সুকুমার সরকার, ঢাকা: মতুয়া (Motua) সম্প্রদায়ের প্রতিষ্ঠাতা শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের আবির্ভাব তিথিতে পশ্চিমবঙ্গের মতো ওপার বাংলাতেও শুরু হয়েছে উৎসব। বাংলাদেশের (Bangladesh) দক্ষিণ জনপদ জেলা গোপালগঞ্জের কাশিয়ানী উপজেলার শ্রীধাম ওড়াকান্দিতে শনিবার থেকে মতুয়া তথা সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মহাবারুণীর স্নান উৎসব শুরু হয়েছে। মথুরা-বৃন্দাবন ও মক্কার মতোই মতুয়া ভক্তদের আরেকটি ধর্মীয় পীঠস্থান বাংলাদেশের ওড়াকান্দি। পৌনে দুশো বছর ধরে সেখানে মহাবারুণীর স্নানোৎসব চলছে। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, নেপাল ও দেশ থেকে মতুয়া ভক্তরা ওড়াকান্দির এই উৎসবে অংশ নেন। এবার ঢাক, ঢোল, শঙ্খ, কাঁসি বাজিয়ে লাল নিশান উড়িয়ে উৎসবে অংশগ্রহণ করছেন পুণ্যার্থীরা। এই উৎসব ঘিরে ওড়াকান্দিতে পাঁচদিন ব্যাপী মেলাও শুরু হয়েছে।
শ্রী শ্রী হরিচাঁদ ঠাকুরের ২১৩তম অবির্ভাব তিথি উপলক্ষে শনিবার ভোর ৬টা ২৬ মিনিটে গদীনশীল ঠাকুর ও মতুয়ামাতা সীমা ঠাকুর ও পদ্মনাভ ঠাকুর কামনা সাগরে স্নান করে স্নানোৎসবের শুভ সূচনা করেন। এর পর পাঁচ কুড়ির দল স্নানে অংশ নেয়। তার পর থেকে চলতে থাকে পুণ্যার্থীদের স্নানের পালা। যা শেষ হবে রাতে। কাশিয়ানী উপজেলা চেয়ারম্যান ও হরিচাঁদ ঠাকুরের ষষ্ঠ পুরুষ সুব্রত ঠাকুর জানান, স্নানোৎসবে দেশের বিভিন্ন জেলার প্রত্যন্ত এলাকা, ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম ও ত্রিপুরা ও নেপাল থেকে পুণ্যার্থীরা এসেছেন। তারা দলে দলে ঢাক, ঢোল, শঙ্খ, কাঁসি বাজিয়ে লাল নিশান উড়িয়ে ‘হরি বোল’ ধ্বনিতে এলাকায় স্নানোৎসবে অংশগ্রহণ করছেন। “সারা দিন বিভিন্ন বয়সের নারী-পুরুষ পুণ্যার্থী পাপ মুক্তি ও পাপ মোচনের আশায় স্নান করবেন। স্নান সেরে ভক্তরা ঠাকুরের মন্দিরে প্রণাম করে সুখ, শান্তি, সমৃদ্ধি ও ঠাকুরের কৃপা লাভের জন্য প্রার্থনা করেন।” এবছর ১০ লক্ষ পুণ্যার্থী স্নানোৎসবে অংশ নেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে বলেও জানান সুব্রত ঠাকুর।
[আরও পড়ুন: ভোটের মুখে টাটাদের ফেরার প্রতিশ্রুতি লকেটের, ‘স্বপ্ন দেখছেন’ কটাক্ষ রচনার]
শ্রীধাম ওড়াকান্দি বারুণীর স্নান ও মেলা কমিটির সদস্য ডা. অসিতবরণ রায় বলেন, “হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে এটি একটি মহা তীর্থস্থান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতায় আছেন বলেই আমরা উৎসবের আমেজে স্নানোৎসবে অংশ নিয়েছি। ভাব গাম্ভীর্যের মধ্য দিয়েই ধর্মীয় উৎসব করতে পারছি।” তিনি আগত ভক্তদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার (Sheikh Hasina) সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু ও সাফল্য কামনায় প্রর্থনা করার আহ্বান জানান। বাগেরহাট জেলার হোগলাবুনিয়া গ্রামের নির্মল ওঝার কথায়, “বারুণী উৎসব বাংলাদেশের মধ্যে সবচেয়ে বড় স্নানোৎসব ও মেলা। এখানে পুণ্যলাভের আশায় স্নান করেছি। ওড়াকান্দিতে স্নান করলে পাপ মোচন হয় বলে প্রচলিত রয়েছে। এ বিশ্বাস আমাদের মধ্যে রয়েছে দীর্ঘ পৌনে দুশো বছর ধরে।”