সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: ভারতীয় রাজনীতিতে নক্ষত্রপতন। প্রয়াত উত্তরপ্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তথা সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মুলায়ম সিং যাদব (Mulayam Singh Yadav)। যিনি সকলের কাছে ‘নেতাজি’ নামেই পরিচিত ছিলেন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮২ বছর। সোমবার সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ গুরুগ্রামের এক বেসরকারি হাসপাতালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন। একাধিক শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে এই হাসপাতালেই তিনি ভরতি ছিলেন ২২ সেপ্টেম্বর থেকে। সোমবার তাঁর লড়াই শেষ হল। এত বড় এক ব্যক্তিত্বের প্রয়াণে শোকের ছায়া নেমে এল জাতীয় রাজনীতিতে।
কয়েক বছর আগেই শারীরিক সমস্যার কারণে দলের নানাবিধ গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব ছেড়ে দিয়েছিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী। দলের দায়িত্ব ছাড়লেও সমাজবাদী পার্টিতে তিনিই ছিলেন শেষ কথা। এরই মাঝে একাধিক রোগ থাবা বসায় তাঁর শরীরে। বিশেষত শ্বাসকষ্ট নিয়ে ২২ সেপ্টেম্বর মুলায়ম সিংকে ভরতি করা হয় গুরুগ্রামের হাসপাতালে। তাঁকে আইসিইউ-তে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছিল। প্রবীণ নেতার শারীরিক অবস্থার খোঁজখবর রাখছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (PM Naredra Modi)। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ৮২ বছরের প্রবীণ নেতার একাধিক অঙ্গপ্রত্যঙ্গে সমস্যা ছিল। তাঁকে সুস্থ করে তোলার আপ্রাণ চেষ্টা করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু আজ শেষ হয়ে গেল সব লড়াই।
[আরও পড়ুন: ‘বুকে ঘুসি মেরেছে’, বন্ধুকে ফোনে প্রেমিকার মায়ের দুর্ব্যবহারের কথা জানান হরিদেবপুরের অয়ন]
১৯৩৯ সালের নভেম্বরে উত্তরপ্রদেশের এটাওয়ায় জন্ম হয় মুলায়মের। পড়াশোনার মধ্যে দিয়েই এগোতে চেয়েছিলেন তিনি। শুধু রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিষয়েই তাঁর তিন-তিনটি ডিগ্রি রয়েছে। তারপর রাজনীতিতে আসেন এবং তিনবার উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী হন তিনি। ১৯৮৯, ১৯৯৩ ও ২০০৩ সালে উত্তরপ্রদেশের কুরসিতে বসেন মুলায়ম। পরবর্তী সময়ে লোকসভা ভোটে মইনপুরী কেন্দ্র থেকে জিতে সাংসদ হন। অটল বিহারী বাজপেয়ীর মন্ত্রিসভায় তিনি প্রতিরক্ষা মন্ত্রীও ছিলেন। শেষ লোকসভা ভোট অর্থাৎ ২০১৯ সালেও মইনপুরী থেকে সাংসদ হন মুলায়ম সিং যাদব।
[আরও পড়ুন: পুরুলিয়ায় ধরা পড়ল পাচারচক্র, হুড়ায় শতাধিক গরু-সহ ২২টি গাড়ি বাজেয়াপ্ত]
রাজনৈতিক কেরিয়ারে সাফল্য থাকলেও নিজের তৈরি করা দলেই ছিল গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। কালক্রমে পরিবারের সদস্যরা একে অপরের সঙ্গে রাজনৈতিক বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। আর এই সমস্যার ঢেউ আছড়ে পড়েছিল মুলায়মের উপরেও। ছেলে অখিলেশ যাদবকে নিয়ে তাঁর চিন্তা ছিলই। যদিও দলের দায়িত্বভার তিনি নিজেই অখিলেশকে সঁপে দিয়েছিলেন। মুলায়ম পরবর্তী সমাজবাদী পার্টির কাজ এগিয়ে নিয়ে যাবেন অখিলেশ? এই প্রশ্ন থাকছে। সমাজবাদী পার্টির প্রতিষ্ঠাতা হয়েও দলের নড়বড়ে অবস্থা জীবদ্দশায় দেখে যেতে হয়েছে মুলায়মকে। তাই শেষ বয়সে এসে দলের পরিস্থিতি তাঁকে যে পীড়া দিয়েছিল, তা বললেও অত্যুক্তি করা হবে না।