সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: পদ পাওয়ার আগে জনগণের সেবার গাল ভরা প্রতিশ্রুতি দিয়ে থাকেন নেতা-মন্ত্রীরা। কিন্তু কুরসিতে বসলেই আর টিকিটিও খুঁজে পাওয়া যায় না। ভূ-ভারতে এমন উদাহরণের ছড়াছড়ি। কিন্তু যে দৃষ্টান্ত বিরল, এবার সেই ছবিই সামনে এল। আক্ষরিক অর্থেই করোনা কালে ময়দানে নেমে কাজ করলেন তিনি। হাসপাতালের মেঝে মুছে পরিষ্কার করতে দেখা গেল মিজোরামের (Minister of Mizoram) বিদ্যুৎ মন্ত্রী আর লালজিরলিয়াকে।
তিনি নিজে কোভিড পজিটিভ। একই হাসপাতালে চিকিৎসা চলছে স্ত্রী ও ছেলেরও। শুক্রবার সেই হাসপাতালেরই মেছে পরিষ্কার করতে দেখা গেল তাঁকে। তবে না, হাসপাতাল কর্মীদের লজ্জা দিতে কিংবা কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তুলতে এমনটা করেননি তিনি। বরং এর মধ্যে দিয়ে অন্যদের সামনে দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চেয়েছেন। বোঝাতে চেয়েছেন, সংকটের মুহূর্তে নিজে কী, তা ভলে যে কোনও প্রয়োজনে এগিয়ে আসতে হবে। মন্ত্রীমশাই আরও জানান, এই প্রথমবার নয়। এর আগে বাড়িতে এবং অন্যান্য জায়গাতেও ঘর ঝাঁট দেওয়া, মোছা করেছেন তিনি।
ভিআইপি সংস্কৃতিকে বিদায় জানিয়ে আর পাঁচজন সাধারণের মতোই জীবন যাপন করে থাকেন মিজোরামের একাধিক নেতা-মন্ত্রী। বাড়ির মহিলাদের গেরস্থালির কাজে সাহায্য থেকে গণপরিবহণ কিংবা মোটরবাইরে যাতায়াত, সবই করতে দেখা যায় তাঁদের। পাড়ার চড়ুইভাতি কিংবা কোনও উৎসবে কোনও কোনও মন্ত্রীকে আবার পাকা রাধুঁনি হিসেবেও দেখা গিয়েছে। তাই তাঁদের কাছে হাসপাতালের মেঝে পরিষ্কার করা এমন কোনও বড় বিষয় নয়।
[আরও পড়ুন: নিষেধাজ্ঞা ভেঙে রাস্তায় বেরলেই আইনি ব্যবস্থা, কলকাতার ৩০ এলাকায় নাকা চেকিং]
বিদ্যুৎ মন্ত্রী বলেন, “আমি মেঝে পরিষ্কার করে নার্স কিংবা চিকিৎসকদের লজ্জায় ফেলতে চাইনি। বরং অন্যদের কাছে উদাহরণ তৈরি করতে চেয়েছে যে প্রয়োজনে এভাবেই এগিয়ে এসে কাজ করতে হবে। ঝাড়ুদারকে ডেকেছিলাম। কিন্তু সে তখন আসতে পারেনি। তাই ভাবলাম কাজ ফেলে না রেখে নিজেই করে ফেলি। আর এটা আমার কাছে নতুন কিছু নয়। বাড়িতে অনেকবারই করেছি। মন্ত্রী বলে যে এসমস্ত কাজ করা যাবে, এমনটা ভাবার কোনও মানে হয় না।”
গত ১১ মে থেকে চিকিৎসা চলছে কোভিড পজিটিভ (COVID Positive) মন্ত্রী এবং তাঁর স্ত্রীর। তার আগে ৮ মে আক্রান্ত হন তাঁর ছেলেও। প্রথমে বাড়িতেই হোম আইসোলেশনে ছিলেন। তবে শরীরে অক্সিজেনের মাত্রা কমে যাওয়ায় পরে তাঁদের হাসপাতালে ভরতি করা হয়। এই শরীরেই মন্ত্রীর এহেন রূপকে কুর্নিশ জানাচ্ছে নেটদুনিয়া।