সন্দীপ চক্রবর্তী: যুবশ্রী প্রকল্পে সুবিধাপ্রাপ্ত ৭০ হাজারের বেশি যুবক-যুবতী চাকরি পেলেন গত ছয় বছরে। এবং এঁদের চাকরি দিতে রাজ্য সরকারের কর্মসংস্থান ব্যাংকের আওতায় যুক্ত হয়েছে প্রায় ৭০০ সংস্থা। যুবশ্রী প্রকল্পের সুবিধা নিতে এখনও পর্যন্ত ৩৪ লক্ষ জন শ্রম দপ্তরের দ্বারস্থ। প্রত্যেককেই এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নাম নথিভুক্ত করতে হয়েছে। তাঁদের মধ্যেই তালিকার ভিত্তিতে নাম যাচ্ছে যুবশ্রী প্রকল্পে। কিন্তু এক লক্ষ জনকে মাসিক দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। সেই সুবিধাপ্রাপকদের থেকেই চাকরি পাওয়ায় বাদ গেলেন ৭০ হাজার জন। তালিকা মেনে ভাতা দিতে যুক্ত করা হল আরও ৭০ হাজার জনকে।
চাকরি দেওয়ার তথ্যে যথেষ্ট খুশি শ্রম দপ্তরের আধিকারিকরা। কারণ, যাঁরা চাকরি পেয়ে গিয়েছেন, তাঁরা ছাড়াও তালিকায় রয়েছেন অনেক বেশি মানুষ। এক আধিকারিকের কথায়, “ওই ৭০ হাজার আমাদের ওয়াকিবহাল করেছেন যুবশ্রী প্রকল্পের সুবিধা থেকে নাম সরিয়ে নিতে। যুবশ্রী প্রকল্পের সুবিধা হিসাবে মাসে মাসে দেড় হাজার টাকা করে পেয়েছেন ওঁরা। এই প্রকল্পে আইএফএমএস-এর মাধ্যমে টাকা দেওয়ায় চাকরি পেলে এঁরা নিজেদেরকে সরিয়ে নিয়েছেন। যুবশ্রীর অপেক্ষমান তালিকার থেকে আরও বেশি মানুষ চাকরি পেয়েছেন।”
[আরও পড়ুন: সুন্দরীদের সঙ্গে উষ্ণ বন্ধুত্বের হাতছানি দিয়ে আর্থিক প্রতারণা, ধৃত ১৬ জন মহিলা]
২০১২ সালের ২৬ জুলাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকের সূচনা করেন। যুবশ্রী প্রকল্প চালু হয় ২০১৩ সালের ১৩ অক্টোবর। অর্থাৎ সেই সময় থেকেই সরাসরি যুক্ত হতে শুরু করেন বেকার যুবক-যুবতীরা। শিক্ষাগত মানের নিরিখে বিভিন্নভাবে ভাগ করা হয়ে থাকে এঁদের। অষ্টম শ্রেণি উত্তীর্ণ হলেই নাম লেখানো যায়। কারণ, চাকরি বা কর্মসংস্থানের বিভিন্নতা রয়েছে। বয়স হতে হবে ১৮ থেকে ৪৫ বছরের মধ্যে। তফসিলি জাতি বা উপজাতির ক্ষেত্রেও বিভাগ অনুযায়ী আলাদা আলাদা চাকরির সুবিধা পেতে পারেন নথিভুক্তকারীরা। মোবাইল নম্বর দিয়ে এঁদের নাম নথিভুক্ত করতে হয়। নিজস্ব রেজিস্ট্রেশন নম্বর পান। এরপর রাজ্যের যে কোনও এমপ্লয়মেন্ট এক্সচেঞ্জে গিয়ে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র জমা দিতে হয়। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকেই নিয়োগকারী সংস্থারও অন্তর্ভুক্তিকরণের সুযোগ রয়েছে। সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা মিলিয়ে প্রায় ৭০০ সংস্থা চাকরি দিতে নাম নথিভুক্ত করেছে। সেক্ষেত্রে সংস্থার প্যান কার্ড দরকার হয়। এছাড়া প্রয়োজনীয় ওই সংস্থার প্রোফাইল অর্থাৎ ট্রেড লাইসেন্স ও অন্য প্রয়োজনীয় তথ্য। এর ফলে ভুয়ো সংস্থা নাম লেখাতে পারে না। শ্রম দপ্তরের পক্ষ থেকে সবটা খতিয়ে দেখা হয়। ওই সংস্থা সরাসরি কোনও বিজ্ঞাপন দিতে পারে বা এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক থেকে যোগ্য ব্যক্তিকে পছন্দ করে নিতে পারে। দুটো পদ্ধতিতেই নিয়োগ হতে পারে।
যুবশ্রী প্রকল্পে আপাতত এক লক্ষ জনকে মাসে দেড় হাজার টাকা করে ভাতা দেওয়া হচ্ছে। বছরে রাজ্যের খরচ প্রায় ১৮০ কোটি টাকা। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংক থেকে সরাসরি তালিকা অনুযায়ী অর্থাৎ যাঁরা আগে নাম লিখিয়েছেন তাঁদের থেকে খালি জায়গায় নাম অন্তর্ভুক্ত করা হয় যুবশ্রীর জন্য। এমপ্লয়মেন্ট ব্যাংকে নাম লেখানোর জন্য আধার বা রেশন কার্ড থাকলেই হবে। তবে দিতে হয় বয়স ও যোগ্যতার প্রমাণপত্রও।
The post রাজ্যের ‘যুবশ্রী’ প্রকল্পের সাফল্য, ছ’বছরে চাকরি পেলেন ৭০ হাজার কর্মহীন appeared first on Sangbad Pratidin.