শাহজাদ হোসেন, জঙ্গিপুর: নির্দিষ্ট বয়সের আগে কিশোরীকে বিয়ের জন্য চাপ, কটূক্তি। টানা এমন মানসিক অত্যাচারেও মাথা নত করেনি মুর্শিদাবাদের (Murshidabad) সামশেরগঞ্জের বছর সতেরোর ছাত্রী। কিছুতেই বিয়েতে রাজি হয়নি সে। আর তারই মূল্য চোকাতে হল প্রাণ দিয়ে। শুধু তাই নয়। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে গণধর্ষণের (Gangrape) পর কীটনাশক খাইয়ে তাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ। ঘটনায় সরগরম সামশেরগঞ্জের মাঠপাড়া গ্রাম। এমন নৃশংস ঘটনা ঘটিয়ে চম্পট দিয়েছে অভিযুক্ত যুবক বাপি শেখ ও তার বন্ধু। তদন্তে নেমেছে সামশেরগঞ্জ থানার পুলিশ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মাঠপাড়া গ্রামের কিশোরীর বাড়িতে গিয়ে বিয়ের জন্য তাকে চাপ দিত পাশের হিজলতলার যুবক বাপি শেখ। বিয়ে না করলে নানা হুমকি, কটূক্তি করত বাপি, এমনই অভিযোগ। কিন্তু মেয়েটির পাশাপাশি তার পরিবারের সদস্যরাও এই বয়সে মেয়েকে বিয়ে দিতে চাননি। সে সামশেরগঞ্জের বাণীচাঁদ আগরওয়াল স্কুলের দশম শ্রেণির ছাত্রী। পড়াশোনা নিয়ে থাকতে চায়। আর তার এই অনমনীয় ভাব বাপির ক্রোধ বাড়িয়ে তুলছিল। মেয়েটির বাড়িতে গিয়ে সে সম্প্রতি অশ্রাব্য গালিগালাজও করে। প্রতিহিংসার সুযোগ খুঁজছিল বাপি।
[আরও পড়ুন: মন্দিরের পরিত্যক্ত ঘর থেকে উদ্ধার নিখোঁজ BJP নেতার ঝুলন্ত দেহ, তুঙ্গে শাসক-বিরোধী তরজা]
এরপর সোমবার দুপুরে পরীক্ষা সংক্রান্ত কাগজপত্র জমা দেওয়ার জন্য বাড়ি থেকে বেরয় মেয়েটি। বাড়ি থেকে দেড় কিলোমিটার দূরে স্কুল। অভিযোগ, সেখান থেকে ফেরার পথেই তার পথ আটকে দাঁড়ায় বাপি ও তার বন্ধু। রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ছাত্রীকে। অভিযোগ, তার গলা টিপে, কীটনাশক ( খাইয়ে রাত আটটা নাগাদ বাড়ির কাছের একটি রাস্তায় ফেলে দিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন। অবস্থার অবনতি ঘটায় প্রথম স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ছাত্রীকে। সেখান থেকে জঙ্গিপুর মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করার সময়ে রাস্তাতেই তার মৃত্যু (Death) হয় বলে জানান চিকিৎসকরা। এরপর তার শারীরিক পরীক্ষা করে জানা যায়, খুনের আগে গণধর্ষণ করা হয়েছিল ওই ছাত্রীকে। এদিকে, ঘটনার পর থেকে পলাতক অভিযুক্ত বাপি শেখ ও তার বন্ধু। মেয়েকে হারানোর শোকের মাঝেও অভিযুক্তদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সরব ছাত্রীর পরিবার।