দেবব্রত মণ্ডল, বারুইপুর: বিজেপিতে (BJP) যোগদান নিয়ে বেশ খানিকটা লুকোচুরি খেলেছিলেন সোমবার পর্যন্তও। আর মঙ্গলবার সকালেই দিনের আলোর মতো সব স্পষ্ট করে দিলেন ডায়মন্ড হারবারের (Diamond Harbour) তৃণমূলত্যাগী বিধায়ক দীপক হালদার। দুপুরে বারুইপুরের জনসভায় আনুষ্ঠানিকভাবে তিনি হাতে তুলে নিলেন গেরুয়া পতাকা। তাঁর সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিলেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার আরও প্রায় ১৬ জন তৃণমূল নেতা। আর তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই যোগদানের মাধ্যমে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কেন্দ্র ডায়মন্ড হারবারে তৃণমূলের সংগঠনে বড় ধস নামল, যা বিধানসভা ভোটের আগে নিঃসন্দেহে ধাক্কা ঘাসফুল শিবিরের কাছে।
বেশ কয়েকদিন ধরেই ডায়মন্ড হারবারের বিধায়ক দীপক হালদারকে নিয়ে গুঞ্জন চলছিল। চলতি বছরের প্রথমে তিনি কলকাতার প্রাক্তন মেয়র তথা বর্তমান বিজেপির কলকাতা সংগঠনের পর্যবেক্ষক শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার পর তা উসকে উঠেছিল। যদিও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের একদা ঘনিষ্ঠ এই সৈনিক নিজের রাজনৈতিক শিবির বদল নিয়ে মুখে কার্যত কুলুপ এঁটেছিলেন । তা সত্ত্বেও তাঁর গতিপ্রকৃতি বুঝতে বিশেষ বেগ পেতে হয়নি রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ মহলের। ১ ফেব্রুয়ারি তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে তৃণমূল (TMC) ছাড়ার কথা জানিয়ে দেন। স্পিডপোস্টে নিজের ইস্তফা পাঠান দলের রাজ্য সভাপতি সুব্রত বক্সির কাছে। আর পুরনো পরিচয় থেকে বেরিয়ে এসে ২ তারিখই নিজের রাজনৈতিক কেরিয়ারে পা রাখলেন দীপক হালদার।
[আরও পড়ুন: কয়লা কাণ্ডের কিনারায় আরও তৎপর CBI, বিশেষজ্ঞদের নিয়ে শুরু খনি সমীক্ষা]
মঙ্গলবার বারুইপুরে বিজেপির যোগদান মেলায় মুকুল রায়, শুভেন্দু অধিকারী, রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়দের উপস্থিতিতে বিজেপির পতাকা হাতে তুলে নিলেন দীপক হালদার। তাঁকে দলে স্বাগত জানান শুভেন্দু অধিকারী। এদিন ডায়মন্ড হারবারের বিধায়কের সঙ্গে বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন আরও কয়েকজন। রয়েছেন রাজপুর-সোনারপুর পুরসভার প্রাক্তন উপপুরপ্রধান অমিতাভ বসু চৌধুরী।
[আরও পড়ুন: ঠিক যেন ‘ঘরের মেয়ে’! ফালাকাটায় গণবিবাহের আসরে আদিবাসী নাচে পা মেলালেন মমতা]
এদিকে, মঙ্গলবার বারুইপুরের জনসভায় যোগ দিতে যাওয়ার আগে পদ্মপুকুরের কাছে শুভেন্দু অধিকারীর গাড়ি ঘিরে বিক্ষোভ দেখান কয়েকজন। শুভেন্দুর সঙ্গে একই গাড়িতে ছিলেন রাজীবও। তাঁদের কালো পতাকা দেখানো হয় বলে অভিযোগ। এ নিয়ে সাময়িকভাবে উত্তপ্ত পরিস্থিতি তৈরি হলেও, তা নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ”আমাদের কালো পতাকা দেখিয়ে স্বাগত জানানো হচ্ছে! বিজেপিকে ভয় পাচ্ছে তৃণমূল, তাই বাধা দেওয়ার চেষ্টা চলছে। যত কালো পতাকা দেখাবে, তত আমাদের উপর আশীর্বাদ নেমে আসবে।”