সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: মা পারে, সন্তানকে ভাল রাখতে সব পারে মা। জীবন দিয়ে বাঁচাতে পারে সন্তানকে। হয়ে উঠতে পারে শিশুটির বর্মও। রুশ-ইউক্রেন যুদ্ধে (Russia-Ukraine War) আরও একবার তার প্রমাণ হল। রুশ বোমায় নিজে ক্ষতবিক্ষত হলেন বটে, কিন্তু একরত্তির শরীরে একটিও আঁচড় পড়তে দিলেন না মা। যুদ্ধবিধ্বস্ত কিয়েভের একটি হাসপাতাল প্রকাশ্যে এনেছে সেই মা ও সন্তানের ছবি।
যে কোনও যুদ্ধই মানবতার উপরে আঘাত, যা গত ২৪ দিন ধরে দেখছে গোটা বিশ্ব। পালটা বিভিন্ন ঘটনারও সাক্ষী হচ্ছে মানুষ, যেখানে হারছে ক্ষেপণাস্ত্র, জয় হচ্ছে মায়াময় ভালবাসার, আবেগময় হৃদয়ের। যেমন, কিয়েভের হাসপাতালের প্রকাশ করা আহত মা ও ফুটফুটে সন্তানের ছবিটি। সকলে বলছেন, এই হল শাশ্বত মাতৃত্বের প্রতীক! বাবা-মা ও একরত্তির ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা একটি ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছে ওই হাসপাতাল। শনিবার ভোর রাতে ঘটে ঘটনাটি। কিয়েভের ওই এলাকায় ক’দিন ধরেই বোমা ফেলছিল পুতিনের বাহিনী।
[আরও পড়ুন: অনাস্থা প্রস্তাবের মুখে ইমরান, আগাম পদত্যাগের নির্দেশ পাক সেনাপ্রধানের!]
শনিবার যখন গোলা বর্ষণ শুরু হয় তখন সদ্যোজাত সন্তানকে দুধ খাওয়াচ্ছিলেন মা। শিশুটির বাবাও ছিলেন বাড়িতে। আশপাশের এলাকায় বোমা পড়া শুরু হতেই আতঙ্কিত হন দু’ জনে। বুঝতে পারছিলেন না এ যাত্রায় বাঁচবেন কিনা, সদ্যোজাত সন্তানকে বাঁচাতে পারবেন কিনা। আশঙ্কা বাস্তবে পরিণত হয়। তাঁদের বাড়িতেও বোমা পড়ে। চুরমার হয়ে যায় জানলা-দরজা। কোনও মতে বাড়ি ছেড়ে পালান ওঁরা।
শিশুটির বাবা জানিয়েছেন, বাইরে বেরিয়ে দেখেন কিছুই প্রায় আস্ত নেই। ভেঙে পড়েছে সামনের শিশুদের স্কুলটি, ছাদ উড়ে গিয়েছে প্রায় সমস্ত বাড়ির। সেই সঙ্গে গুলির গতিতে ঝাঁকে ঝাঁকে উড়ে আসছে কাচের টুকরো। তার মধ্যেই নিজের শরীর দিয়ে শিশুকে আড়াল করে ছুটতে থাকেন মা। তাতেই ক্ষতবিক্ষত হয়ে যান তিনি।
[আরও পড়ুন: যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে অব্যাহত রুশ আগ্রাসন, বিস্ফোরণে ধ্বংস ইউরোপের সর্ববৃহৎ স্টিল প্ল্যান্ট]
হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, পরিবারটি যখন হাসপাতালে আসেন, তখন দেখা যায়, মায়ের গোটা শরীরে ধারালো কাচের টুকরোর আঘাত, রক্তাক্ত তিনি। অথচ সদ্যোজাত একরত্তির শরীরে একচিলতে আঘাতেরও চিহ্ন নেই। একই ঘটনায় আহত হয়েছেন বাবাও। তার পায়ে আঘাত লেগেছে। হাসপাতালের প্রকাশ করা ছবিতে তিনজনকেই দেখা গিয়েছে। ভাইরাল হয়েছে ছবিটি।