সঞ্জিত ঘোষ, নদিয়া: যত কাণ্ড চুলে। ঘন, বড়, লম্বা, সুন্দর চুল। তাই দেখেই লোভে চোখ চকচক করে উঠেছিল একদল দুষ্কৃতীর। সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ফন্দি আঁটে, যেভাবেই হোক ওই কেশরাশি হস্তগত করতেই হবে। চুল হাতাতে যুবতীকে অপহরণ করে মাদকজাতীয় ওষুধ প্রয়োগে বেহুঁশ করার পর মাথা নেড়া করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। কিন্তু পুলিশের প্রাথমিক তদন্ত উঠে এসেছে অন্য এক তথ্য। গোটা ঘটনাই নাকি সাজানো।
বৃহস্পতিবার নদিয়ার শান্তিপুরে চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটে। জানা গিয়েছে, শান্তিপুর থানা এলাকার বাসিন্দা বছর তিরিশের ওই যুবতী কাজের জন্য বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। কিছুদূর এগোতেই একটি টোটো তাঁর পথ আটকে দাঁড়ায়। টোটো থেকে জনাচারেক যুবক তাঁর হাত ধরে টোটোতে তুলে নেয়। নিমেষের মধ্যে তাঁর মুখ চেপে ধরে হাতে ওষুধজাতীয় চেতনানাশক দ্রব্য লাগিয়ে দেয়। তিনি অচৈতন্য হয়ে যান।
[আরও পড়ুন: চোখের সামনে মাকে খুন, ছেলের সাক্ষ্যে যাবজ্জীবন সাজা বাবার]
এর পর জ্ঞান ফিরলে যুবতী দেখেন, একটি জঙ্গলের মধ্যে পড়ে রয়েছেন। মাথা নেড়া। সেখানে আরও বেশ কয়েকজন মহিলা ছিলেন। প্রত্যেকের মাথা ন্যাড়া ছিল। তাঁর দাবি, অভিযুক্তদের মধ্যেই এক যুবক নাকি তাঁকে মোটরবাইকে করে রাস্তায় ছেড়ে দিয়ে গিয়েছিল। পাশাপাশি একথা প্রশাসনের কাউকে জানালে তাঁকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। বাড়ি ফিরে এসে আতঙ্কে অসুস্থ হয়ে পড়েন যুবতী। তড়িঘড়ি তাঁকে শান্তিপুর স্টেট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। শান্তিপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। হাসপাতালে ওই অসুস্থ যুবতীকে দেখতে যান রানাঘাট লোকসভার বিজেপি প্রার্থী জগন্নাথ সরকার। এর পিছনে কোনও বড় অসাধু চক্র কাজ করছে বলে দাবি স্থানীয়দের। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্তে নামে পুলিশ। গ্রেপ্তার করা হয় এক নাপিতকে।
কিন্তু পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে অন্য এক তথ্য়। গোটা ঘটনাটাই মিথ্যা। জেরায় ওই নাপিত পুলিশকে জানিয়েছেন, অভিযোগকারী যুবতী নিজেই সেলুনে গিয়েছিলেন। নিজের ইচ্ছেতেই চুল কাটিয়েছিলেন। ওই নাপিতের পুরোও বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনার আসল সত্য খুঁজে বের করতে পরবর্তী তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।