সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ২৬/১১ মুম্বই হামলার অন্যতম চক্রী তাহাউর রানাকে ভারতে প্রত্যার্পণের নির্দেশ আগেই দিয়েছিল মার্কিন আদালত। এর পর নানা আইনি ও কূটনৈতিক প্রক্রিয়া শেষে অবশেষে পাকিস্তান বংশোদ্ভূত কানাডার নাগরিক রানাকে হাতে পেতে চলেছে ভারত। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যেই এই জঙ্গিকে ভারতের হাতে তুলে দেবে আমেরিকা।
মুম্বইয়ে নৃশংস জঙ্গি হামলার অন্যতম চক্রী রানা এখন আমেরিকায় জেলে বন্দি। মুম্বইয়ে হওয়া ওই ভয়াবহ হামলায় ছয় মার্কিন নাগরিকেরও মৃত্যু হয়। ২০১৩ সালে তাকে ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দেয় আমেরিকার আদালত। ২০২০ সালে স্বাস্থ্যের কথা মাথায় রেখে তাকে মুক্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় প্রশাসন। কিন্তু ভারতের প্রত্যর্পণের আবেদনে খুনের মামলায ফের তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। এর পর এই জঙ্গিকে নয়াদিল্লির হেফাজতে দিতে মার্কিন প্রশাসন আদালতে আবেদন করে। এর পর চলতি বছরের আগস্ট মাসে ওয়াশিংটনের ফেডারেল আদালত জানিয়ে দেয় রানা ভারতের কাছে প্রত্যর্পণযোগ্য। সম্প্রতি দিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের অফিসে ভারত ও আমেরিকার তদন্তকারী সংস্থার শীর্ষস্তরের কর্তা এবং কূটনৈতিক প্রতিনিধিদের বৈঠক হয়। এর পরই জানা যাচ্ছে, আগামী ডিসেম্বরের মধ্যে রানাকে ভারতের হাতে তুলে দিতে সম্মত হয়েছে আমেরিকা।
প্রসঙ্গত, ২০০৮-এর ২৬ নভেম্বর মুম্বইয়ে যে পাকিস্তানি জঙ্গিরা হামলা চালিয়েছিল তাদের অন্যতম মদতদাতা ছিল এই রানা। হামলার অন্যতম ষড়যন্ত্রী ছিল মার্কিন নাগরিক ডেভিল কোলম্যান হেডলি। রানা তাঁর ঘনিষ্ঠ। প্রায় দেড় দশক ধরে এই অপরাধীকে হাতে পেতে চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছে ভারত। অবশেষে ১৯৯৭ সালের ভারত ও আমেরিকা বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তির ভিত্তিতে সেই প্রক্রিয়া সফল হতে চলেছে।
তাৎপর্যপূর্ণভাবে এমন একটা সময়ে কানাডার নাগরিক রানাকে হাতে পাচ্ছে, যখন খলিস্তানপন্থী জঙ্গি হরদীপ সিং নিজ্জরের হত্যাকাণ্ডে ভারত-কানাডা কূটনৈতিক সম্পর্ক চরম আকার নিয়েছে। এই হত্যাকাণ্ডে ভারতের একাধিক আধিকারিক যুক্ত রয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছে কানাডা। যদিও ভারত সরকার বার বার জানিয়েছে, যদি এই সংক্রান্ত কোনও তথ্য প্রমাণ কানাডার হাতে থাকে তবে তা যেন পেশ করা হয়। এমন টালমাটাল পরিস্থিতিতে রানার প্রত্যার্পণ কানাডার কাছে বড় ধাক্কা হতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।