সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ক্ষমতায় এসেই দেশ থেকে ভারতীয় সেনা সরানোর ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। তার পর থেকে ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ায় মালদ্বীপ। তার মাঝে আগুনে ঘি ঢালার মতো কাজ করে তাঁর সরকারের তিন মন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদি সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য। এবার সেই 'চিনপন্থী' প্রেসিডেন্ট মহম্মদ মুইজ্জুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে হবু প্রধানমন্ত্রীর শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে। জানা গিয়েছে, মালদ্বীপের বিদেশমন্ত্রী-সহ তিন মন্ত্রীকে নিয়ে রবিবার দিল্লিতে উপস্থিত থাকবেন মুইজ্জু। অতিথি দেশের তালিকায় জুড়েছে সেশেলেসর নামও।
৪ জুন অষ্টাদশ লোকসভা নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। নরেন্দ্র মোদি জয়লাভ করার পর অন্যান্য় রাষ্ট্রনেতাদের মতো বুধবার তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন মুইজ্জু। শুভেচ্ছাবার্তায় আগামিদিনে একসঙ্গে কাজ করার বার্তা দিয়েছিলেন তিনি। এবার রবিসন্ধ্যায় শপথগ্রহণ অনুষ্ঠানে বিদেশি অতিথিদের তালিকায় যুক্ত হয়েছে মালদ্বীপের প্রেসিডেন্টের নাম। বৃহস্পতিবার বিবৃতি দিয়ে দ্বীপরাষ্ট্রটি জানানো হয়, 'নরেন্দ্র মোদির শপথে উপস্থিত থাকার জন্য প্রেসিডেন্ট মুইজ্জুকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। তিনি তা গ্রহণ করেছেন। বিদেশমন্ত্রী মুসা জামির ও আরও দুই মন্ত্রীকে নিয়ে ভারতে যাবেন তিনি।' প্রসঙ্গগত, প্রেসিডেন্ট হওয়ার পর এটাই মুইজ্জুর প্রথম ভারতসফর।
[আরও পড়ুন: নদীতে ঝাঁপ বন্ধুর, বাঁচাতে গিয়ে মৃত রাশিয়ার ৪ ভারতীয় মেডিক্যাল পড়ুয়া]
'প্রতিবেশি প্রথম'। এই নীতিতে জোর দিয়ে শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ, নেপাল, ভুটান, মরিশাস, মালদ্বীপকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। বিশেষ করে যাতে ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও মজবুত হয়। কারণ চিনের 'গা জোয়ারি' রুখতে ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে কৌশলগত দিক দিয়ে এই দেশগুলো ভারতের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রনিল বিক্রমসিংহে, নেপালের পুষ্পকমল দাহাল, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে ও মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবিন্দ যুগনাথকে ফোনে আমন্ত্রণ জানান মোদি। বাকি দেশে আমন্ত্রণপত্র পাঠানো হয়েছে।
বলে রাখা ভালো, নির্বাচন চলাকালীন মে মাসে ভারত সফরে এসেছিলেন মুসা জামির। বৈঠক করেছিলেন বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে। সম্পর্কে টানাপড়েনের মাঝেও মালদ্বীপে জরুরি পণ্যের জোগান বজায় রেখেছে ভারত। নয়াদিল্লির এহেন মানবিক পদক্ষেপে রীতিমতো আপ্লুত জামির। অন্যদিকে, ভারতের সঙ্গে সংঘাতে জড়ানোর ফল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছে মালদ্বীপ। দ্বীপরাষ্ট্রে ভারতীয় পর্যটকের সংখ্যা রেকর্ড হারে কমে গিয়েছে। দিল্লির কাছে ঋণের পরিমাণও বিপুল। এর ফলে ক্ষোভের সঞ্চার হচ্ছে দ্বীপরাষ্ট্রের অন্দরে। পরিস্থিতি বেগতিক বুঝে এক অনুষ্ঠানে ভারতকে তাদের ‘ঘনিষ্ঠতম’ সঙ্গী বলে উল্লেখ করেছিলেন মুইজ্জু। বিশ্লেষকদের মতে, তৃতীয়বার মোদি সরকারের ক্ষমতায় আসায় দুদেশের সম্পর্ক ঠিক করে নিতে চাইছেন মুইজ্জু। যাতে আগামিদিনে জনগণের ক্ষোভে গদি হারাতে না হয় তাঁকে।