কল্যাণ চন্দ্র, বহরমপুর: স্ত্রীর ‘ডেথ’ সার্টিফিকেট তুলতে এসে স্বামী নিজেই ‘ডেথ’ হয়ে গেলেন সরকারি খাতায়। মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ তুলে হাসপাতাল সুপারের দ্বারস্থ জীবিত স্বামী। জুব্বার শেখ নামে ওই ব্যক্তি নিজেই আবেদন করে জানান, তিনি জীবিত। অথচ ওই ভুলের মাসুল দিতে হচ্ছে তাঁকে। বিষয়টি নিয়ে হইচই পড়ে যায় স্বাস্থ্যমহলে।
মুর্শিদাবাদের লালগোলা থানার দামোদরপুর গ্রামের নুরজাহান বিবি অসুস্থ হওয়ার কারণে তাঁকে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভরতি করা হয়। গত বছরের ৪ অক্টোবর হাসপাতালে মৃত্যু হয় নুরজাহান বিবির। স্ত্রীর ডেথ সার্টিফিকেট নেওয়ার আবেদন জানান স্বামী জুব্বার শেখ। হাসপাতাল থেকে ‘ফাইনাল ডেথ সার্টিফিকেট’ হাতে পান। জুব্বার শেখ নিরক্ষর। তাই না পড়েই ডেথ সার্টিফিকেট নিয়ে লালগোলার বাড়িতে চলে যান।
[আরও পড়ুন: ছেলের অনুপস্থিতিতে পু্ত্রবধূ ও তাঁর দুই সন্তানকে ‘খুন’, আটক শ্বশুরবাড়ির লোকজন]
স্থানীয় ব্যাংকে স্ত্রীর গচ্ছিত টাকা তুলতে যান জুব্বার। তিনি দেখেন, স্ত্রীর অ্যাকাউন্টে তাঁর নামের পদবি আগে রয়েছে। অর্থাৎ জুব্বার শেখ পরিবর্তে শেখ জুব্বার রয়েছে ব্যাংকের খাতায়। তার এফিডেভিট করতে গিয়ে উকিলের কাছে যান। জানতে পারেন তিনি ‘মৃত’। শুক্রবার বৃদ্ধ জুব্বার শেখ জানান, গত দশ বছর ধরে বার্ধক্য ভাতা পাচ্ছেন। তিন মাস আগে মৃত্যুর পর বার্ধক্য ভাতা তোলেননি।
কিন্তু তিনি বেঁচে থেকেও যদি মৃত বলে ঘোষিত হন তাহলে সেই বার্ধক্য ভাতাও ফিরে যাবে। তখন তিনি কী খাবেন? এদিকে, জুব্বার শেখ শুক্রবার মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের সুপারের দ্বারস্থ হন। তিনি বলেন, “আমি তো বেঁচে রয়েছি। হাঁটাচলা করছি। কথা বলছি। তাহলে মরলাম কই!” ডেথ সার্টিফিকেট বিভাগের গাফিলতিতেই ওই ঘটনা বলে জানিয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। তবে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘জীবিত ও মৃত’ মনে পড়িয়ে দিল ‘কাদম্বিনী মরিয়া প্রমাণ করিল, সে মরে নাই।’