেই শেষ। ফলে প্রায় দেড় হাজার কিমি পথ পার হয়ে বাস ভাড়া মেটাতে গ্রামের পরিচিতজনদের কাছেই হাত পাততে হল তাঁদের। পরিযায়ীদের ঘরে ফেরার উপাখ্যানে এ যেন আরও এক নতুন উদাহরণ হয়ে রইল। সোম ও মঙ্গলবার মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলার যথাক্রমে পাতালগঙ্গা ও রোঢ়া এলাকা থেকে পুরুলিয়ার তিন থানা এলাকার ৩৯ জন ও বাঁকুড়ার খাতড়ার এক জন পরিযায়ী শ্রমিক দুটি বাস ভাড়া করে গ্রামে ফেরেন। দুটি বাসই এই শ্রমিকদের কাছ থেকে মোট ভাড়া নেয় এক লাখ পাঁচ হাজার টাকা।

Advertisement

তবে এদিন রোঢ়া থেকে আসা বাসে বিহারের ২৩ জন পরিযায়ী ছিলেন। তাঁদেরকে পাটনা পৌঁছে দিতে এই বাসটি আরও এক লাখ কুড়ি হাজার টাকা নেবে। ফলে এই বাস মোট দু’লাখ পঁচিশ হাজারে চুক্তি করে। এই বাসে গ্রামে ফেরা বোরো থানার বিক্রমডি গ্রামের দেবাশিস মাহাতো, আকাশ মাহাতো বলেন, “এই বাসটি একেবারেই পুরনো। পথে তিনবার খারাপ হয়েছে। কিন্তু আমাদের ঘরে ফিরতে আর কোনও উপায় ছিল না। তাই ভাঙাচোরা পুরনো বাসেই লাখ-লাখ টাকা ভাড়া দিয়ে গ্রামে ফিরতে হল। তবে এই টাকা জোগাড় করতে আমাদের হিমশিম খেতে হয়। আগে অগ্রিম হিসাবে বেশ কিছু টাকা নেয়। না হলে সেখান থেকে রওনাই দিতে চাইছিল না।” কিন্তু গ্রামে ফিরেও তাঁদের ঘরে ঠাঁই হয়নি। ঝাড়খণ্ড সীমান্তে বান্দোয়ানের ধবনী নাকা পয়েন্টে তাঁদের স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর লালারসের নমুনা নিয়ে চিকিৎসক তাঁদেরকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার পরামর্শ দেন। কিন্তু গ্রামের মানুষজন তাঁদেরকে দূরেই সরিয়ে রাখেন বলে অভিযোগ। ফলে কেউ আশ্রয় নেন গ্রামের স্কুলে। কেউ আবার খোলা মাঠে ত্রিপলের তাঁবুতে।

[আরও পড়ুন: জামিন পেয়েও ফেরা হল না ঘরে, লকডাউনে বাসস্ট্যন্ডই ঠিকানা বিচারাধীন বন্দির]

গত ডিসেম্বর মাসে এঁরা মহারাষ্ট্রে কাজে যান। ঠিকাদার সংস্থার অধীনে মাস মাইনেতে তারা কাজ করতেন। তাদের থাকার ব্যবস্থা করেছিল ওই সংস্থাই। কিন্তু লকডাউন দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হওয়ায় তাদের খাবার পেতে সমস্যা হচ্ছিল। গত সোমবার ফেরা বান্দোয়ানের তালপাত গ্রামের মকরচন্দ্র মাহাতো বলেন, “আমরা যেখানে থাকি সেখানে এই লকডাউনে জিনিসপত্রের দাম খুব বেড়ে যায়। ফলে হাতে যা জমানো টাকা ছিল সব শেষ হয়ে আসছিল। ফলে তুলনামূলক ভাবে কম টাকা খরচে বাস ভাড়া করা ছাড়া আর কোন রাস্তাই ছিল না। তবে এই বাস জোগাড় করতে খুব ঝামেলায় পড়তে হয়।” গত শুক্রবার ভোর রাতে এই দুটি বাস পাশাপাশি দুটি এলাকা রোঢ়া ও পাতালগঙ্গা থেকে ছাড়ে।

[আরও পড়ুন: ওড়িশা থেকে কষ্ট করে ঘরে ফেরাই সার, বাড়ির পরিবর্তে আমবাগানে ঠাঁই পরিযায়ী শ্রমিকদের]

ছবি: অমিত সিং দেও

The post ঘরে ফিরতে লাখ টাকা খরচ! মহারাষ্ট্র থেকে বাংলায় ফিরে সর্বস্বান্ত হলেন পরিযায়ী শ্রমিকরা appeared first on Sangbad Pratidin.

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement