আকাশ মিশ্র: কথায় আছে সবুরে মেওয়া ফলে। 'মির্জাপুর ৩'-এর ক্ষেত্রে সবুরে যেন আরও অ্য়াকশন, আরও হিংসা, আরও টুইস্ট এবং আরও বেশি রাজনীতি! 'মির্জাপুর' কার দখলে থাকবে? ক্ষমতার সিংহাসনে বসবে কে? কালিন ভাইয়া নাকি গুড্ডু? নাকি এই দুজনকে গুঁটি বানিয়ে নেপথ্যে চলবে অন্য কারও প্রতিহিংসার লড়াই। ঠিক ৪ বছর আগে যেখানে শেষ হয়েছিল 'মির্জাপুর ২', ঠিক সেখান থেকেই 'মির্জাপুর ৩' (Mirzapur 3) -এর শুরু। তবে চার বছর কেটে গেলেও, মির্জাপুরের ঘড়ির কাঁটা যেন আটকে গুড্ডু ও কালিন ভাইয়ার প্রতিশোধেই। আর তাই তো নতুন সিজনের শুরুতেই পুরনো ক্ষত চিহ্ন মুন্না ভাইয়ের মৃতদেহ। আর অন্যদিকে অচৈতন্য কালিন ভাইয়া। আর সব চরিত্রগুলো কিন্তু একই জায়গায় থেমে। একই জায়গায় তাঁদের প্রতিশোধের স্পৃহা। তবে গুড্ডু ভাইয়া ওরফে আলি ফয়জল আরও একটু বেশি শক্তিশালী।
'মির্জাপুর'-এর দুটো সিজনের পর নতুন সিজনে অবশ্যই ক্ষমতা দখলের গল্প এগিয়েছে আরও অনেকটাই। যেহেতু কালিন ভাইয়া গুরুতর আহত, সেহেতু গুড্ডু ধরেই নিয়েছিল মির্জাপুরের দখল তাঁর হাতেই থাকবে। কিন্তু মির্জাপুর ৩-এ কালিন ভাইয়ার এন্ট্রি একেবারেই আহত বাঘের মতো। গর্জন আরও বেশি। তবে এই সিজনের সারপ্রাইজ গোলু ওরফে শ্বেতা ত্রিপাঠী।
[আরও পড়ুন: ‘টিম ইন্ডিয়ার জন্য গর্বে বুক ফুলে যাচ্ছে’, জয় শাহকে শুভেচ্ছা আবেগপ্রবণ শাহরুখের]
আগের দুটো সিজন যাঁরা দেখেছেন, তাঁরা অনায়াসে পার্থক্য করতে পারবেন, যে এই নতুন সিজন আগের দুটোর তুলনায় অনেক বেশি রক্তমাখা। গুলিবর্ষণে আরও বেশি যেন ভায়োলেন্ট। তাই আগের দুই সিজনে যেমন গল্প একটা টুইস্টের ছকে বাঁধা পড়েছিল, এবার সে জায়গায় গুরুত্ব পেয়েছে হিংসা। তাই অনেক সময়ই ১০ এপিসোড একটু যেন লম্বা লাগে।
প্রাথমিকভাবে গুড্ডু ও গোলুর প্রতিশোধ নেওয়া শেষ হলেও। তাঁদের এখন লড়াই মির্জাপুরের সিংহাসনের দখলের জন্য। ক্ষমতাশালীদের একটি বৈঠক করতেও দেখা গিয়েছে। গুড্ডু ভাইয়াও সেই বৈঠকের একটি অংশও বলা চলে। বৈঠকের বিষয় 'মির্জাপুর'-এর সিংহাসনে কে বসবে? গুড্ডু ভাইয়া নিজেই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন যে তিনি এখন মির্জাপুর শাসন করবেন এবং কালিন ভাইয়ার চেয়ারও দখল করবেন। তবে এখানেই রয়েছে টুইস্ট। কী সেই টুইস্ট? সেটাই এই সিরিজের আসল মারপ্যাঁচ।
অভিনয়ের দিক থেকে পঙ্কজ ত্রিপাঠী, আলি ফজল,বিজয় বর্মা,রসিকা দুগ্গাল,শ্বেতা ত্রিপাঠী, সবাই অসাধারণ। তবে নতুন সিজনে স্ক্রিন স্পেশ বেশি পাওয়ায়, তার সঠিক ব্যবহার করেছেন আলি ফয়জল। তবে অল্পতেই সেরা কালিন ভাইয়া পঙ্কজ ত্রিপাঠী। স্ক্রিনে আসার পর, তাঁকে ছাড়া আরও কারও দিকে চোখ যাবে না।
শেষমেশ বলতে হয়, 'মির্জাপুর ৩' অ্য়াকশনের দিক থেকে তো অনেকটাই এগিয়ে গিয়েছে, তবে গল্প যেন সেই আগের দুটো সিজনেই আটকে রয়েছে। কেমন জানি, পুরনো গল্পকেই নতুন মোড়কে এনেছে 'মির্জাপুর ৩'। তাই একটা সময়ের পর নতুন কিছু খুঁজতে থাকবে চোখ। তবে শেষ এপিসোডের, শেষ দশ মিনিটের চমকটা অসাধারণ। কারণ, পরবর্তী সিজনেই উসকানি রয়েছে এখানেই।