কল্যাণ চন্দ, বহরমপুর: সম্পর্কে তৃতীয় ব্যক্তির ছায়া! সেই সন্দেহেই প্রেমিকাকে কুপিয়ে খুন! বাড়ি ফিরে কাঁদতে কাঁদতে মাকে জড়িয়ে ধরে অভিযুক্ত মিঠুর বিলাপ ছিল, "মা ওই মেয়েটা আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে, আমি ওকে শেষ করে দিয়েছি।" মাকে জড়িয়ে ধরেই পুলিশকে ফোন করে। কবুল করে নেয় খুনটা সে-ই করেছে। মুর্শিদাবাদে ছাত্রী খুনে উঠে এল এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য।
২০২২ সালের মে মাসে বহরমপুরের হাড়হিম করা খুনের ঘটনায় নির্বাক হয়ে গিয়েছিল মুর্শিদাবাদবাসী। বহরমপুর শহরের বুকে কলেজ ছাত্রী সুতপা চৌধুরীকে নৃশংস ভাবে খুন করেছিল তাঁর প্রাক্তন প্রেমিক সুশান্ত চৌধুরী। সেই ঘটনার স্মৃতি উসকে দিল বহরমপুরের পার্শ্ববর্তী থানা দৌলতাবাদ। শনিবার সকালে এক উচ্চ মাধ্যমিক ছাত্রীকে কুপিয়ে খুন করার অভিযোগ উঠল স্থানীয় এক যুবকের বিরুদ্ধে। ঘটনার ৩০ মিনিটের মধ্যেই অভিযুক্ত যুবক মিঠু ওরফে মনোয়ার হোসেনকে গ্ৰেপ্তার করেছে দৌলতাবাদ থানার পুলিশ।
[আরও পড়ুন: অমিত শাহকে বিদায় জানাতে বিমানবন্দরে ‘কয়লা মাফিয়া’! তালিকা প্রকাশ করে তোপ তৃণমূলের]
মানোয়ারের মা মজিদা বিবির কথায়, শনিবার তাঁর ছেলে বাইক নিয়ে বেরিয়েছিল। ঘণ্টা দুয়েক পর হন্তদন্ত হয়ে বাড়ি ফিরে এসে বলে, 'মা ওই মেয়েটা আমার জীবন নষ্ট করে দিয়েছে, আমি ওকে শেষ করে দিয়েছি'। এর পরেই মনোয়ার পুলিশকে ফোন করে ওই হত্যার কথা জানায়। পুলিশ বাড়িতে এসে তাকে গ্ৰেপ্তার করে। ওই ছাত্রীর সঙ্গে চার বছর ধরে মিঠুর সম্পর্ক ছিল বলে জানতে পেরেছে পুলিশ। বর্তমানে সাবিয়া খাতুন অন্য এক যুবকের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছে সন্দেহে মনোয়ার এই কীর্তি ঘটিয়েছে বলে অনুমান। অভিযুক্ত যুবককে রবিবার বহরমপুর আদালতে তোলা হবে।
এদিকে সাবিয়ার বাবা সরিফুল শেখ ভিনরাজ্যে কাজ করেন। এদিন সাবিয়ার মা শামীমা বিবি বলেন, তাঁর মেয়েকে কেন খুন করা হল, তিনি কিছুই জানেন না। শনিবার কম্পিউটার সেন্টার থেকে মেয়ে বেরিয়ে ফোন করেছিল, এক বান্ধবীর সঙ্গে বাড়ি ফিরছিল সাবিয়া। তখন ফোনেই ছিল সাবিয়া, এর পর সাবিয়ার বান্ধবী হঠাৎই 'মেরে ফেলল, মেরে ফেলল, মিঠু মেরে ফেলল' বলে চিৎকার করে। তিনি ঘটনা শুনেই ছুটতে শুরু করেন। ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখেন তাঁর মেয়ে রক্তাক্ত। শামীমা বিবি বলেন, "শনিবার স্কুলে গিয়ে উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার রেজাল্ট আনার কথা ছিল সাবিয়ার, তার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।" ওই যুবকের ফাঁসি চান তিনি।