সংবাদ প্রতিদিন ডিজিটাল ডেস্ক: খুন না করলেও পুত্রশোকে বিহ্বল হওয়ার কথা ছিল মায়ের। যদিও গোয়া পুলিশ অন্য কিছুরই সাক্ষী হল। চার বছরের সন্তানকে খুনে অভিযুক্ত বেঙ্গালুরুর স্টার্ট আপ সিইও সূচনা শেঠ এবং তাঁর স্বামী বেঙ্কট রমনকে মুখোমুখি জিজ্ঞাসাবাদে উভয়ের মধ্যে ঝগড়া বেধে গেল। পুলিশ হেফাজতে ১৫ মিনিট কথা বলেন দুজনে। পুরো সময় জুড়েই চলল তুমুল ঝগড়া। একে অপরকে দোষারোপ করেন সূচনা এবং বেঙ্কট।
২০২১ সালের মার্চ মাস থেকেই আলাদা থাকেন সূচনা। ২০২২-এর আগস্টে স্বামীর বিরুদ্ধে বিচ্ছেদের মামলাও করেন। মাসে আড়াই লক্ষ টাকা খোরপোশের দাবি করেন তিনি। ঝগড়ায় সেই সব প্রসঙ্গও আসে। একে ছেলেকে খুনের জন্য সূচনাকেই দায়ী করেন বেঙ্কট। পাল্টা সূচনা তাঁদের বিষাক্ত দাম্পত্যের জন্য দায়ী করেন বেঙ্কটকে। গার্হস্থ্য হিংসার অভিযোগ তোলেন। পাশাপাশি ছেলেকে খুনের অভিযোগও অস্বীকার করেন তিনি।
[আরও পড়ুন: বাজপেয়ীর বায়োপিক কি লোকসভা ভোটপ্রচারে বিজেপির অস্ত্র? মুখ খুললেন পঙ্কজ ত্রিপাঠী]
এদিকে একজন প্রতিষ্ঠিত, শিক্ষিত মা কী করে নিজের হাতে তার চার বছরের সন্তানকে হত্যা করে দেহ সুটকেসে ভরে পালানোর চেষ্টা করল তার সদুত্তর খুঁজছে গোয়া পুলিশ। হোটেলে সন্তান খুনে ধৃত সূচনা শেঠের মানসিক অবস্থা, স্বামীর সঙ্গে ছেলের হেফাজত নিয়ে টানাপোড়েনের নানা দিক খুঁটিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। গত শুক্রবার সূচনাকে নিয়ে ওই হোটেলে গিয়ে ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। যদিও বারবার পুলিশ তার বিরুদ্ধে তদন্তে সাহায্য না করার অভিযোগ করে আসছে।
অন্যদিকে ওইদিনই সূচনার স্বামী বেঙ্কটরমন বেঙ্গালুরু থেকে এসে গোয়ার ক্যালাঙ্গুটে থানায় বয়ান রেকর্ড করেন। সেখানেই তিনি স্ত্রীর হাতে সন্তান হত্যার ঘটনার সম্ভাব্য কয়েকটি কারণ জানান তিনি। তাঁদের বিবাহ-বিচ্ছেদ মামলায় কোর্ট থেকে নির্দেশ দিয়েছিল শিশুপুত্র মায়ের কাছে থাকবে। কিন্তু প্রতি রবিবার ছেলেকে বেঙ্কটের সঙ্গে দেখা করতে দিতে হবে। বেঙ্কট জানান, সূচনা কিছুতেই তার সঙ্গে ছেলের দেখা হোক, চাইছিল না।
[আরও পড়ুন: ৮ বছর ধরে নিখোঁজ বায়ুসেনার বিমান, অবশেষে মিলল সন্ধান!]
গত ৭ জানুয়ারি রবিবার ছেলের সঙ্গে বেঙ্কটের দেখা করার দিন ছিল। তাঁদের যাতে দেখা না হয় তার জন্য গত ৬ জানুয়ারি বেঙ্গালুরু থেকে গোয়ায় ছেলেকে নিয়ে চলে যায় স্টার্ট আপ কোম্পানির কর্ণধার সূচনা। সেখানে হোটেলের ঘরে গত রবিবার সন্তানকে খুন করে।
গোয়ার ডিজিপি যশপাল সিং জানান, অভিযুক্তের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেওয়ার জন্য পুলিশের হাতে ৯০ দিন রয়েছে। আমরা প্রমাণ সংগ্রহ করে চলেছি। খুনের পিছনে কারণ কী ছিল তা উদঘাটন করা হবে। পুলিশের উপস্থিতিতে সূচনার রোজ মেডিক্যাল পরীক্ষাও চলছে। গত সোমবার ছেলের দেহ সুটকেসে ভরে গোয়ার ট্যাক্সি করে বেঙ্গালুরু পালানোর পথে চিত্রদুর্গে ধরা পড়ে ৩৯ বছরের সূচনা।