shono
Advertisement

পুকুরে ডুব দিলেই লক্ষ্মীলাভ! মিলছে গোছা গোছা টাকা, শোরগোল মেমারিতে

অর্থলাভের আশায় সারাদিন পুকুরে ডুব দিচ্ছেন স্থানীয়রা।
Published By: Tiyasha SarkarPosted: 08:58 PM Sep 04, 2020Updated: 08:58 PM Sep 04, 2020

সৌরভ মাজি, বর্ধমান: ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, রুমা গুহঠাকুরতা অভিনীত ‘আশিতে আসিও না’ সিনেমার সেই গল্পটা সকলেরই বোধহয় মনে রয়েছে। পুকুরে একবার ডুব দিলেই নাকি যৌবন ফিরে পাওয়া যাচ্ছিল। তাই টিকিট কেটে পুকুরে স্নানের হিড়িকও লেগেছিল। গত কয়েকদিন ধরে তেমনই পুকুরে ডুব দেওয়ার হিড়িক পড়েছে পূর্ব বর্ধমানের মেমারির বড় মশাগড়িয়া গ্রামের পাসুরডোবায়। কারণ, এই ডোবায় ডুব দিলেই হচ্ছে লক্ষ্মীলাভ। মিলছে গোছা গোছা টাকা। গহনাও নাকি পেয়েছেন কেউ কেউ। ফলে করোনা (Coronavirus) আবহে সামাজিক দূরত্বের বিধি শিকেয় তুলে হাজার হাজার মানুষ ভিড় করেছেন পুকুর পাড়ে। কিশোর-কিশোরী, তরুণ-তরুণী থেকে বৃদ্ধ-বৃদ্ধারাও দিনভর ডুব দিচ্ছেন পুকুরে।

Advertisement

অবাক করা এই কাণ্ডে শোরগোল পড়ে গিয়েছে এলাকায়। শুধু বড়মশাগড়িয়া নয়, দূরদূরান্ত থেকেও প্রচুর মানুষ ভিড় করেছেন পুকুর পাড়ে। গ্রামের শেখ মনসুর আলির বাড়ি পুকুরের ধারেই। শুক্রবার তিনি জানান, গত কয়েকদিন ধরেই গ্রামের ছেলেপিলেরা বলছিল পুকুরে স্নান করতে গেলেই টাকা পাওয়া যাচ্ছে। তিনি বলেন, “প্রথমে বিশ্বাস করিনি। তার পর গ্রামের আরও কয়েকজন ৫০০, ২ হাজার, ১০ টাকার নোট পেয়েছে দেখলাম। এদিন তো প্রচুর লোক চলে আসে। সবাই পুকুরে ডুব দিয়ে দিয়ে গোছা গোছা টাকা তুলেছে।” খবর পেয়ে এদিন পুলিশও যায়। মনসুর আলি জানান, পুলিশের লোকজনও ডুব দিয়ে দিয়ে টাকা পেয়েছে।

[আরও পড়ুন: দৈনিক করোনা আক্রান্তের নিরিখে শীর্ষে সেই উত্তর ২৪ পরগণা, মৃত্যু বাড়ছে কলকাতায়]

এদিন অনেক মহিলা, কিশোর-কিশোরীকেও দিনভর পুকুরে শুধুই ডুব মারতে দেখা গিয়েছে। হাত-পায়ের চামড়া জলে ভিজে জড়ো জড়ো হয়ে গেলেও কোনও ভ্রুক্ষেপ ছিল না। কার্যত কেউই হতাশ হননি। ১০, ২০, ৫০, ১০০, ৫০০, ১০০০, ২০০০ টাকার নোট পেয়েছেন বলে গ্রামবাসীরা জানিয়েছেন। কেউ কেউ না কি সোনার গহনাও পুকুরের তলা থেকে কুড়িয়েছেন। নোটগুলি জলে ভিজে যাওয়ায় তোলার পর ছিঁড়েও যাচ্ছিল। তাতে কী, শুকিয়ে নিয়ে অচল-সচল বা ব্যাংকে গিয়ে বদলে নিলেই হবে, জানালেন সদ্য টাকা কুড়িয়ে পুকুর থেকে ওঠা এক মহিলা।

জানা গিয়েছে, এই পুকুরটির বেশ কয়েকজন শরিক রয়েছেন। তাঁদের অন্যতম শেখ মজিবর রহমান, মহম্মদ আসিফ, নুরুল ইসলাম, মহম্মদ রফিক ও ইউসুফ কয়াল। গ্রামবাসীরা জানান, ২০১২-১৩ সাল নাগাদ পুকুরটি খনন করা হয়। তখন পুরনো কিছু মেলেনি পুকুরে। পরে কীভাবে টাকা-পয়সা এল তা তাঁরা বুঝতে পারছেন না। ঘটনার কথা চাউড় হতেই পুলিশ-প্রশাসন নড়চড়ে বসেছে। এবিষয়ে পুলিশ সুপার ভাস্কর মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। মহকুমা পুলিশ আধিকারিক আমিনুল ইসলাম খান সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কয়েকটি ১০০ ও ১০ টাকার ছেঁড়া নোট পেয়েছে। কেউ যাতে পুকুরে না নামে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে গ্রামবাসীদের। একইভাবে বর্ধমান দক্ষিণের মহকুমা শাসক সুদীপ ঘোষও প্রশাসনিক স্তরে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি জানতে পেরেছেন। বিডিওকে বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য বলেছেন বলে জানা গিয়েছে। প্রশ্ন উঠেছে, কেউ মশকরা করতে এটা করেছে কি না। কিন্তু এত বেশি নোট নিয়ে কেউ মশকরা করবে সেটা বিশ্বাসযোগ্য নয় প্রায় সকলের কাছেই। চুরির টাকা লুকিয়ে রাখতে পুকুরে ফেলে রেখেছিল প্যাকেটে মুড়ে। কিন্তু সেই প্যাকেট খুলে গিয়ে জলে ভাসছে কিনা সে প্রশ্নও ঘুরপাক খাচ্ছে গ্রামবাসীদের মাথায়।

[আরও পড়ুন:এগিয়ে বাংলা! গত দু’বছরে রাজ্যে আত্মঘাতী হননি একজন কৃষকও, কেন্দ্রের রিপোর্টে স্বীকৃতি]

Sangbad Pratidin News App

খবরের টাটকা আপডেট পেতে ডাউনলোড করুন সংবাদ প্রতিদিন অ্যাপ

Advertisement