জ্যোতি চক্রবর্তী, বনগাঁ: রাজ্যের বিভিন্ন সাংগঠনিক জেলার সভাপতি নির্বাচিত করার পর শনিবার বিজেপির(BJP) পাঁচ বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ (WhatsApp) ছেড়েছিলেন। নতুন জেলা সভাপতি নির্বাচনের ক্ষেত্রে মতুয়াদের প্রাধান্য দেওয়া হয়নি, এ নিয়ে ক্ষোভ তৈরি হয়েছিল তাঁদের। সেই ক্ষোভেই দলের সঙ্গে দূরত্ব বাড়িয়ে তাঁরা গ্রুপ থেকে বেরিয়ে গিয়েছেন বলে ঘনিষ্ঠ সূত্রে খবর। এসবের পর অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের (All India Motua Mahasangha) সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দ্রনাথ গায়েনের ফেসবুক পোস্ট ঘিরে জল্পনা শুরু হয়েছে। পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ আর নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক পার্টিকে সমর্থন করবে না।’ আরেকটি পোস্টে লেখা – ‘মতুয়াদের বঞ্চিত করা হচ্ছে। তৈরি থাকুন আগামী দিনের জন্য, মতুয়ারা ও বঞ্চিত করার ক্ষমতা রাখে।’ তবে কি বিজেপির সঙ্গ পুরোপুরি ত্যাগ করল সংগঠন? উঠছে এই প্রশ্ন।
এই মুহূর্তে মতুয়া মহাসংঘের দায়িত্ব বনগাঁর ঠাকুরবাড়ির দুই সদস্য মমতাবালা ঠাকুর ও শান্তনু ঠাকুরের। এ নিয়ে যদিও ঠাকুর পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দ্বন্দ্ব রয়েছে। তবে এই দু’জনের নেতৃত্বই মেনে চলেন মতুয়া (Motua) সম্প্রদায়ের মানুষজন। পদাধিকার অনুযায়ী, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সংঘাধিপতি মমতাবালা ঠাকুর। সাধারণ সম্পাদক সুখেন্দ্রনাথ গায়েন। রবিবার তাঁরই ফেসবুক পোস্ট ঘিরে রীতিমত চর্চা শুরু হয়েছে রাজনৈতিক মহলে। পোস্টে তিনি মতুয়াদের প্রতি বঞ্চনার অভিযোগ তুলে সাফ জানিয়েছেন, অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘ আর নির্দিষ্ট কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন করবে না।
[আরও পড়ুন: ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য কেন? রাজ্যপালই করে দিন মুখ্যমন্ত্রীকে’, শ্লেষ ধনকড়ের]
বিষয়টি নিয়ে সুখেন্দ্রনাথ গায়েন সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, ”পোস্টটি সম্পূর্ণ আমার ব্যক্তিগত মতামত। আমরা মোট ১১ দফা দাবি নিয়ে বিজেপিকে সমর্থন করেছিলাম। কিন্তু এখনও পর্যন্ত তার একটাও পূরণ হয়নি। সবক্ষেত্রে মতুয়ারা বঞ্চিত হচ্ছে। সাংগঠনিক ক্ষেত্রেও তাদের যোগ্য নেতৃত্বকে সম্মান দেওয়া হয়নি।” তবে এও জানান, পরবর্তী সময়ে মতুয়া মহাসংঘের তরফেও নির্দিষ্ট অবস্থানের কথা প্রকাশ্যে তুলে ধরবেন।
[আরও পড়ুন: বড়দিনের উপহার! লটারি কেটে রাতারাতি কোটিপতি বনগাঁর ভাগচাষি]
বনগাঁ (Bongaon) সাংগঠনিক জেলা মতুয়া অধ্যুষিত৷ গত লোকসভা এবং বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির পক্ষ থেকে মতুয়া ঠাকুরবাড়ির দুই ছেলে ও মতুয়া ঘনিষ্ঠদের প্রার্থী করেছিল। ভোটে জয়লাভও করেন তারা। শনিবার বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার সভাপতিও বদল করা হয়। বিজেপির প্রবীণ নেতা রামপদ দাসকে নতুন সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। এরপরই বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার ৪ মতুয়া বিধায়ক এবং রানাঘাট দক্ষিণ কেন্দ্রের বিধায়ক বিজেপির বিধায়ক হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে বেরিয়ে যান। এরপর রবিবার সোশ্যাল মিডিয়ায় কার্যত চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছেন অল ইন্ডিয়া মতুয়া মহাসংঘের সাধারণ সম্পাদক।