দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: করোনা (CoronaVirus) প্রাণ কাড়ল আরও এক বর্ষীয়ান রাজনীতিবিদের। মারণ ভাইরাসের বলি হলেন বারুইপুর পূর্বের বিধায়ক নির্মল মণ্ডল। জনদরদী নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া এলাকায়। পরিবারের অভিযোগ, কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যু হয়েছে তাঁর।
জানা গিয়েছে, বেশ কিছুদিন ধরেই জ্বরে ভুগছিলেন তিনি। বর্তমান পরিস্থিতিতে ঝুঁকি না নিয়ে তাঁর করোনা পরীক্ষা করানো হয়। রিপোর্ট আসে পজিটিভ। অবস্থার অবনতি হতে থাকায় বৃহস্পতিবার সকালে নির্মল মণ্ডলকে হাসপাতালে ভরতি করানোর সিদ্ধান্ত নেয় পরিবার। অভিযোগ, গোটা দিনে বিদায়ী বিধায়কের জন্য একটি বেডের ব্যবস্থা করা সম্ভব হয়নি। অবশেষে রাতে তৃণমূলের সেবাদলের তরফে বাঙুর হাসপাতালে তাঁকে ভরতির ব্যবস্থা করা হয়। রাতেই শুরু হয় চিকিৎসা। কিন্তু লাভ হয়নি। শুক্রবার দুপুরে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন বিদায়ী বিধায়ক। জনদরদী হিসেবেই এলাকায় পরিচিত ছিলেন নির্মল মণ্ডল। স্থানীয়দের যে কোনও বিপদে ছুটে যেতেন। বিলাসবহুল জীবনযাপন তো দূর-অস্ত, কার্যত মাঠে নেমে ধানও কাটতেন তিনি, এমন নেতার মৃত্যুতে স্বাভাবিকভাবেই এলাকাবাসীর চোখে জল।
[আরও পড়ুন: অমানবিক! ওষুধ কিনতে যাওয়ার নাম করে করোনা আক্রান্ত ঠাকুমাকে ফেলে পালাল নাতি]
উল্লেখ্য, তিন বারের বিধায়ক ছিলেন নির্মলবাবু। ২০১৬ সালে তৃণমূলের টিকিটে বারইপুর পূর্ব আসন থেকে লড়েন। জয়ীও হন। তবে ২০২১ -এ বয়সজনিত কারণে তাঁকে টিকিট দেয়নি দল। ফলে দলের প্রতি ক্ষোভও তৈরি হয়েছিল। মৃতের পরিবারের অভিযোগ, অসুস্থতার বিষয়টি জানতে পেরে তৃণমূলের সেবাদলের তরফে সহযোগিতার চেষ্টা করা হলেও দলের কোনও নেতা তাঁর খোঁজ নেননি। সাহায্যও করেননি। দীর্ঘদিন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাশে থেকে লড়াই করার পর দলের এই আচরণে ক্ষুব্ধ মণ্ডল পরিবার। এই ঘটনায় প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, যদি বেডের অভাবে কার্যত বিনা চিকিৎসায় মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয় বিধায়ককে, তবে আমজনতার অবস্থান ঠিক কী? এই ঘটনা স্বাভাবিকভাবেই বাড়িয়েছে আতঙ্ক।