সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: জাতপাতের ভিত্তিতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ভরতি হওয়ার সুযোগ পাওয়া উচিৎ কিনা, সেই নিয়ে সোমবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে শুনানি শুরু হবে। কিন্তু সেদেশে কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যালঘুরা ইতিমধ্যেই দাবি করেছেন, তাঁদের জাতির পরিচয়কে মান্যতা দিয়েই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রবেশ করার অনুমতি দেওয়া হোক। প্রসঙ্গত, হার্ভার্ড (Harvard University) ও নর্থ ক্যারোলাইনা বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতিকে বৈষম্যমূলক আখ্যা দিয়ে মামলা দায়ের করা হয়েছে মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে (US Supreme Court)।
আবেদনকারীদের তরফে বলা হয়েছে, শুধুমাত্র জাতি পরিচয়ের ভিত্তিতে কাউকে সুযোগ দেওয়ার অর্থ পড়ুয়াদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ করা। কাজেই এহেন নিয়ম প্রত্যাহার করে নেওয়া উচিত। কিন্তু এই মতের বিরোধিতা করে তথাকথিত পিছিয়ে পড়া জাতির পড়ুয়াদের দাবি, বিখ্যাত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করার সমান অধিকার রয়েছে তাদেরও। তাই জাতের ভিত্তিতে যদি বিশ্ববিদ্যালয়ে সুযোগ দেওয়াও হয়, সেই পদক্ষেপকে ইতিবাচক হিসাবে ধরে নেওয়া উচিৎ। সোমবার মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে এই মামলা নিয়ে শুনানি শুরু হবে।
[আরও পড়ুন: ব্রাজিলে ধাক্কা বোলসোনারোর, প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত বামপন্থী লুলা ডা সিলভা]
আমেরিকার বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানেই পড়ুয়াদের জন্য জাতি সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। পড়ুয়াদের মধ্যে যেন বৈচিত্র্য থাকে, মূলত সেই কারণেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। কৃষ্ণাঙ্গ পড়ুয়ারা যেন আরও বেশি করে মার্কিন শিক্ষার মূলস্রোতে মিশতে পারে, সেই জন্য নানা ধরনের প্রকল্পও নেওয়া হয়েছিল হার্ভার্ড-সহ বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার অধিকাংশ পড়ুয়াদের মতে, জাতিগত সংরক্ষণ আসলে সমাজের পক্ষে ইতিবাচক। তাই সংরক্ষণের ব্যবস্থা প্রত্যাহার করে দেওয়া একেবারেই উচিৎ নয়।
কিন্তু মার্কিন পড়ুয়াদের একাংশ মনে করছে, আলাদা করে কৃষ্ণাঙ্গদের বেশি সুযোগ সুবিধা দেওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে অন্যরা। হয়তো একই রকমের ফলাফল করেও শুধুমাত্র জাতিগত সংরক্ষণের কারণে পিছিয়ে পড়ছে কেউ। তবে এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলেই মনে করছেন মার্কিন সংখ্যালঘু পড়ুয়াদের অনেকেই। তাঁদের মতে, সমাজের পিছিয়ে পড়া অংশের মানুষকে যদি শিক্ষাক্ষেত্রে সুযোগ দেওয়া হয়, তাহলে লাভবান হবে গোটা সমাজই। হার্ভার্ড থেকে পাস করা চিনা বংশোদ্ভূত অধ্যাপিকা মার্গারেট চিন বলেছেন, “আমার বাবা-মা খুবই গরিব ছিলেন। কিন্তু আমি যখন হার্ভার্ডে পড়াশোনা করার সুযোগ পেলাম, তখন পড়াশোনার বাইরেও জীবনের অনেক শিক্ষা লাভ করেছি। সাধারণত স্কুলজীবনে সেভাবে বৈচিত্র্যময় পরিবেশের মধ্যে থাকে না পড়ুয়ারা। তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে যদি সম্পূর্ণ আলাদা রকমের সহপাঠীদের পাওয়া যায়, তাদের সঙ্গে মিলেমিশে পড়াশোনা করা যায়, তাহলে আখেরে লাভবান হয় গোটা সমাজই।”