স্টাফ রিপোর্টার: রুট থেকে শুধু চাঁদা তোলাই ইউনিয়নের কাজ নয়৷ যাত্রীরা যাতে ভালভাবে গন্তব্যে পৌঁছতে পারে তা দেখাও তাঁদের কাজ৷ রবিবার গড়িয়াহাটে অটোচালকদের নিয়ে আয়োজিত আইএনটিটিইউসি-র এক প্রশিক্ষণশালায় চালক এবং রুটের নেতাদের সতর্ক করলেন রাজ্যের মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়৷
এদিন তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের তরফে অটোচালকদের উদ্দেশে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়৷ মন্ত্রী জানান অটোচালকদের এই ১১ দফা নির্দেশিকা মেনে চলতে হবে৷ এই নির্দেশিকা যেমন রয়েছে মদ না খেয়ে অটোচালানোর নিয়ম, তেমনই গাড়িতে সাউন্ড বক্স বা এলইডি লাগানোর উপরেও নিষেধাজ্ঞা৷
তবে শুধু অটোচালকদের সতর্ক করাই নয়, মন্ত্রী অবশ্য যাত্রীদেরও অটোচালকদের সঙ্গে সহযোগিতা করার আহ্বান জানান৷ যাত্রী এবং চালক একে অপরের পরিপূরক অতএব সবাই একসঙ্গে সমন্বয় করে কাজ করলেই ভাল পরিষেবা পাওয়া যাবে বলে দাবি করেন মন্ত্রী৷ যাত্রীদের প্রতি বার্তায় অটোচালকদের মধ্যেও প্রতিক্রিয়া ছিল৷ চালকরা জানান, মন্ত্রী ঠিক কথাই বলেছেন৷ বাস, ট্রাক-সহ সব গাড়িই তো দুর্ঘটনা ঘটে৷ কিন্তু অটোর দুর্ঘটনা হলেই শুধু চালকদের দোষ পড়ে৷ তা কখনই উচিৎ নয়৷
আইএনটিটিইউসি-র পক্ষ থেকে এদিন অটোচালকদের উদ্দেশে ১১ দফা নির্দেশিকা জারি করা হয়৷ প্রত্যেক অটোচালককে সেই নির্দেশিকা মানতে হবে বলে সংগঠনের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ নির্দেশিকার লিফলেট প্রতি অটোয় লাগানো থাকবে৷ তাতে বলা হয়েছে গাড়ির সমস্ত কাগজ ‘আপ টু ডেট’ রাখতে হবে৷ গাড়ি চালকদের বৈধ লাইসেন্স রাখতে হবে৷ স্ট্যান্ড থেকে স্ট্যান্ড ভাড়া খাটাতে হবে৷ কোনওরকম কাটারুট বা ব্রেক ট্রিপ করা চলবে না৷ স্টপ লাইন মেনে গাড়ি চালাতে হবে৷ যাত্রীদের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করতে হবে৷ কোনওরকম নেশা করে গাড়ি চালানো যাবে না৷ চারজনের বেশি যাত্রী গাড়িতে তোলা যাবে না৷ চার বছরের ঊর্ধ্বের বাচ্চা সিটে বসিয়ে নিতে হবে৷ প্রশাসনের সঙ্গে সহযোগিতা করে অটো চালাতে হবে৷
এদিন শহরের প্রায় ৮০টি রুটের চালকরা এই প্রশিক্ষণশালায় উপস্থিত ছিলেন৷ সেখানে দক্ষিণ কলকাতা অটোরিকশা ড্রাইভার্স ও অপারেটর্স ইউনিয়নের সভাপতি মেঘনাথ পোদ্দারও জানিয়েছেন বেশ কয়েকটি রুটের উপর তাদের নিয়ন্ত্রণ নেই ফলে নানা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটে তা একেবারেই কাম্য নয়৷ এইগুলি বন্ধ করতে তৎপর হতে হবে প্রশাসনকে৷ অবশ্য অনুষ্ঠানে উপস্থিত অটোচালকরা অনেকক্ষেত্রেই ইউনিয়নের বিরুদ্ধে দায়সারা মনোভাবের অভিযোগ তুলেছেন৷ অনেকেই জানান, তাঁদের রুটের একাধিক সমস্যা রয়েছে৷ কিন্তু ইউনিয়নের নেতাদের বলে কোনও লাভ হয় না৷ এবিষয়গুলি অবশ্য মন্ত্রী ইউনিয়নের নেতাদের দেখার নির্দেশ দেন৷
তবে একদিকে অটো নিয়ে সরকারি নির্দেশিকা৷ পাশাপাশি আবার ইউনিয়নের সমান্তরাল নির্দেশিকা ঘিরে চাপানউতোর তৈরি হয়েছে৷ বিরোধী শ্রমিক সংগঠনের তরফে অভিযোগ করা হচ্ছে, আইএনটিটিইউসি যদি নিজেদের মতো করে নির্দেশিকা বানায় তবে সরকারি নির্দেশিকার দরকার কী! তবে সাধারণ মানুষ এসব বিতর্ক শুনতে নারাজ৷ তাঁদের দাবি, সুষ্ঠু পরিষেবা৷ তা পেলেই খুশি আম-আদমি৷
The post অটো দৌরাত্ম্য রুখতে চালকদের বার্তা সুব্রত’র appeared first on Sangbad Pratidin.