অর্ণব দাস, বারাসত: রবিনসন স্ট্রিট কাণ্ডের ছায়া এবার উত্তর ২৪ পরগনার হাবড়ায়। ছেলের দেহ আগলে দু’দিন বসে রইলেন মা। খরব সামনে আসার পর থেকেই এলাকায় ছড়িয়েছে তীব্র চাঞ্চল্য।
গত দু’দিন ধরে পচা দুর্গন্ধ পাচ্ছিলেন প্রতিবেশীরা। সন্দেহ হওয়ায় গতকাল, মঙ্গলবার সন্ধের পর স্থানীয়রা খোঁজ নিয়ে দেখেন, ছেলের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন মা। শেষে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে নিয়ে যায়। হাবড়া (Habra) থানার জয়গাছি এলাকার এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়ায়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃতের নাম সুনীল দত্ত (৭৪)। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে পুলিশ। কীভাবে মৃত্যু হল তাঁর, ময়নাতদন্তের রিপোর্টের তা অনেকটা স্পষ্ট হবে বলেই মনে করছে পুলিশ।
[আরও পড়ুন: চতুর্থ ঢেউ আসন্ন? বেড়েই চলেছে দেশের দৈনিক সংক্রমণ, ১ লক্ষের দোরগোড়ায় অ্যাকটিভ কেস]
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, হাবড়া থানার জয়গাছি বেলতলা এলাকার বাসিন্দা সুনীল দত্ত একই বাড়িতে থাকতেন ৯১ বছরের মা কমলা দত্তের সঙ্গে। সুনীলবাবু ডেকরেটার্সের কাজ করতেন। কিন্তু পঁচাত্তরের কাছাকাছি বয়স হয়ে যাওয়ায় এবং অসুস্থতার জন্য তিনি বর্তমানে কাজ করতেন না। বাড়ি থেকেও খুব একটা বেরতেও দেখা যেত না তাঁকে। প্রতিবেশীরা জানান, গত দু’দিন ধরে সুনীলবাবুদের বাড়ি থেকে দুর্গন্ধ পাওয়া যাচ্ছিল। সন্দেহ হওয়ায় গতকাল সন্ধের পর কয়েকজন বাড়ির জানলা দিয়ে উঁকি মেরে ভিতরে কী পচেছে, দেখার চেষ্টা করেন। তখনই দেখতে পান, সুনীলের মৃতদেহ আগলে বসে রয়েছেন বৃদ্ধা মা কমলাদেবী। আর এক মুহূর্ত দেরি না করে হাবড়া থানায় খবর দেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ এসে মৃতদেহ উদ্ধার করে।
স্থানীয়দের অনুমান, বয়সজনিত কারণে শারীরিক ভাবে অক্ষম মা বুঝতেই পারেননি ছেলের মৃত্যু হয়েছে। তাই তিনি ছেলের সামনে এভাবে বসে কাটিয়ে দিয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, বৃদ্ধা কমলাদেবীকে হাবড়া হাসপাতালে ভরতি করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে কলকাতার (Kolkata) রবিনসন স্ট্রিটে প্রায় ছ’মাস ধরে দিদির মৃতদেহ আগলে বসেছিলেন পার্থ দে। যে ঘটনায় শিউরে উঠেছিল গোটা কলকাতা। মঙ্গলবারের হাবড়ার জগাছার ঘটনায় সেই স্মৃতিই ফের উসকে গেল।