অভিরূপ দাস: অভাবের সংসারে দু’বেলা খাবার জোটে না। নিজের তিন বছরের কন্যা সন্তানকে বিক্রি করে দিতে যাচ্ছিলেন মা। ডায়মন্ড হারবার থানার সাহায্যে তা আটকাল কলকাতা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি। সঙ্গে ছিল ওয়েস্ট বেঙ্গল কমিশন ফর প্রোটেকশন অফ চাইল্ড রাইটসের (WBCPCR) টিম। তিন বছরের আমিনা (নাম পরিবর্তিত) আপাতত প্রগতি ময়দান থানা এলাকায় একটি হোমে রয়েছে।
গত চার বছর ধরে হেস্টিংস ফ্লাইওভারের তলায় দুস্থ শিশুদের পড়াশোনা শেখায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা। ‘প্রান্তকথা’ নামক সে সংস্থায় কাজ করেন স্থানীয় মহিলারা। স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার পক্ষ থেকে বাপ্পাদিত্য মুখোপাধ্যায় জানান, এখানেই মাসি আসমিনা বিবির সঙ্গে রোজ আসত তিন বছরের আমিনা। ফুটফুটে মেয়েটি তার কোলেই থাকত। ছবি আঁকত। আচমকাই একদিন আসা বন্ধ করে দেয় সে। চিন্তায় পড়ে যান স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীরা।
[আরও পড়ুন: গুপ্তচর বৃত্তির অভিযোগে ২৯ বছর কেটেছে পাকিস্তানের জেলে, দেশে ফিরলেন কুলদীপ সিং]
শিশুটির মা সালমা মাদকাসক্ত। জন্ম থেকেই মাসির কাছেই মানুষ আমিনা। মা থাকেন রাজস্থানের আজমের শরিফের কাছে। জানা গিয়েছে, সম্প্রতি মাসিকে ফোন করে আমিনার মা জানায়, “মেয়েকে এবার আমার কাছে নিয়ে যাব।” আসমিনা বিবির বক্তব্য, “খবর নিয়ে জানতে পেরেছিলাম চূড়ান্ত অর্থাভাবে ভুগছে আমার বোন। মেয়েকে বিক্রি করে দেওয়ার পরিকল্পনা করছে সে।” দ্রুত স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার কর্মীদের বিষয়টি জানান আসমিনা।
আমিনার দাদু থাকেন ডায়মন্ড হারবারে। সেখানে তাকে নিয়ে চলে যায় সালমা। কলকাতা চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন মহুয়া শূর জানিয়েছেন, সোমবার সকালেই ডায়মন্ড হারবার থানার কাছে নির্দেশ গিয়েছিল, অবিলম্বে শিশুটিকে চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির কাছে নিয়ে আসতে হবে। সেই মতো সোমবার একটি টিম পৌঁছয় ডায়মন্ড হারবারে। সেখান থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়।
মহুয়া শূর বলেন, “শিশুটির মাসি একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার মাধ্যমে আমাদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন। আমরা খবর পেয়েছি বাচ্চাটিকে আজমেরে বিক্রি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছিল। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। বাচ্চাটি আপাতত আমাদের হোমে রয়েছে।” জন্ম থেকেই মাসির কাছে মানুষ আমিনা। মাসিকে দেখতে পেয়েই দৌড়ে আসে সে। মাসির নিরাপদ কোলে আশ্রয় নেয়।