সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: অবশেষে ৯ দলের ক্লাব জোটের কাছে মাথা নত করতে বাধ্য হল ফুটবল ফেডারেশন। বৃহস্পতিবার ফেডারেশনের পক্ষ থেকে জানিয়ে দেওয়া হল, নয় দলের জোটের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান প্রফুল্ল প্যাটেল। ফেডারেশন সভাপতি জানিয়ে দিয়েছেন, ১০-১৫ এপ্রিলের মধ্য়ে যে কোনও একটা দিন তিনি আই লিগ খেলা ক্লাব জোটের কর্তাদের সঙ্গে কথা বলবেন। বিশ্বস্ত সূত্রের খবর, সম্ভবত ১৪ এপ্রিল প্রফুল্ল প্যাটেল বসতে চলেছেন আই লিগ খেলা দলগুলির সঙ্গে। এই ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে সুপার কাপ নিয়ে অনিশ্চয়তার মেঘ সরে গেল। অর্থাৎ ভুবনেশ্বরে নির্ধারিত সময়েই সুপার কাপের মূল পর্বের খেলা শুরু হবে।
গত কয়েকদিন ধরে আই লিগে খেলা ন’দলীয় জোট যে বিদ্রোহের আগুন জ্বেলেছিল, তাতে জল ঢালা ছাড়া উপায় ছিল না ফেডারেশনের। চেন্নাইতে ন’দলীয় জোট এমনও সিদ্ধান্ত নিয়েছিল, যদি ফেডারেশন সভাপতি আলোচনায় না বসেন, তাহলে সুপার কাপ তো বটেই, আই লিগ এবং আইএসএল-এর ভবিষ্যৎও অন্ধকার হয়ে যেতে পারে। আসলে আই লিগ খেলা দলগুলির পিঠ বলতে গেলে দেওয়ালে ঠেকে গিয়েছে। আইএসএলকে বড় করে তুলে ধরতে গিয়ে আই লিগের ভিতটাকেই নড়িয়ে দিয়েছে ফেডারেশন। তাই গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ফেডারেশনের কাছে প্রথম চিঠি দিয়ে আই লিগের দলগুলি বুঝিয়ে দিয়েছিল, এবার তারা কোমর বেঁধে নামছে। এফএসডিএল থেকে শুরু করে এএফসির দেওয়া প্রতিশ্রুতিকে টেনে এনে ফেডারেশনের কাছে পাঠানো সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছিল, ২০১৯-২০ মরশুমে আই লিগ ও আইএসএলকে সংযুক্তিকরণের পদক্ষেপ এখন ঠিক কোন জায়গায় রয়েছে? সেই সঙ্গে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল, যদি আই লিগ বন্ধ করা হয়, তাহলে ভারতীয় ফুটবলের কাঠামো বিপন্ন হতে বাধ্য। কিন্তু, সেই চিঠি পাওয়ার পরেও কোনও হেলদোল দেখায়নি ফেডারেশন।
[বিশ্বকাপের আগে বিয়ের ধুম পড়েছে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মধ্যে]
অবশেষে সুপার কাপ হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দেওয়ার পরেই ফেডারেশনের চৈতন্যোদয় ঘটে। ফেডারেশন সচিব কুশল দাস তখন সেই চিঠির প্রত্য়ুত্তরে জানিয়েছিলেন, প্রেসিডেন্ট দেশের বাইরে। তিনি ফিরলেই যাবতীয় অভিযোগের উত্তর দিয়ে দেবেন। কিন্তু ভুবনেশ্বরে সুপার কাপের প্রাথমিক পর্বে খেলতে এসে মিনার্ভা পাঞ্জাব চণ্ডীগড়ে ফিরে যায়। ভুবনেশ্বর থেকে ফেরার টিকিট নিয়ে চলে যায় আইজল ও গোকুলামের ফুটবলাররাও। তখনই ফেডারেশন বুঝে যায়, আই লিগ খেলা ন’দলীয় জোট যথেষ্ট শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। অবশেষে জোটের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে ফেডারেশনের কাছে সাতটি দাবিও তুলে বসে তারা। যার মধ্য়ে ছিল ২০ দলকে নিয়ে ইন্ডিয়ান ফুটবল লিগ চালু করা, বিদেশি সংখ্যা কমানো, দু’টো করে দলের ওঠা-নামা থাকা, প্রথম ডিভিশন থেকে নেমে যাওয়া দলকে আর্থিক সাহায্য – এ সবই। আসলে এই বিদ্রোহের আগুন জ্বালার পিছনে অন্যতম ভূমিকা ছিল মোহনবাগানের। বিশেষ করে ক্লাবের অর্থসচিব দেবাশিস দত্তের। গত মঙ্গলবার মোহনবাগানের সহ-সচিব সৃঞ্জয় বোসকে নিয়ে তিনি চেন্নাইতে আই লিগ খেলা দলগুলির সঙ্গে লাগাতার মিটিং চালিয়ে যান। তারই ফলশ্রুতি হল, প্রফুল্ল প্যাটেলের বোধোদয়।
দেবাশিস দত্ত যথারীতি ফেডারেশনের এই ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। দেবাশিস বলছিলেন, “আমরা চেয়েছিলাম, সুপার কাপ শুরুর আগে প্রফুল্ল প্যাটেলের সঙ্গে আলোচনায় বসতে। তিনি ১৪ এপ্রিল বসতে চেয়েছেন। তাতে আমরা খুশি। তাঁর এই সদিচ্ছাকে আমরা সাধুবাদ জানাচ্ছি। এবার অন্তত ফেডারেশন বুঝুক, আমাদের এই জোট কতটা শক্তিশালী।” ফেডারেশনকে ধন্যবাদ জানিয়ে চিঠি দিচ্ছে ন’দলীয় জোট। সেই চিঠিতে উল্লেখ করা হচ্ছে, সুপার কাপের প্রাথমিক পর্বের যে খেলাগুলি ওয়াকওভার গিয়েছে, সেইগুলি যেন পুনরায় করা হয়। দেবাশিস দত্ত বলছিলেন, “আমরা ফেডারেশনকে অনুরোধ করছি, প্রাথমিক পর্বের যে খেলাগুলি হয়নি, তা যেন পুনরায় করা হয়। আশা করি, আমাদের এই অনুরোধ ফেডারেশন রাখবে। না হলে এই টুর্নামেন্টের কোনও সারবত্তা থাকবে না।” এখন দেখার, ফেডারেশন শেষপর্যন্ত বাতিল হওয়া সুপার কাপের প্রাথমিক পর্বের খেলাগুলি করে কি না। কিংবা করলেও কবে করে, সেটাও দেখার বিষয় হয়ে রইল।
The post জল্পনার অবসান, সুপার কাপ খেলবে দুই প্রধানই appeared first on Sangbad Pratidin.