নির্মল ধর: নাহ, এই কোভিড ১৯ (COVID 19) বা প্যানডেমিকের অস্বস্তিকর আবহাওয়াতেও কলকাতার নামী প্রযোজনা সংস্থার ছবি তৈরির ভাবনায় তেমন কোনও লক্ষণীয় পরিবর্তন দেখা যাচ্ছে না। বিশেষ করে প্রবীণ এবং সফল পরিচালকদের মধ্যে। এখনও তাঁরা অন্য ভাষার ছবি থেকে ‘অনুপ্রাণিত’ হতেই ব্যস্ত এবং দড়। তাঁরা যেন ‘পিতিজ্ঞে’ করেই বসেছেন বাঙালি দর্শককে অবাঙালি খাদ্য পরিবেশন করেই যাবেন। যেমনটি হচ্ছে এই ভোটের খেলায়। বাঙালির সাংস্কৃতিক চিন্তা এতটুকু জানার চেষ্টা না করেও একটা দল অবাঙালি সংস্কৃতির পোশাক চড়াতে চাইছেন সমগ্র বাঙালির চেহারায়, চরিত্রে। আরে বাবা, সেটা কি কখনও সম্ভব? বাঙালির পারিবারিক বন্ধন, বাবা-মা, ছেলে-মেয়ে যতই কম্পিউটার আর স্মার্টফোনে অনুরক্ত হোক না কেন, কোথায় যেন আটকে আছে চিরন্তন এক সংস্কারে, সেখানে পারস্পরিক অনুভূতি, সমবেদনাগুলো অনেক বেশি কার্যকরী।
পরিচালক রবি কিনাগী (Ravi Kinagi) অতীতে দাক্ষিণাত্য ও ওড়িয়া ছবির ‘কপি অ্যান্ড পেস্ট’ করে সফল, কিন্তু এখন আর সেই ফর্মুলা চলবে না। এই সারসত্যটা বুঝতেই চাইছেন না এবং তাঁদের মদত দেবার জন্য সুরিন্দর ফিল্মস (Surinder Films) আগুয়ান। যার নিট ফল এই নতুন ‘মিস কল’ (Miss Call) নামের এক বিরক্তিকর গল্প, ধর মুণ্ডুহীন চিত্রনাট্য, অযাচিত গান, ভয়ংকর অশ্লীলভাবে অভিনয় করা সব শিল্পী। ফোন করতে গিয়ে রং নম্বর এবং মিসড কল হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আর আজকের স্মার্টফোনের পাল্লায় পড়ে স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীরা ফেক ফেসবুক অ্যাকাউন্ট খুলে কতইনা কীর্তি করেই চলেছে। “মারব এখানে লাশ পড়বে শ্মশানে” ধরনের সংলাপ লেখা এন কে সলিল যখন ‘মিস কল’ ছবি চিত্রনাট্যকার, তখন ঘটনার অঘটন ঘটা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু তিনি যে কোন জাদুবলে উলুবেড়িয়া, বাগনানের শ্যামপুর থানা আর কলকাতাকে এক লাইনে নিয়ে এলেন বোঝা গেল না। যেমন নির্বোধ থেকে গেলাম এটা দেখে যে একজন সামান্য ড্রাইভার একদিকে বাড়িতে মাতাল বাবার কারণসুধার অর্থ জোগাচ্ছে, আবার ফোনে ‘মিস কল’ দেওয়া বান্ধবী লীলার ফোনে ‘টপআপ’ও ভরিয়ে দিচ্ছে। সেই ড্রাইভারকেই আবার গ্যারেজ মালিককে সময়মতো টাকা দিতে না পারার জন্য কথা শুনতে হয়। অবশ্য সঠিক সময়ে ফাইট মাস্টার জুডো রামু এসে নায়কের ওপর ভর করে পাঁচ-ছ’জন ষণ্ডামার্কা গুণ্ডাকে নিকেশ করতে দেরি করেনি। কিন্তু চিত্রনাট্যকার দেরি করে ফেলেছেন ‘মিস কল’ বান্ধবীর সঙ্গে কৃষ্ণের বিয়ে দিয়ে। বিয়েটা দিলেন আবার শ্যামপুর থানার দারোগাবাবু। কেন? না, তা জানার জন্য ‘বইটা’ একবার দেখতেই হবে।
[আরও পড়ুন: কঙ্গনার বিরুদ্ধে বয়ান দিয়ে প্রায় ৪ ঘণ্টা পর ক্রাইম ব্রাঞ্চের অফিস ছাড়লেন হৃতিক]
অভিনয়ে নিয়ে আগেই বলেছি। সকলেই 880 ভোল্টেজে চার্জড। সুপ্রিয় দত্ত মশাই হাজার ভোল্টেজের নিচে নামেননি। নায়ক সোহম (Soham Chakraborty) 880 ভোল্টেজের কাছাকাছি। একমাত্র ব্যতিক্রম নায়িকা ঋত্বিকা (Rittika Sen)। বেশি সুযোগ তিনি পাননি। তাতেই যেটুকু রক্ষে! স্যভির গান কেন ছবিতে ব্যবহার করা হল? জানি না। রাজানারায়ণ দেব কিঞ্চিৎ মুখরক্ষা করেছেন।