সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: সোমবার ষষ্ঠ দফার নির্বাচন। ওই দিন রাজ্যের যে সমস্ত কেন্দ্রে ভোট হবে তার মধ্যে অন্যতম হল ঘাটাল। যেখানে তৃণমূলের দেবের সঙ্গে বিজেপির হিরণের হাড্ডাহাড্ডি লড়াই। প্রথম থেকেই ভোট নিয়ে দেব ও হিরণের মধ্যে সংঘাত তুঙ্গে। কখনও হিরণ দেবকে কটাক্ষ করছেন, তো কখনও দেব এক হাত নিচ্ছেন হিরণকে। হিরণ-দেবের সংঘাতে এবার অনুঘটক হয়ে ঢুকলেন শুভেন্দু অধিকারী। সোশাল মিডিয়ায় শুভেন্দু পোস্ট করলেন 'দেবের কীর্তি'। যে পোস্টে তিনি আপলোড করলেন একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢোকার নথি। পাশাপাশি গত ২৫.০১.২০১৭ তারিখের কিছু টাকা পয়সার লেনদেনের হিসেবও তুলে ধরা হয়েছে শুভেন্দুর এই পোস্টে। যদিও এই পোস্টের সত্যতা যাচাই করেনি সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল।
শুভেন্দুর এই পোস্টের পাল্টাও দিয়েছেন দেব। তিনিও পোস্ট করেছেন একটি শোয়ের পোস্টার। যেখানে অন্যান্য অভিনেতা, অভিনেত্রীদের সঙ্গে রয়েছেন হিরণ চট্টোপাধ্যায়ের ছবি ও নাম। দেব লিখেছেন, ''ও শুভেন্দু দা, তুমি নাকি কোথায় মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার স্বপ্ন দেখছো, হিরণের পাল্লায় পড়ে তোমাকে তো কাউন্সিলরে নামিয়ে দিচ্ছে।ভালোবাসি বলে বললাম, আমিও জানি তুমি আমাকে ভালোবাসো। আর রইলো কথা গরু চুরির টাকা,তোমার কোলের ছেলে হিরো হিরণ সেও পিন্টু মন্ডলের থেকে টাকা নিয়েছেন,তাহলে উনিও..''।
গোটা বিষয়টি নিয়ে এক বৈদ্যুতিন সংবাদমাধ্যমে দেব জানিয়েছেন, ''শুভেন্দুদার পোস্টটা দেখে কাকে ধন্যবাদ দেব বুঝতে পারছি না। হিরণকে নাকি শুভেন্দুদাকে। আমি হিরণকে দিয়েই শুরু করি। আড়াই বছর ধরে মনের মধ্যে অনেক কথা জমে ছিল। প্রথমেই বলব, কোনও এজেন্সি নিয়ে যখন তদন্ত হয়, তখন সেই তদন্ত নিয়ে বেশি কথা বলা যায় না। আমি খুব আশ্চর্য হলাম এই যে ইডি-সিবিআইয়ের কাছে যে তথ্যপ্রমাণগুলো ছিল, সেটা শুভেন্দু অধিকারীর হাতে কেন এবং কীভাবে এল। এটা শুধুই ইডি বা সিবিআইয়ের কাছে থাকা উচিত কিংবা হোম মিনিস্ট্রির কাছে থাকা উচিত, বা কোর্টের কাছে থাকা উচিত। এই চারজনের বাইরে আমার মনে হয় এই তথ্য আর কারও কাছে যাওয়া উচিত নয়। এগুলো খুবই গোপন নথি। ''
[আরও পড়ুন: তীব্র গরমে হিটস্ট্রোক শাহরুখের, ভর্তি হাসপাতালে]
দেব আরও বলেন, ''এর থেকে বোঝা যায়, শুভেন্দু অধিকারীর কাছে সোর্স রয়েছে। তাছাড়া, আমি আগেও বলেছি, যে টাকাটা আমি নিয়েছিলাম, সেটা আমি ফিরিয়েও দিয়েছি। সেই তথ্যও আমি সোশাল মিডিয়ায় আপলোড করব।''
গরুচোর মন্তব্যে দেব জানান, ''মঞ্চে যে এতবার পিন্টু মণ্ডলের কথা বলছে, আসলে আমি যে পিন্টু মণ্ডল সম্পর্কীত ডকুমেন্ট আপলোড করেছি, তা অনেক দিন ধরেই ছিল আমার কাছে। এতদিন আপলোড করার প্রয়োজন মনে করিনি। আজকে আমার মনে হল, ঘাটালের বিজেপি প্রার্থী, যে গত তিন বছর ধরে আমাকে গরুচোর, গরুচোর বলছে। আমার নাম জুড়েছে পিন্টু মণ্ডলের সঙ্গে। কিন্তু উনি কখনও এটা বলেনি যে তাঁর সঙ্গেও পিন্টুর যোগ রয়েছে। হিরণও কাজ করেছেন। আজকে সেই পোস্টারটাই দিলাম। উনি সবচেয়ে আগে ওনাকে চেনেন। আমার চেয়ে আগে পিন্টু মণ্ডলকে চেনেন উনি। তার মানে তো উনিও গরুচোর! ''
দেবের কথায়, ''আজকে শুভেন্দুদা এই পোস্ট করাতে সুবিধা হল। আমি আমার কথাটাও সামনে আনতে পারলাম। যদি আমি গরুচোর হই, তাহলে তো ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির নব্বই শতাংশ অভিনেতাই গরুচোর। একটু সার্ভে করলেই দেখা যাবে। ২০০৯ সাল থেকে শুরু করলেই হবে। রথযাত্রার দিন যে কোনও পেপারেই তাঁরা বিজ্ঞাপন দেয়। কোন শোয়ে, কার সঙ্গে, কোন কোন অভিনেতা রয়েছে। তালিকা থাকে সেই বিজ্ঞাপনে। সেখানে বড় বড় অভিনেতারা কাজ করেছেন। আর কাউকে ডাকা হয়নি। শুধু আমার উপর অভিযোগ এসেছে। এর মধ্যে বলিউড, টলিউড সবাই রয়েছে। আসলে পিন্টু মণ্ডল বিখ্যাত শো অরগানাইজার ছিলেন। তিনি সবার সঙ্গে কাজ করেছেন, আমিও করেছি। আমি তৃণমূলের সাংসদ বলেই আমাকে ডাকা হয়েছে। শুভেন্দুদার জন্যই আজকে আমি এতদিনের জমানো কথা বলতে পারলাম। ধন্যবাদ তাঁকে। ''
[আরও পড়ুন: ৯৩ বছরের ‘দাদুর কীর্তি’তে কুর্নিশ রণবীর সিংয়ের, কী এমন করলেন?]